ব্যারাকপুর, 23 জুন : মাসখানেক আগেও ভিড় লেগেই থাকত । নদিয়া, বারাসত বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতেন পাইকারি ক্রেতারা । কিন্তু, লোকসভা ভোটের পর থেকেই বদলাতে থাকে চিত্রটা । বাড়তে থাকে হিংসাত্মক ঘটনা । ভয়ে ত্রস্ত হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দোকানদার, ক্রেতারা । পুলিশি নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে বৃহস্পতিবার কয়েকটি দোকান খোলে । কিন্তু, দুপুরেই ফের হিংসা ছড়ায় । সামান্য আশার আলো দেখা ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়ে । পাইকারি ক্রেতাদের দরদামে সবসময়ে গমগম করা কাঁকিনাড়া বাজারেই শোনা যাচ্ছে শুধুমাত্র পুলিশ, RAF-এর ভারী বুটের আওয়াজ । লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের । শেষপর্যন্ত স্থানীয় সাংসদ অর্জুন সিং ও প্রশাসনের আশ্বাসের পর আজ কিছু দোকান খুলেছে । জিনিস কেনাবেচাও শুরু হয়েছে । তবে এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া । চলছে পুলিশের টহল ।
বৃহস্পতিবার ফাঁড়িকে থানায় হিসেবে উদ্বোধন করার সময় শুরু হয়েছিল অশান্তি । গুলিবৃষ্টি-বোমাবাজির জেরে প্রাণ হারান দু'জন । জখম হন বেশ কয়েকজন । ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নবান্ন । তড়িঘড়ি এলাকায় জারি করা হয় 144 ধারা । নামানো হয় RAF, বিশাল পুলিশবাহিনী । দ্রুততার সঙ্গে বদলি করা হয় ব্যারাকপুরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরিকে । নতুন পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয় মনোজ বর্মাকে ।
গতকাল সকালে সাময়িকভাবে কিছু দোকানপাট খুলতে দেখা গেছিল । স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছিল ভাটপাড়া । টুকটাক কেনাকাটিও শুরু হচ্ছিল । পরে পুলিশ-জনতার মধ্যে বচসা হলেও বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি । ইতিমধ্যে গতকাল অর্জুন সিং, স্থানীয় কাউন্সিলর, ব্যবসায়ী সমিতি ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ব্যবসায়ীরা । ঠিক হয়, অনেক হয়েছে । এবার জনজীবন স্বাভাবিক করতে নিজেদের কাঁধে দায়িত্ব নেন ব্যবসায়ীরা ।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী অরুণ সাউ বলেন, "অনেকেই তো জনজীবন অশান্ত ব্যবস্থা করেছেন, আমরা শান্ত করার চেষ্টা করছি । আমরা ব্যবসায়ীদের সাহস জোগাচ্ছি । শান্তি আসতে আসতে ফিরে আসছে । " অপর এক ব্যবসায়ী মনোতোষ মজুমদার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন । এর আগে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এক লহমায় পুলিশের অতি-সক্রিয়তায় বদলে গেছে । তাঁর বক্তব্য, "পুলিশ-প্রশাসন সাহায্য করবে বলেও করেনি । ক্ষতি হয়েছে । আর প্রশাসন যদি চায় তো এখানে ক্ষতি করব । " অপর এক ব্যবসায়ীর বক্তব্য, "ভয়ের চোটে বাইরে থেকে লোক আসছে না । দেখছেনই তো । ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ । এই কয়েকদিন দোকান বন্ধ ছিল । ভয় পেলে তো রোজ দিন মরতে হবে । "