বর্ধমান, 23 অক্টোবর : BDO পরিবারের পাশে না দাঁড়ালে বাঁচতে পারতেন না তাঁর মেয়ে, এমনটাই বলছেন অসহায় এক বৃদ্ধা ৷ মেয়ে চন্দনা নন্দী ৷ বয়স 42 ৷ ইতিহাসে রয়েছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও ৷ কিন্তু মেলেনি কোনও চাকরি ৷ ভরসা টিউশনি ৷ মা লক্ষ্মী নন্দী ৷ মাস ছয়েক আগে পড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি ৷ বর্ধমানের রানিগঞ্জ বাজার মোড়ে সাইকেল থেকে পড়ে পায়ের উপরের অংশ ভেঙে যায় । তারপর হয় অস্ত্রোপচারও ৷ কিন্তু চিকিৎসা তো চালাতেই হবে । হাঁটাচলাই যে বন্ধ ৷ পড়াতে যেতে পারছেন না চন্দনা ৷ নেই অর্থও ৷ ফলে জুটছে না দু মুঠো ভাতও ৷
বৃদ্ধা মা ৷ চন্দনাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ নেই । এমন সময় যেন ঈশ্বরের দূত হিসেবে হাজির হন BDO ৷ বর্ধমানের হাসপাতালে ভরতি থাকার সময় এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁদের । চন্দনার কথা রায়না 1 ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিককে জানান ওই ব্যক্তি । সেই খবর শুনে নিজে বর্ধমানের নীলপুরের মালির মাঠ সংলগ্ন বাড়িতে এসে নিজে কোলে করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান BDO। সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা করে দেন। চন্দনা যাতে বাড়িতে হাঁটাচলা করতে পারেন সেজন্য একটা ওয়াকার কিনে দেন সৌমেনবাবু ।
অসুস্থ চন্দনার চলাফেরা করার ক্ষমতা নেই । তাঁর বৃদ্ধা মা পানীয় জল আনতেও বহু দূরে যেতে বাধ্য হন । ঘরের আশপাশে পানীয় জলের কল নেই । প্রশাসনকে একাধিকবার জানালেও কেউ কোনও ব্যবস্থা করে দেয়নি । এদিকে বাড়িতে খাবারদাবার না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের । সরকারের কাছে আবেদন করেছেন পানীয় জলের একটি কলের । লক্ষ্মী দেবী বলেন, ''BDO মেয়েকে চিকিৎসা করতে নিয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর অবদান ভুলব না ৷''
BDO সৌমেন বণিক বলেন, ''খবর শুনে ওঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম । স্থানীয় ICDS সেন্টারকে বলা হয়েছে তাদের মিড ডে মিলের খাবার দেওয়ার জন্য । এছাড়া বর্ধমান পৌরসভা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন অংশে যোগাযোগ করা হচ্ছে ৷ সাহায্যের চেষ্টা করা হচ্ছে ৷''