নয়াদিল্লি, 2 সেপ্টেম্বর: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (SC Rejects Suvendhu Plea)৷ নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগণনায় কারচুপির অভিযোগ এনে আদালতে (Calcutta High Court) আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee Election Petition)৷ সেই মামলা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য কোনও রাজ্যে সরানোর আবেদন জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা ৷ তবে তাঁর সেই দাবি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ শীর্ষ আদালত তাঁর আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শুভেন্দু ৷
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন যে পিটিশন দাখিল করেছেন, সেই মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর যে আবেদন জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী তা মঞ্জুর করা হচ্ছে না ৷ পছন্দমতো হাইকোর্ট বেছে নেওয়ার এই আবেদন শীর্ষ আদালত মেনে নিতে পারে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও হিমা কোহলির বেঞ্চ জানিয়েছে, "পছন্দমতো হাইকোর্ট বেছে নেওয়ার অনুমতি আমরা কখনও দেব না ৷ যে হাইকোর্টের এক্তিয়ারে এই মামলা রয়েছে, সেখানে এই মামলার আবেদন করা যেতে পারে ৷" শুভেন্দু চাইলে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির কাছে তাঁর আবেদন জানাতে পারেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷ বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের কথায়, পিটিশন অন্য রাজ্যে সরানো হলে এটাই মনে করা হবে যে কলকাতা হাইকোর্টের উপর আস্থা নেই শীর্ষ আদালতের ৷ তিনি বলেন, "আমরা হাইকোর্টের উপর আস্থা রাখি না, আমাদের এই বার্তা পাঠানো উচিত না ৷"
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে আর কোনও বাধা রইল না ৷ কলকাতা হাইকোর্টে নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম মামলা অন্য হাইকোর্টে সরানোর আর্জি, সুপ্রিম কোর্টে শুভেন্দু
নন্দীগ্রাম ভোটগণনা মামলা নিয়ে নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের সাক্ষী থেকেছে রাজ্য ৷ এর আগে নিরপেক্ষ বিচারের দাবিতে বিচারপতি কৌশক চন্দর এজলাস থেকে মামলা সারানোর দাবি করেছিলেন মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৷ বিচারপতির চন্দর বিজেপি যোগের কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী ৷ প্রচুর চাপানউতোর শেষে 7 জুলাই নন্দীগ্রাম ভোটগণনা মামলা থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি চন্দ ৷ কিন্তু মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেটি ভারতীয় বিচারব্যবস্থার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে । সেই কারণে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 5 লাখ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন । এর পর কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে পাঠান ।
এ দিকে, নন্দীগ্রাম ভোট গণনা মামলার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তাঁর দাবি ছিল, কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সরিয়ে নন্দীগ্রাম ভোটগণনা মামলা অন্য কোনও হাইকোর্টে সরানো হোক ৷ তাঁর ধারণা ছিল, কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার নিরপেক্ষ বিচার পাওয়া যাবে না । তবে তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