ETV Bharat / bharat

নিভু নিভু করেও নিভছে না চিরাগ...

author img

By

Published : Jun 18, 2021, 6:42 AM IST

Updated : Jun 18, 2021, 2:17 PM IST

রাজনীতির খেলা কিন্তু সবসময় সরল পাটিগণিতের অঙ্ক হয় না । এখানে সবসময় যে দুইয়ে দুইয়ে মিলে চার হতেই হবে এমনটা নয় । আর বিহারের রাজনীতিতে তো একেবারেই নয় । চিরাগের যখন নিজের দলের মধ্যেই এই নিভু নিভু অবস্থা, তখনও খেলা অনেকটা বাকি ।

Chirag Paswan
Chirag Paswan

পটনা , 18 জুন : প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের সাধের লোক জনশক্তি পার্টি আজ আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে । একদিকে চিরাগ পাসোয়ান (Chirag Paswan) । রামবিলাসের নিজের ছেলে । যাঁর উপর তিনি দলের সব দায়িত্ব অর্পণ করে গিয়েছিলেন । আর অন্যদিকে রামবিলাসের ভাই । পশুপতি কুমার পারস (Pashupati Kumar Paras) । দীর্ঘদিন প্রয়াত নেতার ডান হাত হয়ে কাজ করে এসেছেন । কিন্তু দলের মুখ হিসেবে কোনওদিনই ছিলেন না । অনেকটা পিছন থেকেই সংগঠনের দেখভাল করতেন ।

এখন এলজেপির যা পরিস্থিতি, তাতে কার্যত নিজের দলেই কোণঠাসা চিরাগ । এককালে চেয়েছিলেন সিনেমায় নায়ক হতে । শুরুও করেছিলেন । কিন্তু রুপোলি পর্দায় সেভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি । বরং রামবিলাসের ছেলেকে অনেক বেশি পরিণত দেখিয়েছে রাজনীতিতে । সাবলীল । পরিপক্ক । সুবক্তা । গ্রহণযোগ্যতাও বেশ ভালই ছিল এতদিন ।

দলের সর্বভারতীয় সভাপতি । রামবিলাস প্রয়াত হওয়ার পর দলের প্রধান বলতে ছিলেন তিনিই । কিন্তু একাধিক কারণে দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ । দলে চিরাগকে নিয়ে ছয় জন সাংসদ । বাকি পাঁচজনই বেঁকে বসলেন । সরে যেতে হল দায়িত্ব থেকে । ভাতিজাকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব নিলেন পশুপতি কুমার ।

চিরাগ যেন আজ মুকুটহীন রাজা । পারস যদিও বলছেন, পারিবারিক সম্পর্ক নিজের জায়গাতেই থাকবে । দল যেটা চেয়েছে, পারস নাকি সেটাই করেছেন । তিনি নাকি দলকে বাঁচিয়েছেন । কিন্তু শোনা যায়, সাংসদদের বেঁকে বসার পিছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন চিরাগের কাকাই । আর এতে নাকি প্রত্যক্ষ মদত ছিল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ।

আরও পড়ুন : Chirag Paswan : এলজেপির অধিকার আদায়ে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি "সিংহ-সন্তান" চিরাগের

তাহলে কি বিহারের রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবেন চিরাগ পাসওয়ান ?

রাজনীতির খেলা কিন্তু সবসময় সরল পাটিগণিতের অঙ্ক হয় না । এখানে সবসময় যে দুইয়ে দুইয়ে মিলে চার হতেই হবে এমনটা নয় । আর বিহারের রাজনীতিতে তো একেবারেই নয় । চিরাগের যখন নিজের দলের মধ্যেই এই নিভু নিভু অবস্থা, তখনও খেলা অনেকটা বাকি ।

দলের গদি হারালেও, লম্বা দৌড়ে এখনও অনেক কিছু দেখানো বাকি রয়েছে চিরাগের । আর এই মুহূর্তে চিরাগের সবথেকে বড় ভরসা পাসোয়ানদের ভোটব্যাঙ্ক । চিরাগের বাবা রামবিলাস পাসোয়ান একাধিকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন । আর দিল্লি পর্যন্ত তাঁর যাত্রা প্রত্যেকবার মসৃণ করে দিয়েছে পাসোয়ানদের ভোট । চিরাগ শিবিরের দাবি, এই ভোটব্যাঙ্ক রামবিলাসের পর তাঁর ছেলের সঙ্গেই রয়েছে । বিহারের মোট ভোটারদের 6 শতাংশ পাসোয়ান ভোটার । তাঁরা জানেন, চিরাগ এখন দলের মধ্যে কোণঠাসা । কিন্তু যতই হোক রামবিলাসের নিজের রক্ত চিরাগ । দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য চিরাগকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি । সেদিক থেকে দেখতে গেলে এখনও পারসের আগে তাঁদের পছন্দ চিরাগ ।

