দেগঙ্গা, 2 অক্টোবর : দেগঙ্গায় ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আরিফ আলি মোল্লাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ । ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল সে । এরপর থেকেই তার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের উপর নজর রাখতে শুরু করে পুলিশের তদন্তকারী দল । আর তাতেই মেলে সাফল্য ।
মোবাইলের টাওয়ারের লোকেশন দেখে বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমানের কেতুগ্রামের সুলতানপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত আরিফকে ।শুক্রবার ধৃতকে বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে 5 দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, 2 সেপ্টেম্বর দেগঙ্গার নন্দীপাড়া গ্রামের মল্লিকপাড়ায় দুষ্কৃতী হামলায় গুরুতর জখম হন ব্যবসায়ী সাইফুল মল্লিক । বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি । দেহের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে গলায়, বুকে ও পেটে গভীর ক্ষতের চিহ্ন ছিল । । এরপর ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভরতি করে পরিবারের লোকজন । প্রায় এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর শেষে ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর । ঘটনার পরই মৃতের পরিবারের তরফে দেগঙ্গা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় । অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ।
তদন্তে নেমে দেগঙ্গা থানার পুলিশ প্রথমেই মৃতের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখতে শুরু করে ।সেখানেই লক্ষ্য করা যায় আরিফ নামে এক যুবকের সঙ্গে সবথেকে বেশি কথা হয়েছে সাইফুলের ।আরিফের বাড়িও নন্দীপাড়া গ্রামের মল্লিক পাড়ায় ।এরপর আরিফের খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে সে বাড়ি থেকে উধাও । আরও জানা যায় ওই গ্রাম থেকেই রহস্যজনকভাবে উধাও এক যুবতিও ।তবে সে কারোর সঙ্গে চলে গিয়েছিল কি না তখনও জানা ছিল না পরিবারের লোকেদের । তবে আরিফের উপর সন্দেহ বাড়ে পুলিশের তদন্তকারী দলের । দেরি না করে তার মোবাইলের টাওয়ারের লোকেশনের উপর নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ । শেষ টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে । এরপরই সেখানে হানা দেয় দেগঙ্গা থানার পুলিশ । বৃহস্পতিবার রাতে কেতুগ্রামের সুলতানপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ব্যবসায়ী খুনে মূল অভিযুক্ত আরিফকে । সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ওই যুবতিকেও ।
এ বিষয়ে দেগঙ্গা থানার পুলিশ জানিয়েছে, সুলতানপুরে ভাড়াবাড়িতে ওই যুবতিকে নিয়ে লুকিয়ে ছিল আরিফ । তাঁদের সেখান থেকে আটক করে দফায় দফায় জেরা করে পুলিশের তদন্তকারী দল । জেরায় খুনের কথা কবুল করে আরিফ । তারপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় । তবে খুনের সঙ্গে যুবতির কোনও যোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় । তবে ওই যুবতিকে অপহরণ করা হয়েছিল, নাকি সে স্বেচ্ছায় আরিফের সঙ্গে পালিয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।