নয়াদিল্লি, 11 ডিসেম্বর: বিভিন্ন দেশ ও মহাদেশের মধ্যে যে রুটে মানুষ, অস্ত্র ও মাদক পাচার করা হয়, সেই একই রুট ব্যবহার করা হয় বন্যপ্রাণ পাচারের (Wildlife Smuggling) জন্যও ৷ তাদের প্রকাশ করা বার্ষিক রিপোর্টে (Annual Report) এমনটাই দাবি করেছে 'ডিরেক্টোরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স' (Directorate of Revenue Intelligence) বা ডিআরআই (DRI) ৷
সূত্রের দাবি, যত দিন যাচ্ছে, বন্যপ্রাণের বেআইনি কারবারিদের সঙ্গে মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ছে ৷ এর কারণ মূলত দু'টি ৷ প্রথমত, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, চিন সীমান্তগুলিতে নজরদারিতে ফাঁক থেকে যাচ্ছে ৷ দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক বাজারে বন্যপ্রাণের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে ৷ উল্লেখ্য, গত সোমবারই ডিআরআইয়ের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে সোনাপাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ৷
আরও পড়ুন: এক বছরে পাচার অন্তত 833 কেজি সোনা ! রিপোর্ট দেখে উদ্বিগ্ন অর্থমন্ত্রী
বন্যপ্রাণের বেআইনি কারবার ফুলেফেঁপে ওঠার আরও একটি বড় কারণ হল, ডার্ক ওয়েব ও ক্রিপ্টোকারেন্সির বাড়বাড়ন্ত ৷ এর জাল অত্যন্ত গভীর এবং জটিল ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোথা থেকে অপরাধ পরিচালনা করা হচ্ছে, তার শিকড় খুঁজতেই কালঘাম ছুটে যায় গোয়েন্দাদের ৷ তথ্য বলছে, যেকোনও ধরনের প্রাণী বা প্রাণীজ সামগ্রী পাচার করার জন্য পাচারকারীদের প্রথম পছন্দ হল বিমানপথ ৷ অন্যদিকে, উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত বেআইনি সামগ্রী পাচার করা হয় জল ও সড়কপথে ৷ আর এই কারবার পরিচালনা করা হয় ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে ৷ সমস্যা হল, নির্দিষ্ট সফ্টওয়্য়ার, কনফিগারেশন অথবা অনুমোদন না-থাকলে এই ডার্ক ওয়েবের জগতে ঢোকাই যায় না ৷ ফলে অপরাধীরা অধরাই থেকে যায় ৷
ডিআরআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ইদানীংকালে ভারতের শুল্ক বিভাগ পাচার হওয়ার আগেই বেশ কিছু এমন সামগ্রী উদ্ধার করেছে, যার সঙ্গে বন্যপ্রাণের সম্পর্ক রয়েছে ৷ এমন ঘটনা বারবার ঘটায় উদ্বেগ বাড়ছে ৷ 2021-22 অর্থবর্ষে এভাবেই 4 হাজার 762টি ভারতীয় তারকা কচ্ছপ এবং 145 মেট্রিক টন লাল চন্দন উদ্ধার করা হয় ৷ এছাড়াও ভারতে ঢোকার মুখে উদ্ধার হয় 77টি পাখি ৷ ভারতে পাখি, কচ্ছপ, চন্দন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সরীসৃপ, হাতির দাঁত প্রভৃতির চোরাচালান চলে ৷