আসানসোল, 26 সেপ্টেম্বর: অবসরের পরেও ভালোবাসার টানে স্কুলকে ছাড়তে পারেনি আসানসোল কন্যাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের (Asansol Kanyapur School) শিক্ষক বীর বব্রুবাহন ধল ৷ তাই স্কুলের অন্ধকার শ্রেণিকক্ষের জন্য কখনও পেনশনের টাকা থেকে এলইডি লাইট লাগিয়ে দেওয়া, তো কখনও স্কুলের লাইব্রেরির জন্য বই কিনে দেওয়া ৷ নানান কাজ করে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক ৷ এবার বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে নিজের প্রাক্তন স্কুলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি স্থাপন করলেন ওই শিক্ষক বীর বব্রুবাহন ধল (Former Teacher Makes Vidyasagar Statue in School) ৷
আসানসোলের বিশিষ্ট ভাস্কর গৌতম দত্ত ফাইবার গ্লাস দিয়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি বানিয়েছেন ৷ সোমবার কন্যাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মূর্তিটির উদ্বোধন করলেন আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী গঙ্গানন্দজী মহারাজ ৷ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর বব্রুবাহন ধল বলেন, ‘‘যেদিন আমি অবসর নিয়েছিলাম, সেই দিন আমাকে এখানে সম্মানিত করেছিলেন অন্যান্য শিক্ষকরা ৷ সেদিনই আমি তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি চেয়ে নিয়েছিলাম যে, আমাদের স্কুলের জন্য একটি বিদ্যাসাগরের মূর্তি স্থাপন করব ৷ তাঁরা অনুমতি দিয়েছিলেন ৷ আসলে আমি বিদ্যাসাগরের দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত ৷ তাঁর যে আধুনিক ভাবনা, কুসংস্কার মুক্ত চিন্তা, নারী শিক্ষায় তাঁর বিশেষ উদ্যোগ, এই ভাবনাগুলি যাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেটাই আমি চেয়েছিলাম ৷’’
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর বব্রুবাহন ধল স্কুলের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে এলইডি লাইট লাগিয়েছেন পেনশনের টাকা দিয়ে ৷ সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘পড়াতে গিয়ে অনুভব করেছি, অন্ধকার শ্রেণিকক্ষে ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হত ৷ তাই পেনশনের টাকা দিয়ে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে এলইডি লাইট লাগিয়েছি ৷ স্কুলের গ্রন্থাগারের জন্য কিছু বই দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে ৷ আমি অবসর নিলেও স্কুলের সঙ্গে আছি ৷’’
আরও পড়ুন: ভরা বাজারে ছাত্রের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি ! শিলিগুড়িতে গ্রেফতার স্কুল শিক্ষক
কন্যাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ওনার কাছে শিখলাম ৷ উনি এই স্কুল ছেড়ে আরও অনেক উঁচু জায়গায় যেতে পারতেন ৷ কিন্তু স্কুলকে ভালোবেসে তিনি সেটা করেননি ৷ এই স্কুলেই থেকে গিয়েছেন এবং অবসরের পরেও তিনি এই স্কুলের সঙ্গেই আছেন ৷ আমরা লকডাউনের পর চেষ্টা করছি সমস্ত দিক দিয়ে স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ৷ বীর দাও আমাদের সঙ্গে আছেন ৷’’ এ দিন বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে একটি দেওয়াল পত্রিকাও প্রকাশ করে স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের ছাত্রীরা ৷