কুলটি, 9 সেপ্টেম্বর : নিয়মের তোয়াক্কা না করেই আসানসোল পৌরনিগমের রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটের ফর্ম বিকোচ্ছে খোলা বাজারে ৷ জেরক্সের দোকানে গিয়ে দু’টাকা খরচ করলেই মিলছে আবেদনপত্র ৷ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার বিজেপি নেতারা ৷ আমল দিতে নারাজ পৌরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ৷ তাঁর মতে, দু’টাকা খরচ করতে হচ্ছে তো কী হয়েছে ? এক টাকা-দু’টাকা কোনও ব্যাপার নয় ! বিজেপির কুলটির নেতাদের অভিযোগ, নিয়ামতপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের পাশেই রয়েছে সেই জেরক্সের দোকান ৷ গোটা ঘটনায় দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : Corruption Allegation : 100 দিনের কাজে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, তুঙ্গে কাজিয়া
আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের অন্যতম সদস্য মীর হাসিম ৷ পৌরনিগমের আট নম্বর বরোর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি ৷ কুলটির বিভিন্ন এলাকা এই বরোর আওতাভুক্ত ৷ কুলটির নিয়ামতপুরেই মীর হাসিমের নিজস্ব কার্যালয় রয়েছে ৷ সেটিকে দলীয় কার্যালয় হিসাবেই ব্যবহার করেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা ৷ আবার মীর হাসিম সেখানে বসেই পৌরনিগমের বিভিন্ন শংসাপত্র বিতরণের কাজ করেন ৷
রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং প্রায়শই মানুষের সেটি কাজে লাগে ৷ নিয়মমাফিক আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে মীর হাসিমের নিজস্ব লেটার হেডে নির্দিষ্ট ফরম্যাট মেনে আবেদনকারীদের রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা ৷ কিন্তু, বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না ৷ মীর হাসিমের কাছে কেউ রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট চাইতে গেলেই তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন পাশের দোকান থেকে ফর্ম কিনে আনতে হবে আবেদনকারীকে ৷ এরপর দু’টাকার বিনিময়ে সেই ফর্ম কিনতে হচ্ছে আমজনতাকে ৷ সেই ফর্ম মীর হাসিমের কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁর স্বাক্ষর করালে তবেই মিলছে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট ৷
আরও পড়ুন : Ration Smuggling : কাকদ্বীপে রেশন সামগ্রী পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার 3
কুলটির বিজেপি নেতা টিংকু ভার্মার দাবি, ‘‘প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ এই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট নেন ৷ দু’টাকা সামান্য মনে হলেও শুধুমাত্র এই ফর্ম বিক্রি করেই প্রচুর টাকা উঠছে ৷ তার কাটমানি ঢুকছে শাসকদলের নেতাদের পকেটে ৷ এছাড়া আরও অনেক দুর্নীতি হতে পারে ৷’’ টিংকু ভার্মার প্রশ্ন, পৌরনিগমের নথিপত্র সাধারণ জেরক্সের দোকানেই বা বিক্রি হবে কেন ?
তবে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ মীর হাসিম নিজে ৷ তাঁর দাবি, ‘‘মানুষের কাছে একটাকা, দু’টাকা এমন কোনও ব্যাপার নয় ৷ আমাকে পৌরনিগম থেকে যে পরিমাণ ফর্ম দেওয়া হয়েছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ পরবর্তীকালে আমি নিজেও আরও দু’হাজার ফর্ম ছাপিয়েছি ৷ সেটাও শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ তাই এখন ফর্ম জেরক্স করে কাজ চালাতে হচ্ছে ৷’’