নয়াদিল্লি, 24 ডিসেম্বর: স্বামীর জন্য করওয়া চৌথ পালন না করাটা নিষ্ঠুর আচরণ নয় ৷ একটি বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলার শুনানিতে এমনই জানালেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত ৷ তবে পাশাপাশি আদালত জানায়, স্বামী জীবিত থাকাকালীন তাঁর স্ত্রী যদি বিধবার মতো আচরণ করে, সেটা স্বামীর জন্য বেদনাদায়ক ৷ সেই বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না ৷ বিচ্ছেদ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন স্ত্রী ৷ দিল্লি হাইকোর্ট অবশ্য সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ তার মানে বিচ্ছেদ সংক্রান্ত রায় বহাল রইল।
এই দম্পতির বিয়ে হয় 2009 সালের 15 এপ্রিল ৷ 2011 সালের 27 অক্টোবর তাঁদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় ৷ অভিযোগ, সন্তানের জন্ম দেওয়ার কিছুদিন আগে স্ত্রী তাঁর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান ৷ এরপর 2018 সালের 11 সেপ্টেম্বর স্বামী নিম্ন আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন ৷ স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন স্বামী ৷ নিম্ন আদালতে তা গৃহীত হয় ৷ বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয় আদালত। পাশাপাশি বিচারক জানান, স্ত্রী যদি করওয়া চৌথ পালন না করেন সেটা নিষ্ঠুর কাজ বলে মনে করা যায় না ৷ এই রায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। তবে সেখানেও তাঁকে ধাক্কাই খেতে হল শেষমেশ।
শুনানির সময় স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামী অভিযোগ করেন, বিয়ের পর 2009 সালের জুন মাসে দম্পতি হরিদ্বারে বেড়াতে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে গিয়ে স্বামীর ভাই, বোন এবং বাবার সঙ্গে স্ত্রীর ঝামেলা বাধে ৷ মোবাইলে রিচার্জ না থাকায় স্ত্রী করওয়া চৌথের উপোস করতে রাজি হননি ৷ আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়, বৈবাহিক সম্পর্কের এতটাই অবনতি হয়েছে যে স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা কিছুই অবশিষ্ট নেই ৷
স্বামীর আরও অভিযোগ , 2010 সালের জানুয়ারি মাসে স্ত্রী রেগে গিয়ে খাওয়া-দাওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন ৷ এই অবস্থায় স্বামী তাঁর স্ত্রীর বাবা-মাকে ডেকে পাঠান এবং সমাধান করার অনুরোধ জানান ৷ এই ঘটনাতে তাঁর স্ত্রী আরও ক্ষুব্ধ হন এবং বাড়ির টিভি ভেঙে ফেলেন ৷ এদিকে স্ত্রী স্বামীর আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তিনি 147 দিন বাবা-মায়ের কাছে ছিলেন ৷ এই তথ্যও মানতে রাজি হননি ৷ তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীই তাঁকে বাবা-মায়ের কাছে যেতে জোর করেছিলেন ৷ স্ত্রী দু'দিন পরেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন ৷
স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় স্ত্রী বিধবার মতো থাকছিলেন বলে দাবি উঠেছে ৷ এই প্রসঙ্গে স্বামী জানান, 2011 সালের এপ্রিলে তাঁর স্লিপ ডিস্কের সমস্যা দেখা দেয় ৷ সেই সময় তাঁর খেয়াল রাখেননি স্ত্রী ৷ উলটে সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেলেন এবং হাতের চুরিগুলিও ভেঙে দেন ৷ শুধু তাই নয়, সাদা রঙের জামাকাপড় পরে নিজেকে বিধবা বলে পরিচয় দিতে থাকেন ৷ স্ত্রী ছোটখাটো বিষয়ে রেগে যেতেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন স্বামী ৷
আরও পড়ুন: