কলকাতা, ২২ জুন: কৃত্তিকার মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে পুলিশ । চলছে তদন্ত । এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে সে আত্মহত্যাই করেছে । উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে হাতের লেখা কৃত্তিকারই বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে তার সহপাঠী এবং শিক্ষকরা । যোধপুর পার্কের বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন কৃত্তিকা নিজেই নিজের হাতে আঘাত করেছে । অন্য কেউ যদি হাতের শিরা কেটে দিত, তবে যে ধরনের চিহ্ন থাকে তা এক্ষেত্রে ছিল না। পাশাপাশি, পুলিশ সূত্রে খবর, বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল ।
কৃত্তিকার সহপাঠী এবং স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকার বয়ান অনুসারে, গতকাল সকাল থেকে প্রথম পাঁচটি ক্লাস স্বাভাবিকভাবেই করেছে কৃত্তিকা । সেই সময় তাকে হাসিখুশি দেখাচ্ছিল। ছ'নম্বর পিরিয়েডে মাথাব্যথা করছে বলে সে ক্লাস থেকে সিকরুমের দিকে যায় । পুলিশ সূত্রে খবর, বাথরুমে যাওয়ার সময় সে কিছু একটা লুকোনোর চেষ্টা করছিল। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, ব্লেড এবং প্লাস্টিকের প্যাকেট লুকোনোর চেষ্টা করছিল সে। সুইসাইড নোটটিও সে বাথরুমে বসেই লিখেছে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের । বাথরুমে উদ্ধার হয়েছে পেনও । সমস্ত পারিপার্শ্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে তদন্তকারীদের প্রাথমিকভাবে ধারণা, প্রথমে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে সুইসাইড নোট লেখে কৃত্তিকা । এরপর পেন্সিল কাটার ব্লেড দিয়ে প্রথমে হাতের শিরা কাটে । এরপরেই হয়ত নিজের মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে প্লাস্টিক পেঁচিয়ে নিয়েছিল ।
কৃত্তিকার বাবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি কর্মসূত্রে হায়দারাবাদে থাকতেন। মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কলকাতায় ফিরতে তাঁর বেশ রাত হয়ে যায় । স্বাভাবিকভাবেই তখন পুলিশ তাঁর সঙ্গে খুব একটা কথা বলার সুযোগ পায়নি। অন্যদিকে, কৃত্তিকার মা মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন । কলকাতা পুলিশের এক সিনিয়র কর্তা এই প্রসঙ্গে বলেন, "ওর মা অনেকটাই ট্রমাটাইজড ছিল। তাই সেভাবে কথা বলা যায়নি । উনি শুধুমাত্র বলেছেন, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউটে ভরতির বিষয়টি নিয়ে মানসিক চাপে থাকত কৃত্তিকা । মাঝেমধ্যেই সে বলত, আদৌ সুযোগ পাবে কি না । তদন্তকারীরা বলছে, "কৃত্তিকার মাকে সুইসাইড নোট দেখিয়ে এখনই জিজ্ঞাসা করা সম্ভব নয় যে সেটা মেয়ের হাতের লেখা কি না । নোটটি হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্টের কাছে পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হবে। যদিও কৃত্তিকার শিক্ষক এবং সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সুইসাইড নোটে যে হাতের লেখা রয়েছে তা কৃত্তিকার ।"