পাসোয়ানদের পাশাপাশি দলিত ভোটব্যাঙ্কও একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে চিরাগের জন্য । পাসোয়ানদের সঙ্গে নীতীশ কুমারের সম্পর্ক কোনওকালেই খুব একটা গলায়-গলায় ছিল না । কিন্তু রামবিলাসের ভাই পশুপতি বিভিন্ন সময়ে নীতীশ কুমারের থেকে সাহায্য নিয়েছেন । আর এই বিষয়টিকে যে খুব একটা ভালভাবে দেখেননি দলিতদের একটা বড় অংশ, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না । বিহারের দলিত সম্প্রদায়ের কাছে রামবিলাসের ভাই পশুপতি পারসের রিপোর্ট কার্ড মোটেই খুব একটা সন্তোষজনক নয় ।

আরও পড়ুন : এলজেপি-তে সভাপতির পদ খোয়ালেন রামবিলাসের চিরাগ

পশুপতি পারসের সঙ্গে নীতীশ কুমারের এই বন্ধুত্ব কিন্তু আজকের নয় । শোনা যায়, চিরাগ যখন বিহার ভোটের আগে নীতীশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, তখন তা মোটেই মেনে নেননি পশুপতি । বিবাদের শুরুটা হয়েছিল সেখান থেকেই । আর এখন দলের ঘোষিত প্রধান হয়ে পশুপতি যে নীতীশের সঙ্গেই ভিড়তে চাইবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।

এখানেই আরও একটা বড় দাঁও খেলার সুযোগ রয়েছে চিরাগের সামনে । নীতীশের সরকারের বেশ কিছু নীতিতে দলিতদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে । তার মধ্যে অবশ্যই মদ নিষিদ্ধ করার বিষয়টিও রয়েছে । বিগত কয়েক বছরে প্রায় লাখ চারেক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে এই আইন ভাঙার জন্য । যার মধ্যে 70 শতাংশ দলিত সম্প্রদায়ের । শুধু গ্রেফাতারিই নয়, এরপর আইনি প্রক্রিয়ার খরচও বইতে হচ্ছে অনেক । দলিতদের এই অসন্তোষটাকেও কাজে লাগাতে পারেন চিরাগ ।

আর এই গোটা বিষয়টাকে নিয়ে ধন্দে পড়েছেন বিজেপি নেতারা । বিহারের রাজনীতিতে পাসোয়ানদের ভোটব্যাঙ্ক নিঃসন্দেহে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর । এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে পাসোয়ানদের সমর্থন রয়েছে চিরাগের সঙ্গে । কাকার সঙ্গে তুলনা করতে গেলে, বিহারের আমজনতার কাছে চিরাগের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি । সুবক্তাও । এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কার দিকে ঝুঁকবে, তা ঠিক করতেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে ।

শেষ পর্যন্ত কার সমর্থন কোন দিকে যায়, তা বোঝা যাবে ভোটের সময়েই । কিন্তু বিহারের ভোট এখনও লম্বা সময় বাকি । তার আগে 2024-এর লোকসভা ভোট রয়েছে । আপাতত লোকসভা ভোটের দিকেই নজর দিতে চাইবেন চিরাগ । রামবিলাসের ছেলের ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, নীতীশ কুমার এবং বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন চিরাগ ।

এলজেপির এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে চিরাগকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি এর মধ্যে বিজেপির কোনও ভূমিকা দেখতে পাচ্ছেন কি না । তাঁর অবশ্য সোজা উত্তর ছিল -- এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় । এর জন্য তিনি অন্য কাউকে দায়ী করবেন না । এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, গত বছর বিহারের বিধানসভা ভোটের সময় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রামের বিশ্বস্ত হনুমান হিসেবে নিজেকে ব্যাখা করেছিলেন । সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেছিলেন, "যদি হনুমানকে রামের সাহায্য নিতে হয়, তবে হনুমানই বা কী করছে আর রামই বা কী করছে ?"

ভোটের সময় প্রতিটি জনসভায় চিরাগ বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন... কিন্তু নীতীশের সঙ্গে নয় । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এটি ছিল চিরাগের একটি কৌশলী চাল । তিনি প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপির সঙ্গে থাকার কথা যতই বলুন না কেন, তারপরেই বিজেপির জোটসঙ্গী নীতীশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছেন । ফলে বিজেপির বিরুদ্ধেও একটা পরোক্ষ বিদ্রোহের ইঙ্গিত তখন থেকেই দিয়ে রেখেছিলেন চিরাগ । বিজেপি যে তাদের বন্ধু-শিবিরকেও ছেড়ে কথা বলে না তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন ।

পটনা , 18 জুন : প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের সাধের লোক জনশক্তি পার্টি আজ আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে । একদিকে চিরাগ পাসোয়ান (Chirag Paswan) । রামবিলাসের নিজের ছেলে । যাঁর উপর তিনি দলের সব দায়িত্ব অর্পণ করে গিয়েছিলেন । আর অন্যদিকে রামবিলাসের ভাই । পশুপতি কুমার পারস (Pashupati Kumar Paras) । দীর্ঘদিন প্রয়াত নেতার ডান হাত হয়ে কাজ করে এসেছেন । কিন্তু দলের মুখ হিসেবে কোনওদিনই ছিলেন না । অনেকটা পিছন থেকেই সংগঠনের দেখভাল করতেন ।

এখন এলজেপির যা পরিস্থিতি, তাতে কার্যত নিজের দলেই কোণঠাসা চিরাগ । এককালে চেয়েছিলেন সিনেমায় নায়ক হতে । শুরুও করেছিলেন । কিন্তু রুপোলি পর্দায় সেভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি । বরং রামবিলাসের ছেলেকে অনেক বেশি পরিণত দেখিয়েছে রাজনীতিতে । সাবলীল । পরিপক্ক । সুবক্তা । গ্রহণযোগ্যতাও বেশ ভালই ছিল এতদিন ।

দলের সর্বভারতীয় সভাপতি । রামবিলাস প্রয়াত হওয়ার পর দলের প্রধান বলতে ছিলেন তিনিই । কিন্তু একাধিক কারণে দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ । দলে চিরাগকে নিয়ে ছয় জন সাংসদ । বাকি পাঁচজনই বেঁকে বসলেন । সরে যেতে হল দায়িত্ব থেকে । ভাতিজাকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব নিলেন পশুপতি কুমার ।

চিরাগ যেন আজ মুকুটহীন রাজা । পারস যদিও বলছেন, পারিবারিক সম্পর্ক নিজের জায়গাতেই থাকবে । দল যেটা চেয়েছে, পারস নাকি সেটাই করেছেন । তিনি নাকি দলকে বাঁচিয়েছেন । কিন্তু শোনা যায়, সাংসদদের বেঁকে বসার পিছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন চিরাগের কাকাই । আর এতে নাকি প্রত্যক্ষ মদত ছিল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ।

আরও পড়ুন : Chirag Paswan : এলজেপির অধিকার আদায়ে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি "সিংহ-সন্তান" চিরাগের

তাহলে কি বিহারের রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবেন চিরাগ পাসওয়ান ?

রাজনীতির খেলা কিন্তু সবসময় সরল পাটিগণিতের অঙ্ক হয় না । এখানে সবসময় যে দুইয়ে দুইয়ে মিলে চার হতেই হবে এমনটা নয় । আর বিহারের রাজনীতিতে তো একেবারেই নয় । চিরাগের যখন নিজের দলের মধ্যেই এই নিভু নিভু অবস্থা, তখনও খেলা অনেকটা বাকি ।

দলের গদি হারালেও, লম্বা দৌড়ে এখনও অনেক কিছু দেখানো বাকি রয়েছে চিরাগের । আর এই মুহূর্তে চিরাগের সবথেকে বড় ভরসা পাসোয়ানদের ভোটব্যাঙ্ক । চিরাগের বাবা রামবিলাস পাসোয়ান একাধিকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন । আর দিল্লি পর্যন্ত তাঁর যাত্রা প্রত্যেকবার মসৃণ করে দিয়েছে পাসোয়ানদের ভোট । চিরাগ শিবিরের দাবি, এই ভোটব্যাঙ্ক রামবিলাসের পর তাঁর ছেলের সঙ্গেই রয়েছে । বিহারের মোট ভোটারদের 6 শতাংশ পাসোয়ান ভোটার । তাঁরা জানেন, চিরাগ এখন দলের মধ্যে কোণঠাসা । কিন্তু যতই হোক রামবিলাসের নিজের রক্ত চিরাগ । দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য চিরাগকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি । সেদিক থেকে দেখতে গেলে এখনও পারসের আগে তাঁদের পছন্দ চিরাগ ।

