লখনউ, 16 জানুয়ারি: দুর্ঘটনার সময় ফেসবুক লাইভ করছিলেন উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের চার যুবক (Nepal plane Crash Facebook Live)৷ 1.3 মিনিটের এই লাইভ ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, নিচে পোখরা শহর ৷ আর তা প্লেন থেকে দেখে তাঁদের মধ্যে একজন উত্তেজনায় চিৎকার করে বলছিলেন 'কী মজা' ৷ সেই মুহূর্তে সোনু জয়সওয়াল নামে একজন ফোন ক্যামেরাটি প্যান করছিলেন ৷
তার 58 সেকেন্ড পরই বিমানটি বাঁদিকে একটি সূক্ষ্ম বাঁক নেয় এবং তারপরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৷ যেহেতু ফোনের ক্যামেরা তখনও অন ছিল তাই পরবর্তী 30 সেকেন্ডে দেখা গিয়েছে চারপাশে বিশাল আগুনের ঝলক ৷ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত পাঁচ ভারতীয়ের মধ্যে রয়েছে গাজিপুরের বারেসার এই চার যুবক ৷ মোট 68 জন যাত্রীর মারা গিয়েছেন ৷
চার যুবকের নাম সোনু জয়সওয়াল (29), অনিল রাজভর (28), বিশাল শর্মা (23) ও অভিষেক সিং কুশওয়াহা (23) ৷ তাঁরা 13 জানুয়ারি কাঠমান্ডুতে নেমে পশুপতিনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্যারাগ্লাইডিংয়ের জন্য পোখরা যাচ্ছিলেন ৷ বিমান দুর্ঘটনায় চার যুবকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই গাজিপুরে বারেসার ও নোনাহারা এলাকায় তাঁদের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ৷ চারজনের মধ্যে সোনু ছিলেন সুরা ব্যবসায়ী ৷ অনিল ও অভিষেক দু'জনে জহুরাবাদ ও আলওয়ালপুর এলাকায় দু'টি জনসেবা কেন্দ্র চালাতেন ৷ বিশাল ছিলেন একটি দু'চাকার গাড়ি সংস্থার ফিনান্স অফিসার ৷
আরও পড়ুন : নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় 44 দেহ উদ্ধার, যাত্রী-ক্রু মিলিয়ে ছিলেন 72 জন
ভিডিয়োটি যে সোনুর ফেসবুক প্রোফাইল থেকেই লাইভ ছিল তা নিশ্চিতভাবে জানিয়েছেন তাঁর তুতো ভাই রজত জয়সওয়াল ৷ তিনি আরও জানান, পোখরার ফ্লাইটে বোর্ডিং নেওয়ার পর থেকেই সোনু ফেসবুকে লাইভ ছিলেন ৷ তাতে দেখে বোঝা যাচ্ছিল সঙ্গীদের নিয়ে তাঁরা ভীষণ খুশিতেই রয়েছেন ৷ কিন্তু তারমধ্যেই হঠাৎ দুর্ঘটনায় লাইভ বন্ধ হয়ে যায় ৷
গাজিপুর জেলাশাসকের অফিস থেকে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় এই চার যুবকের মৃত্যুর খবর তাঁদের পরিবারকে দেওয়া হয় ৷ চারজনের পরিচয় জানার পরই বারেসার এসএইচও দেবেন্দ্র প্রতাপ সিং মৃত অনিলের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা রামধারাসের সঙ্গে দেখা করেন ৷ এই অনিলের বাবা তাঁকে জানান, 13 জানুয়ারি এই চার যুবক নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হন ৷ তাঁদের এক সপ্তাহ সেখানে থাকার পরিকল্পনা ছিল ৷
কাশিমাবাদের সার্কেল অফিসার বলরাম সিং জানিয়েছেন, এসডিএমকে সঙ্গে নিয়ে মৃত চার যুবকের বাড়ি গিয়ে তাঁদের দেহ আনার জন্য সবরকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷ অভিষেকের দাদা অভিনয় বলেন, "নেপাল ও ভারতীয় দূতাবাস থেকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয় ৷ সেখান থেকেই জানতে পারি সোমবার সকালে দেহগুলি দিল্লি পৌঁছবে ৷"
আরও পড়ুন : নেপালের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিশন, শোক পালনে সরকারি ছুটি