নয়াদিল্লি, 19 অগস্ট: সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল গুজরাত হাইকোর্ট ৷ গর্ভপাত সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি দু’সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা নিয়ে গুজরাতের উচ্চ আদালতকে শনিবার তিরস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, এই ধরনের বিষয়গুলি কতটা জরুরি, সেই বোধ থাকা উচিত ৷ এই নিয়ে এতটা উদাসীন হওয়া উচিত নয় ৷
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগারথনা এবং উজ্জল ভুঁইয়ার বেঞ্চে এই নিয়ে বিশেষ শুনানি হয় ৷ সেখানে আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, গত 7 অগস্ট গুজরাত হাইকোর্টে গর্ভপাত সংক্রান্ত আবেদন করা হয় ৷ শুনানি হয় পরদিন ৷ সেদিন একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ সেই বোর্ড গত 11 অগস্ট আদালতে অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করে ৷
তার পর মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয় আগামী 23 অগস্ট ৷ মেয়েটি 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ৷ তাই জরুরি ভিত্তিতে গর্ভপাত সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে তাঁর আইনজীবী ফের গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গত 17 অগস্ট ৷ কিন্তু সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায় ৷ গুজরাত হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও ওয়েবসাইটে আপলোড না হওয়ায়, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ এই নিয়ে বিস্ময়প্রকাশ করেন বিচারপতি নাগারথনা তিনি বলেন, “11 আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত মূল্যবান সময় নষ্ট হয়েছে ৷”
বিচারপতি নাগারথনা উল্লেখ করেন, উচ্চ আদালতের আদেশ আপলোড করার জন্য এখন সর্বোচ্চ আদালতকে অপেক্ষা করতে হবে ৷ ওই আদেশ না থাকলে সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে তা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত পৌঁছাবে ! ইতিমধ্যে 12টি মূল্য়বান দিন নষ্ট হয়েছে ৷ পরে শীর্ষ আদালত এই নিয়ে নোটিশ জারি করে ৷ শুনানিতে উপস্থিত গুজরাত সরকারের আইনজীবী স্বাতী ঘিলদিয়াল তা গ্রহণও করেন ৷
বিচারপতি নাগরাথনা বলেন, “এই ধরনের বিষয়ে কিছু জরুরি বোধ থাকতে হবে । এই ধরনের একটি বিষয়ে এতটা উদাসীন হলে চলে না ৷ আমরা এই মন্তব্য করার জন্য দুঃখিত ৷” সুপ্রিম কোর্ট সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে ৷ একই সঙ্গে আদালতের নজরে রয়েছে যে মেয়েটি এখন 27 সপ্তাহ ও 2 দিনের অন্তঃসত্ত্বা ৷ অর্থাৎ 28 সপ্তাহের কাছাকাছি ৷
এদিকে মেয়েটির আইনজীবী আদালতের কাছে নতুন করে মেডিক্যাল রিপোর্ট চাওয়ার অনুরোধ করেন ৷ তার ভিত্তিতে আদালত ফের ওই অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক পরিস্থিতির নতুন রিপোর্ট জমা করতে বলেছে ৷ আগামিকাল রবিবার সন্ধ্যার মধ্যেই ওই রিপোর্ট জমা করতে হবে বলে আদালত জানিয়েছে ৷ সোমবার বেঞ্চ শুরুতেই এই নিয়ে শুনানি করবে বলে জানিয়েছে ৷ তখন মেডিক্যাল রিপোর্ট যেন উপলব্ধ হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে বলেছে আদালত ৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ৷ সেই সম্পর্কের জেরেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ৷ পরে জানতে পারেন যে ছেলেটি বিবাহিত ৷ তাঁর অভিযোগ, তাঁর সম্মতি ছাড়াই শারীরিক সম্পর্ক করে ছেলেটি ৷ তাই তিনি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ৷
আরও পড়ুন: 11 বছরের নাবালিকার গর্ভপাত সম্ভব? মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের