আসানসোল, 10 সেপ্টেম্বর: ন্যাশনাল রিসার্চ রিপোর্ট ব্যুরো সম্প্রতি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে যে ভারতবর্ষে আত্মহত্যা নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ৷ শহর হিসেবে উঠে এসেছে আসানসোলের নাম । আত্মহত্যা নিরিখে আসানসোল দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে । কিন্তু, কেন এত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে? আর এই পরিস্থিত থেকে উদ্ধারের রাস্তাই বা কী? এই বিষয়ে নিজেদের মতামত জানালেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ও লেখক অরুণাভ সেনগুপ্ত৷
চিকিৎসকরা বললেন, নিজের অসহায়তা বা অবসাদের কথা জানাতে হবে কাছের জনকে । বন্ধু, আত্মীয় বা অন্য কেউ, মনের কাছের কেউ প্রত্যেকের থাকা উচিত । যার কাছে সব কথা সহজে অকপটে বলা যায় । তাহলেই আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে ৷
চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, "আত্মহত্যা অনেকাংশে বংশগত । পৃথিবীতে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, যাঁরা মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়েও আত্মহত্যা করেছেন ৷ এরা জিনগত "রোগে"র স্বীকার বলছেন বিজ্ঞানীরা ৷ তবে মানসিক অবসাদ অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া খুব প্রয়োজন । সে ক্ষেত্রে বন্ধু, সামাজিকতা, এগুলি আত্মহত্যাকে দূরে রাখতে সক্ষম ।"
চিকিৎসক দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরির মতে, "এই শিল্পাঞ্চলে বহু কলকারখানা বন্ধ হয়েছে । ফলে বেকারত্ব বেড়েছে । মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ধাক্কা খাওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে । আরও বহু কারণ রয়েছে আত্মহত্যার । অনেক মানুষ একা হয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ বয়সে । সেই অবসাদ থেকেও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে । প্রয়োজন সদর্থক ভাবনা । গান-বাজনার চর্চা করা, ধর্মীয় পথে থাকা, মনীষী মহাপুরুষদের জীবন সম্পর্কে অবগত হওয়া, বই পড়া এবং মনের কথা খুলে বলা ।"
আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী সৃজা ব্যানার্জির কথায়, "ছাত্রছাত্রীরা আজকাল প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে । কিন্তু নেভার গিভ আপ বলে একটি কথা আছে । হেরে যাওয়া থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। বন্ধুর সঙ্গে বিষয়টি ভাগ করে নেওয়া উচিত ৷"
প্রত্যেকের মত, এই বিষয়ে অন্ততপক্ষে একটি হেল্পলাইন নম্বর থাকা উচিত । যেখানে কাউন্সেলিং করা যাবে । যদি কেউ আত্মহত্যা করবেন ভাবেন তাঁর আগে যদি তিনি সেই নম্বরে ফোন করেন তাহলে সেখানকার কাউন্সিলিং হয়তো তাঁর জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে !