ETV Bharat / bharat

সারের দাম বৃদ্ধি , কৃষকদের উপর চরম আঘাত

author img

By

Published : Apr 19, 2021, 11:29 AM IST

সারের অপ্রত্যাশিত দাম বৃদ্ধি কৃষকদের উপর চরম আঘাত আনছে ৷ তাদের বোঝা বহু গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে ৷ ডি অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি)-র 50 কেজির ব্যাগের দাম এত দিন ছিল 700 টাকা ৷ সেখান থেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 1900 টাকাতে ৷ মিশ্র সারের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ৷ কেন্দ্র অদূর ভবিষ্যতেও সারের দাম বাড়াবে না, এই ঘোষণার ঠিক এক দিন পরই সারের দাম বাড়ানো হয় ৷ নিজের কথা থেকে 180 ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল, দাম না বাড়ার বিষয়টি এক মাত্র স্টকে থাকা, মজুত সারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ৷ নতুন স্টকের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না ৷

সারের দাম বৃদ্ধি , কৃষকদের উপর চরম আঘাত
সারের দাম বৃদ্ধি , কৃষকদের উপর চরম আঘাত

সরকারের রেকর্ড অনুসারে দেশে পুরনো স্টকে থাকা সারের পরিমান 11.3 লাখ টন ৷ কেবল মাত্র দুটি তেলুগু রাজ্যে 31 লাখ টন সারের প্রয়োজন হয় ৷ এর থেকেই পুরো দেশে কত পরিমাণ সারের প্রয়োজন হয়, সেটা সহজেই অনুমান করা যায় ৷ এই পরিস্থিতিতে পুরনো মূল্য কেবল স্টকে থাকা সারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, এই নির্দেশিকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায় ৷ বিষয়টি প্রতারণার সামিল বলেও অনেকে মনে করেন ৷

আইএফএফসিও-র তরফে জানানো হয়েছে,আমদানিকৃত সার ও কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির জন্য এই বৃদ্ধি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে ৷ কারণ যাই হোক, হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি কৃষকদের উপর বিশাল বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে ৷ আবার সরকারে তরফে বলা হচ্ছে, নতুন দামে ব্যাগ গুলো ছাপা হলেও তা কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে না ৷ কিন্তু, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই এ কথা কৃষকদের উদ্বেগ কমাতে পাচ্ছে না ৷ কৃষকদের বোঝা কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সার ভর্তুকির অংশ বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন অনেকে ৷ এই ধরণের পরামর্শের কোনও জবাব না দিয়ে কেন্দ্রের তরফে কেবল বলা হয়েছে, আমদানি করা বেশি দামের সারের পরিবর্তে সুপার ফসফেট এবং জৈব সারের উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷

সব কিছু বলার পরও, সারের বর্ধিত দাম খাদ্য শস্য উৎপাদনকারী কৃষকদের উপর চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বোঝা চাপিয়ে দেবে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷ বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদনকারী কৃষকদের উপর বোঝা আরও অনেক বেশি হবে ৷ আর যে কোনও সবজি এবং ফসল চাষের ক্ষেত্রে সার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি প্রয়োজনীয়, তাই সার ছাড়া কোনও কিছুই সম্ভব নয় ৷

সারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু, কৃষি জমিতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা কোনও ভাবেই স্বস্তি পাচ্ছেন না ৷ এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের দুঃখের কথা কে শুনবে ?

জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি কৃষির কাঁচামাল উৎপাদনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, সে কথা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল । ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কৃষি সরঞ্জাম ব্যবহারের খরচ বেড়েছে । সারের ব্যয় বৃদ্ধি কৃষকদের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে । এই ব্যয় বৃদ্ধি কৃষকদের হৃদয়ে ভয়ঙ্কর আঘাত আনছে ।

ইউরিয়ার দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে । এই মুহূর্তে ইউরিয়ার দাম না বাড়ানো হলেও অদূর ভবিষ্যতে তা বাড়ানো হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে । এবং এই দাম বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকার গুলির সঙ্গে কতটা আলোচনা করা হবে, সে নিয়েও সন্দেহ করা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন : এবার ভারত থেকে আসা বিমানে না হংকংয়ের

আইএফএফসিও-র তরফে জানানো হয়েছে, মজুত থাকা ডিএপি এবং মিশ্র সারের ক্ষেত্রেই কেবল মাত্র পুরনো দামে তা বিক্রি করা হবে । কিন্তু, এখন প্রশ্ন সার ব্যবসায়ীরা কতটা এই নিয়ম মেনে কম দামে কৃষকদের সার বিক্রি করবেন ।