পাসোয়ানদের পাশাপাশি দলিত ভোটব্যাঙ্কও একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে চিরাগের জন্য । পাসোয়ানদের সঙ্গে নীতীশ কুমারের সম্পর্ক কোনওকালেই খুব একটা গলায়-গলায় ছিল না । কিন্তু রামবিলাসের ভাই পশুপতি বিভিন্ন সময়ে নীতীশ কুমারের থেকে সাহায্য নিয়েছেন । আর এই বিষয়টিকে যে খুব একটা ভালভাবে দেখেননি দলিতদের একটা বড় অংশ, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না । বিহারের দলিত সম্প্রদায়ের কাছে রামবিলাসের ভাই পশুপতি পারসের রিপোর্ট কার্ড মোটেই খুব একটা সন্তোষজনক নয় ।

আরও পড়ুন : এলজেপি-তে সভাপতির পদ খোয়ালেন রামবিলাসের চিরাগ

পশুপতি পারসের সঙ্গে নীতীশ কুমারের এই বন্ধুত্ব কিন্তু আজকের নয় । শোনা যায়, চিরাগ যখন বিহার ভোটের আগে নীতীশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, তখন তা মোটেই মেনে নেননি পশুপতি । বিবাদের শুরুটা হয়েছিল সেখান থেকেই । আর এখন দলের ঘোষিত প্রধান হয়ে পশুপতি যে নীতীশের সঙ্গেই ভিড়তে চাইবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।

এখানেই আরও একটা বড় দাঁও খেলার সুযোগ রয়েছে চিরাগের সামনে । নীতীশের সরকারের বেশ কিছু নীতিতে দলিতদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে । তার মধ্যে অবশ্যই মদ নিষিদ্ধ করার বিষয়টিও রয়েছে । বিগত কয়েক বছরে প্রায় লাখ চারেক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে এই আইন ভাঙার জন্য । যার মধ্যে 70 শতাংশ দলিত সম্প্রদায়ের । শুধু গ্রেফাতারিই নয়, এরপর আইনি প্রক্রিয়ার খরচও বইতে হচ্ছে অনেক । দলিতদের এই অসন্তোষটাকেও কাজে লাগাতে পারেন চিরাগ ।

আর এই গোটা বিষয়টাকে নিয়ে ধন্দে পড়েছেন বিজেপি নেতারা । বিহারের রাজনীতিতে পাসোয়ানদের ভোটব্যাঙ্ক নিঃসন্দেহে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর । এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে পাসোয়ানদের সমর্থন রয়েছে চিরাগের সঙ্গে । কাকার সঙ্গে তুলনা করতে গেলে, বিহারের আমজনতার কাছে চিরাগের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি । সুবক্তাও । এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কার দিকে ঝুঁকবে, তা ঠিক করতেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে ।

শেষ পর্যন্ত কার সমর্থন কোন দিকে যায়, তা বোঝা যাবে ভোটের সময়েই । কিন্তু বিহারের ভোট এখনও লম্বা সময় বাকি । তার আগে 2024-এর লোকসভা ভোট রয়েছে । আপাতত লোকসভা ভোটের দিকেই নজর দিতে চাইবেন চিরাগ । রামবিলাসের ছেলের ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, নীতীশ কুমার এবং বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন চিরাগ ।

এলজেপির এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে চিরাগকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি এর মধ্যে বিজেপির কোনও ভূমিকা দেখতে পাচ্ছেন কি না । তাঁর অবশ্য সোজা উত্তর ছিল -- এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় । এর জন্য তিনি অন্য কাউকে দায়ী করবেন না । এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, গত বছর বিহারের বিধানসভা ভোটের সময় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রামের বিশ্বস্ত হনুমান হিসেবে নিজেকে ব্যাখা করেছিলেন । সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেছিলেন, "যদি হনুমানকে রামের সাহায্য নিতে হয়, তবে হনুমানই বা কী করছে আর রামই বা কী করছে ?"

ভোটের সময় প্রতিটি জনসভায় চিরাগ বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন... কিন্তু নীতীশের সঙ্গে নয় । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এটি ছিল চিরাগের একটি কৌশলী চাল । তিনি প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপির সঙ্গে থাকার কথা যতই বলুন না কেন, তারপরেই বিজেপির জোটসঙ্গী নীতীশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছেন । ফলে বিজেপির বিরুদ্ধেও একটা পরোক্ষ বিদ্রোহের ইঙ্গিত তখন থেকেই দিয়ে রেখেছিলেন চিরাগ । বিজেপি যে তাদের বন্ধু-শিবিরকেও ছেড়ে কথা বলে না তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন ।

Last Updated : Jun 18, 2021, 2:17 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.