হায়দরাবাদ, 25 নভেম্বর: দেশ থেকে বিজেপির নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে সব বাম দলকে একত্র হয়ে একটি শক্তিশালী বিরোধী জোট গঠনের প্রচেষ্টা করা উচিত ৷ ইটিভি ভারতের সঙ্গে বিশেষ কথোপকথনে এ কথা বললেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের (CPIML Liberation National General Secretary) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য (Dipankar Bhattacharya)৷ তিনি উত্তরের কয়েকটি রাজ্যে বিজেপির প্রভাব কমাতে এবং দক্ষিণে তাদের মাথা তোলার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে বামেদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ।
সিপিআই (এমএল) লিবারেশন তেলাঙ্গানা রাজ্যের জেলা সাধারণ সম্পাদকদের সভায় যোগদান করে তিনি বলেছেন, "আমরা আঞ্চলিক এবং জাতীয় দলগুলির সঙ্গে কাজ করব যাঁরা বিজেপির নীতির তীব্র বিরোধিতা করছে । জাতি, ধর্ম, অঞ্চল নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ যাতে সমান নাগরিকত্ব পায়, সেজন্য যুব ও কৃষকদের একটি শক্তিশালী আন্দোলন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ।" আগামী বছর 15 থেকে 20 ফেব্রুয়ারি পাটনায় দলের একাদশতম সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন ।
এ দিন বিজেপিকে একহাত নিয়ে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "ভারতের শক্তিই হল বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য । বিজেপি মানুষকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে । এর মোকাবিলা করতে হলে আমাদের ঐক্য ও উন্নয়নের জন্য লড়াই করতে হবে । এই বৈচিত্র্যকে দেশের জন্য আরও শক্তিশালী করতে হবে । ধর্ম নিয়ে কথা না বলে বিজেপির উচিত জনগণের সাধারণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করা ৷"
আরও পড়ুন: রাজ্যে অপশাসন চলছে ক্ষোভ প্রকাশ সিপিআইএমএল লিবারেশন নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর
বিজেপিকে রুখতে বিরোধীদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "দেশে এক দল এক নেতৃত্বের তত্ত্ব নিয়ে এগিয়ে চলেছে বিজেপি । আর বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ না হয়ে ষড়যন্ত্র করছে । অন্যদিকে বিজেপির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমছে । তামিলনাড়ুতে কিছু করতে পারেনি ৷ ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় নেই । বিহারে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে । পশ্চিমবঙ্গে হেরেছে । তেলাঙ্গানা উপনির্বাচনে বিজেপিকে আটকে দিয়েছে টিআরএস । বিরোধী দলে অনেক নেতা রয়েছেন । আরও নেতারা মিলে একটি শক্তিশালী জোট হতে পারে । সেখান থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী আসবেন ৷"
মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বর্ধিত দাম কীভাবে মোকাবিলা করবে সে প্রসঙ্গে সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের নেতা বলেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণবণ্টন ব্যবস্থার (পিডিএস) প্রসার করা উচিত । এর মাধ্যমে দরিদ্রদের সাশ্রয়ী মূল্যে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া উচিত । করোনার সময় গরিবদের আয় কমে গেলে কারও কারও আয় বেড়েছে ব্যাপক । এই প্রেক্ষাপটে দেশে সম্পদ কর আরোপ করা প্রয়োজন ।
ভবিষ্যতে তাঁর দলের লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, "আমাদের দলের মূল লক্ষ্য বিজেপিকে রুখে দেওয়া । প্রয়োজনে আমরা অন্য দলের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত । আগের উপনির্বাচনে বিজেপিকে ব্যর্থ করতে কমিউনিস্টদের সাহায্য টিআরএসের কাছে মূল্যবান ছিল । তেলাঙ্গানায় দলকে শক্তিশালী করতে হবে এবং বাম দলগুলিকে একত্র হয়ে বড় বিরোধীদের জন্য কাজ করতে হবে । আমরা টিআরএসের জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই । দলটি দেশে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে । তেলাঙ্গানায় বিজেপিকে থামানোর প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমরা টিআরএস সরকারের দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য লড়াই করব ।"