বেঙ্গালুরু, 23 অক্টোবর: কংগ্রেস সভাপতি পদে মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge) নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর নিজের রাজ্য কর্নাটকের আসন্ন নির্বাচনকে পাখির চোখ করতে চাইছে কংগ্রেস (Congress President)৷ কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন (Karnataka Assembly Election) আর মাত্র 6 মাসের মধ্যেই ৷ তাই সদ্য সভাপতি হওয়া খাড়গে শুধু দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া নেতাদের জোটবদ্ধ করবেন তাই নয়, দলিত ভোটব্যাংককে আরও শক্তিশালী করতেও তিনি উদ্যোগী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে । কর্নাটকের জনসংখ্যার প্রায় 24 শতাংশ মানুষ দলিত সম্প্রদায়ের ৷ আর খাড়গে হলেন দলিত সম্প্রদায় থেকে কংগ্রেস সভাপতি হওয়া দ্বিতীয় নেতা ।
কংগ্রেসের কয়েকজন প্রবীণ নেতা মনে করেন যে, দলিতদের মধ্যে দলের শক্তিশালী সমর্থনের ভিত্তি কয়েক বছর ধরে সংকুচিত হয়েছে । গত কয়েক বছরে বিজেপির সঙ্গে কয়েকজন নেতার হাত মেলানো ও অন্যান্য একাধিক কারণে এই ঘটনা ঘটেছে । দলিতদের মধ্যে বাম ও ডানপন্থীদের মতবিরোধ নিরসনে কংগ্রেসের অক্ষমতার কারণে কর্নাটকে যথেষ্ট পরিমাণে উপস্থিত থাকা বামপন্থীদের সমর্থনও হারাতে হয়েছে দলকে । খাড়গে দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত, এবং দলিতদের মধ্যে বামপন্থী যে নেতারা বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে তাঁদের ফেরানোই নয়া কংগ্রেস সভাপতির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ৷
দীর্ঘ সময় ধরে দলিতদের সমর্থন মেলা সত্ত্বেও কংগ্রেস কখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দলিত মুখ না আনায় দলের দলিত নেতাদের একটি বড় অংশের ক্ষোভ বেড়েছে ৷ দু বার মুখ্যমন্ত্রী পদের খুব কাছাকাছি এসেও স্বয়ং খাড়গেই সেই চেয়ারে বসতে পারেননি ৷
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের হাত ধরেই শক্তিশালী হয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র, সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বললেন খাড়গে
আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এ নারায়ণ বলেছেন, "সামগ্রিকভাবে, এটা (খাড়গেকে নির্বাচন) কংগ্রেসের (কর্নাটকে) একটি সুবিধা, তবে এর প্রভাব কতটা নির্বাচনী ক্ষেত্রে পড়বে, তা আমরা জানি না ৷ সেটা দেখতে হবে ।" তিনি আরও বলেন, "অবশেষে, সেই অসন্তোষ তখনই মোকাবেলা করা যাবে যখন একজন দলিত মুখ্যমন্ত্রী হবেন, কিন্তু আজকের রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এটি একটি দূরবর্তী সম্ভাবনা ৷ তবে খাড়গেকে সভাপতি করে ইতিমধ্যে এই অসন্তোষকে কংগ্রেস কিছুটা হলেও মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে বলে মনে হচ্ছে । কংগ্রেসের পক্ষে এটি একটি ভালো যুক্তি যে, দলের শীর্ষ পদটি একজন দলিতকে দেওয়া হয়েছে, এবং আমরা দলিত অনুভূতিকে সম্মান করি ৷"
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা বিধান পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভি আর সুদর্শন বলেছেন, খাড়গের কংগ্রেস সভাপতি হওয়া কর্নাটকের জন্য গর্বের বিষয় এবং রাজ্যে দলের মসৃণ কার্যকারিতাকেও সাহায্য করবে ।" তিনি আরও বলেন, "এটি দলের পক্ষে (দলিতদের) একত্রিত করার একটি সুযোগ ৷ তবে, খাড়গে ব্যক্তিগতভাবে কখনও তাঁর দলিত তাস খেলেননি ৷ এমনকী যখন তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরিস্থিতি ছিল তখনও ৷ তিনি সবসময় একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কংগ্রেসম্যান এবং যিনি কর্মক্ষমতা ও আনুগত্যে বিশ্বাসী ৷"