নয়াদিল্লি, 15 জুলাই: এমনিতেই লোকসভার সচিবালয় থেকে অসংসদীয় শব্দের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ে তোলপাড় দেশ। এরইমধ্যে শুরু হল নতুন বিতর্ক ৷ আগামী সোমবার থেকেই সংসদে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। আর এই অধিবেশনের আগে সংসদের সচিবালয় তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল এবার থেকে সংসদ চত্বরে কোনও ধরনা করা যাবে না (Central imposes ban on demonstration outside parliament )। এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল গতকাল অসংসদীয় ভাষার তালিকা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। এই বিষয় নিয়েও তাদের অবস্থান স্পষ্ট। বাস্তবে এসব করে কেন্দ্রের শাসক দল বিরোধী রাজনৈতিক দলের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে বলে তারা মনে করে।
আরও পড়ুন: টুইটারে 'অসংসদীয় শব্দ'-এর 'পরিবর্ত তালিকা' প্রকাশ মহুয়ার !
এদিন এই নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত আসলে গণতন্ত্রের উপর কুঠারাঘাত। গণতন্ত্রের মন্দিরে বিরোধীদের কন্ঠ রোধ করার জন্য একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিজেপি সরকার। 1952 সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এইরকম নক্কারজনক ঘটনা ভারতবর্ষের আগে কখনও ঘটেনি। এটা গণতন্ত্রের জন্য একটা কলঙ্কিত অধ্যায়। আমাদের দেশের জন্য এটা কালো দিন।
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, "গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, সংসদীয় ব্যবস্থা, ভারতবর্ষের সংবিধান, ভারতের গণতন্ত্রকে এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি চূড়ান্তভাবে অপমান করছে। মিথ্যে কথা বলাটা সংবিধানিক এবং মিথ্যে কথা বলাটাই সংসদীয় রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে ! মোদি সরকার প্রমাণ করছে দেশের সংসদীয় ব্যবস্থায় তারাই শেষ কথা। বিরোধীদের কোনও মূল্য নেই।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "নিজেদের স্তুতি ছাড়া আর কিছুই শুনতে চাইছে না কেন্দ্রের শাসক দল। সে কারণে একের পর এক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে ৷ কিন্তু এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না।"
এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের জাতীয় মুখোপাধ্যায়ের তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তাঁর মতে এই সিদ্ধান্ত বাক স্বাধীনতার ওপরে আঘাত। কেন শুধু গান্ধিজির মূর্তি চত্বর থেকে সরানো হল ? সংবিধানের 19 (1)ক অনুচ্ছেদটাই মুছে ফেলুন। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন সাংসদ অধীর চৌধুরি । তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি স্বৈরাচারী সরকার । ক্রমশ আমাদের সন্দেহ সত্যি হচ্ছে । বারবার এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করে স্বৈরাচারী মানসিকতাকে প্রাধান্য দিচ্ছে । সংসদ চত্বরে মহত্মা গান্ধি থেকে শুরু করে বিআর আম্বেদকরের মতো মহাপুরুষদের মূর্তি আছে । তাঁর পদতলে বসে আমরা অহিংস ও শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন করি। সারা পৃথিবীর মানুষ গান্ধির পদতলে আসেন। সেখানে বসতে না-দিয়ে হিটলারের মতো আচরণ করছে কেন্দ্রীয় সরকার ।"