বারাবনি , 14 এপ্রিল : লকডাউন ৷ প্রতিটি রাজ্যতেই তাই আটকে পড়েছে পর্যটক থেকে শ্রমিকরা ৷ এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ যাযাবর সাপুড়েরা ৷ বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে ঘুরে সাপের খেলা দেখিয়ে পেট চলে এদের ৷ পরিবার সমেতই ঘুরে বেড়াতে হয় বিভিন্ন জায়গায় ৷ বর্তমানে আসানসোলের বারাবনি ব্লকের দোমোহানি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চরণপুর গ্রামে আটকে পড়েছে যাযাবর সাপুড়েদের একটি পরিবার ৷ পরিবারটি ওড়িশা থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল সাপের খেলা দেখাতে ৷ লকডাউনের আগে আসানসোলে এলেও লকডাউন জারি হওয়ার পর আটকে পড়ে চরণপুরে ৷ এই অসহায় সময়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়াল চরণপুরের গ্রামবাসীরা ৷ রোজগারহীন এই 6 সদস্যের পরিবারটির দুবেলার খাবারের জোগান দেয় এলাকাবাসীরাই ৷ তবে , পরিবরাটি খাওয়ার পেলেও অনাহারে থাকতে হচ্ছে পরিবারের অবলা প্রাণীটিকে ৷ অর্থাৎ অজগর সাপটিকে ৷ এখন এই আশাতেই দিন গুনছে পরিবারটি কবে থেকে আবার শুরু করতে পারবে স্বাধীনভাবে রোজগার ৷
লকডাউনের আগে ওড়িশা থেকে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে সাপ খেলা দেখাতে এসেছিলেন বাকু প্রধান ও তার পরিবারের সদস্যরা । নারী, পুরুষ, বৃদ্ধা মিলে মোট 6জন এসেছিলেন । কিন্তু কোরোনা আতঙ্কে গোটা দেশজুড়ে লকডাউন হয়ে যাওয়ার কারণে আটকে পড়েন সাপুড়ে বাকু প্রধান ও তার পরিবারের লোকজন । রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া এই পরিবারটির দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ালও আসানসোলের বারাবনি ব্লকের দোমোহানি পঞ্চায়েতের চরণপুর গ্রামবাসীরা ৷ যাযাবর এই পরিবারটি অস্থায়ী ছাউনি পেল গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুলে । কিন্তু সাপ খেলা দেখা বন্ধ । প্রথমদিকে হাত জমানো টাকা দিয়ে শুরুর দিনগুলি কাটছিল ৷ পরে তাও শেষ হয়ে যায় ৷ অভুক্ত হয়ে সবে দিন কাটানো শুরু হচ্ছিল । ঠিক সেই সময়ই গ্রামবাসীরা পরিবারটির পাশে এয়ে দাঁড়ালও ।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামবাসীরা নিজেরাও দিনমজুর, দরিদ্র সম্প্রদায় ,তা হলে সাহায্য করতে তারা পিছপা হননি ৷ সাধ্যমত চাল ডাল আলু সহ অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য এখনও ওই পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে আসছেন । এই বিষয়ে বাকু প্রধান বলেন "ভাবতে পারিনি এরকম হবে । গ্রামবাসীদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের কি হত আমরা নিজেরাই বলতে পারবওনা ।" তবে এখানেই সমস্যার সমাধান হয়নি ৷ পরিবারের রোজগেরে অবলা প্রাণীটি না খেয়েই দিন কাটাচ্ছে ৷ জুটছেনা অজগর সাপের খাবার ৷ সাপুড়ে বাবু প্রধানের কাছে যদিও এটা অশনিসঙ্কেত ৷
লকডাউনের জেরে আপাতত এই অনিশ্চিত জীবনযাপনের মধ্যেই থাকতে হবে সাপুড়ে বাকু প্রধান ও তার পরিবারকে । এখন আশার আলো দিকেই তাকিয়ে বসে আছে পরিবারটি ৷