নয়াদিল্লি, 21 অগস্ট: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার ৷ পৌরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ৷ তবে শীর্ষ আদালত সোমবার রাজ্যের সেই আবেদন বাতিল করে দিয়েছে ৷
দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছে যে, আদালত ওই রায়ে সন্তুষ্ট ৷ কারণ সিবিআই ও ইডি-র তদন্তাধীন শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে পৌরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির একটা সংযোগ রয়েছে ৷
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে শীর্ষ আইনজীবী কপিল সিবাল জোরালোভাবে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, হাইকোর্ট বিষয়টি সিবিআইকে হস্তান্তর করে ভুল করেছে, কারণ রাজ্য সরকার ওই কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে পারে না এমন কোনও পরিস্থিতি বা উপাদান ছিল না ।
প্রধান বিচারপতি তখন তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, পৌরসভায় কেলেঙ্কারি যদি শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত না হত, তবে পরিস্থিতি অন্যরকম হত ৷ কিন্তু আদালত সন্তুষ্ট যে দুটি কেলেঙ্কারিই পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ৷ এ কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালত সিবালকে বলে যে, আদালত পশ্চিমবঙ্গের আবেদনটি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয় ।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে তদন্ত হস্তান্তর করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের কাছে পর্যাপ্ত উপাদান ছিল না বলে যে দাবি সিবাল করেছিলেন, তাও মানতে অস্বীকার করে সুপ্রিম কোর্ট ।
বেঞ্চ উল্লেখ করে, এটি স্পষ্ট যে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত পৌরসভা নিয়োগ দুর্নীতি, কারণ একই ব্যক্তি ওএমআর শিট তৈরি করেছিলেন । বেঞ্চের কথায়, "কিছু অন্যায় ছিল.... এটি সেই স্টেটাস রিপোর্ট যার উপর একক বিচারপতি ভরসা করেছেন ৷"
সিবাল জিজ্ঞাসা করেন, "অন্য কোন রাজ্যে এমনটা ঘটছে ?" তিনি বলেন, এই বিষয়ে ইডি-র কোনও এক্তিয়ার নেই ৷ ইডির পক্ষে উপস্থিত হয়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন যে, এই বিষয়ে একটি 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র' রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ তিনি দাবি করেন যে, দুটি কেলেঙ্কারির মধ্যে সংযোগ থাকার প্রমাণ রয়েছে এবং একটি কোম্পানিকে 2টি পরীক্ষার ওএমআর শিট ছাপানোর জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল ।
আরও পড়ুন: পৌর দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্ত আটকাতে রাজ্যের জরুরি শুনানির আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
রাজু জানিয়েছেন যে, শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তের সময়, ইডি পৌরসভায় নিয়োগ কেলেঙ্কারি সম্পর্কিত তথ্য পেয়েছিল ৷ তাই কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছিল । হাইকোর্টের নির্দেশের পর সিবিআই একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে এবং তদন্ত চলছে বলে জানান এসভি রাজু ।
সিবাল বলেন যে, হাইকোর্ট শুধুমাত্র আদেশ দেওয়ার উদ্দেশ্যে স্টেটাস রিপোর্টের উপর নির্ভর করে এবং এটি একটি ভুল নজির স্থাপন করবে যদি রাষ্ট্রযন্ত্রকে বাইপাস করা হয় ৷ এই ঘটনা অন্যান্য রাজ্যেও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি । এই বিষয়ে বিশদ শুনানির পরে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ।