আসানসোল, 29 এপ্রিল : কোনও ডায়গনোস্টিক সেন্টার চাইছে 1200 টাকা ৷ কোনও সেন্টার চাইছে 1500 টাকা ৷ আবার কেউ নিচ্ছে 2000 টাকা ৷ করোনা নির্ণয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমজনতার ৷ উঠছে কালোবাজারির অভিযোগ ৷ বৃহস্পতিবার আসনসোল শহর ঘুরে যে তথ্য সামনে এল, তা এক কথায় অত্যন্ত চিন্তার ৷ শহরের প্রায় সর্বত্রই রয়েছে আরটি-পিসিআর কিটের আকাল ৷ ফলে চাহিদা ও জোগানে ফারাক দিন দিন বাড়ছে ৷ আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই ইচ্ছামতো টাকা আদায় করছে বেসরকারি ডায়গনোস্টিক সেন্টারগুলি ৷ যার জেরে ভুগতে হচ্ছে সেই আমআমদিকেই ৷ যদিও পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশ্বিনী মাজি জানিয়েছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে কেউই কোভিড পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত টাকা নিতে পারেন না ৷ এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন সিএমওএইচ ৷
দেশজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ ৷ এই অবস্থায় অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক, সমাজসেবী সংগঠনের সদস্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন ৷ পাশাপাশি, চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য বিভিন্ন ডায়গনোস্টিক সেন্টার এবং এজেন্টদের নাম ও মোবাইল নম্বরও দেদার শেয়ার করা হচ্ছে ৷ আর তাতেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন মানুষ ৷
সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট দেখে এক ল্যাব এজেন্টকে ফোন করে মহিশীলার এক বাসিন্দা জানতে পারেন, কোভিড পরীক্ষার জন্য 2000 টাকা লাগছে ! এরপর একাধিক এজেন্টকে ফোন করে এক-একরকম তথ্য জানতে পারেন ওই ব্যক্তি ৷ করোনা পরীক্ষার জন্য কেউ 1200 টাকা, কেউ 1500 টাকা দাবি করেন তাঁর কাছে ৷
আরও পড়ুন : ভোটের কাজে করোনা সংক্রমিত আশাকর্মী, অভিযোগ বিডিও ও বিএমওএইচের বিরুদ্ধে
আসানসোলের একটি বেসরকারি ল্যাবের কর্মী রাজু ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের ল্যাবে কোভিড পরীক্ষার খরচ 2000 টাকা ৷ আমাদের সংস্থা আদতে মুম্বইয়ের ৷ সেই সংস্থার ফ্র্য়ানচাইজ়ি নিয়েছি আমরা ৷ তাই খরচ বেশি। বর্তমানে আমাদের কাছে করোনা পরীক্ষার কিট নেই ৷ নতুন কিট এলে আরও দাম বাড়তে পারে ৷’’
ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির মুখে এই তথ্য শুনেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সিএমওএইচ ৷ তিনি ফোনে আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, ‘‘এভাবে ইচ্ছামতো টাকা নিতে পারে না কোনও বেসরকারি ল্যাব ৷’’
এই প্রসঙ্গে অশ্বিনী মাজি স্পষ্ট বলেন, ‘‘পরীক্ষায় আরটি-পিসিআর ট্রুনাট কিট ব্য়বহার করা হলে তার দাম 1200 টাকা ৷ আর যদি ট্রুনাট না হয় তাহলে দাম পড়বে 950 টাকা ৷ এটাই লেটেস্ট ৷’’
প্রশাসন যাই বলুক, বাস্তব চিত্রটা কিন্তু একেবারে আলাদা ৷ সূত্রের খবর, আসানসোলের বড় ডায়গনোস্টিক সেন্টারগুলি করোনা পরীক্ষার জন্য অনেক বেশি টাকা নিচ্ছে ৷ জেলা প্রশাসন নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অভিযোগ জানানোর মতো সময়টুকুও পাচ্ছেন না রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা ৷ করোনার দাপট সামলাতে গিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের ৷ সেই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে ডায়গনোস্টিক সেন্টারগুলির এই স্বেচ্ছাচারিতা ৷