গুয়াহাটি, 11 জুলাই: পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে চরম হিংসার জেরে অসমের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন 133 জন ৷ মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ৷ তিনি জানান, সোমবার প্রাণের ভয়ে মানুষগুলো ধুবড়িতে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, "আমরা তাঁদের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দিয়েছি ৷ সেই সঙ্গে তাঁদের খাবার এবং চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে ৷" অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে ক্রমবর্ধমান অশান্তি, হিংসা, হানাহানির জেরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয় ৷ দেদার চলেছে বোমা, গুলি ৷ ভোটের দিনই হিংসার বলি হয়েছেন 18 জন ৷ পরে আরও কয়েকজনের প্রাণ গিয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ ৷ হিংসার রেশ এখনও চলছে। এরপরই 133 জন মানুষ অসমের ধুবরি জেলায় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার শরণার্থীদের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর টুইট , "সোমবার পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রবল হিংসার কারণে প্রণের ভয়ে 133 জন অসমের ধুবরি জেলায় আশ্রয় চেয়েছিলেন। আমরা তাঁদের একটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দিয়েছি, পাশাপাশি খাদ্য ও চিকিৎসা পরিষেবা সহায়তাও প্রদান করা হয়েছে।" উল্লেখ্য, মনোনয়ন পর্ব থেকে ভোটের পরও রাজ্য জুড়ে এখনও পর্যন্ত হিংসার বলি মোট 42 জন ৷ আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
অন্যদিকে, এদিন অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি লিখেছেন, "বাংলায় অত্যাচারিত বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ৷" একই সঙ্গে, শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, বিশেষ করে যারা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তারাই বার বার ভোট সংক্রান্ত হিংসার শিকার হচ্ছেন ৷ একই সঙ্গে, তাঁর দাবি, অসম রাজ্যের কাছাকাছি থাকার কারণেই তারা সেখানে যাওয়া নিরাপদ বলে মনে করেছেন। অত্য়াচার এবং হিংসার ভয়ে যারা বাংলা থেকে অসমে গিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অসম সরকারের প্রতি এদিন কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু ৷
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বুথে জয়ী বিজেপি
বাংলায় ত্রিস্তরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক হিংসা, ব্যালট পেপার লুটপাট এবং ভোটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে আখছাড় ৷ মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, মালদা, দক্ষিণ 24 পরগনা, উত্তর দিনাজপুর এবং নদীয়ার মতো একাধিক জেলা থেকে বুথ দখল, ব্যালট বাক্স ভাঙচুর, প্রিসাইডিং অফিসার এমনকী ভোটের দিন বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের উপরও আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে ৷ ব্যাপক অশান্তির পর 8 জুলাইয়ের পর ফের 10 জুলাই রাজ্যজুড়ে 696টি বুথে পুনর্নির্বাচন করে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