বিভিন্ন ফসলের চাষের জন্য কী রকম সার কতটা পরিমাণ ব্যবহার করা হবে, সে সম্পর্কে অধিকাংশ কৃষকের সঠিক ধারণা এবং প্রশিক্ষণ নেই । আর সে কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তারা প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হন । যেমন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পটাসিয়াম এবং নাইট্রোজেন 1:4 অনুপাতে ব্যবহার করা উচিত । কিন্তু, দেখা গিয়েছে, পঞ্জাবে এই রাসায়নিক সার গুলি 1:24 অনুপাতে, হরিয়ানায় 1:32 অনুপাতে এই সার ব্যবহার করা হয় । অনেক রাজ্যে আবার নির্ধারিত অনুপাতের থেকে দ্বিগুণ অনুপাত ব্যবহার করতেও দেখা গিয়েছে । আর এর ফলে মাটির উর্ববরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে । আবার এ কারণে ফলন নষ্ট হচ্ছে বহুল পরিমানে । খামারের উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে ।

গবেষণায় জানা গিয়েছে, রাসায়নিক সারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে শুধু ফসল নষ্ট হচ্ছে তাই নয়, গুণগত মান অনেক কমে যাচ্ছে । অনেক টাকা নষ্ট হচ্ছে । সরকারের নীতি নির্ধারণের সময় এই বিষয় গুলির দিকে নজর দেওয়া উচিত । তেলাঙ্গানা সরকারের প্রস্তাব, কৃষি কর্মকর্তারা নিজেরা মাঠে গিয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন । প্রস্তাবটি যদি জাতীয় পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে, তাহলে সারের ব্যবহার এবং দামের বোঝা অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । একই সঙ্গে ফলনের মানের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

সরকারের রেকর্ড অনুসারে দেশে পুরনো স্টকে থাকা সারের পরিমান 11.3 লাখ টন ৷ কেবল মাত্র দুটি তেলুগু রাজ্যে 31 লাখ টন সারের প্রয়োজন হয় ৷ এর থেকেই পুরো দেশে কত পরিমাণ সারের প্রয়োজন হয়, সেটা সহজেই অনুমান করা যায় ৷ এই পরিস্থিতিতে পুরনো মূল্য কেবল স্টকে থাকা সারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, এই নির্দেশিকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায় ৷ বিষয়টি প্রতারণার সামিল বলেও অনেকে মনে করেন ৷

আইএফএফসিও-র তরফে জানানো হয়েছে,আমদানিকৃত সার ও কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির জন্য এই বৃদ্ধি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে ৷ কারণ যাই হোক, হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি কৃষকদের উপর বিশাল বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে ৷ আবার সরকারে তরফে বলা হচ্ছে, নতুন দামে ব্যাগ গুলো ছাপা হলেও তা কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে না ৷ কিন্তু, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই এ কথা কৃষকদের উদ্বেগ কমাতে পাচ্ছে না ৷ কৃষকদের বোঝা কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সার ভর্তুকির অংশ বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন অনেকে ৷ এই ধরণের পরামর্শের কোনও জবাব না দিয়ে কেন্দ্রের তরফে কেবল বলা হয়েছে, আমদানি করা বেশি দামের সারের পরিবর্তে সুপার ফসফেট এবং জৈব সারের উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷

সব কিছু বলার পরও, সারের বর্ধিত দাম খাদ্য শস্য উৎপাদনকারী কৃষকদের উপর চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বোঝা চাপিয়ে দেবে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷ বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদনকারী কৃষকদের উপর বোঝা আরও অনেক বেশি হবে ৷ আর যে কোনও সবজি এবং ফসল চাষের ক্ষেত্রে সার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি প্রয়োজনীয়, তাই সার ছাড়া কোনও কিছুই সম্ভব নয় ৷

সারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু, কৃষি জমিতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা কোনও ভাবেই স্বস্তি পাচ্ছেন না ৷ এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের দুঃখের কথা কে শুনবে ?

জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি কৃষির কাঁচামাল উৎপাদনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, সে কথা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল । ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কৃষি সরঞ্জাম ব্যবহারের খরচ বেড়েছে । সারের ব্যয় বৃদ্ধি কৃষকদের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে । এই ব্যয় বৃদ্ধি কৃষকদের হৃদয়ে ভয়ঙ্কর আঘাত আনছে ।

ইউরিয়ার দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে । এই মুহূর্তে ইউরিয়ার দাম না বাড়ানো হলেও অদূর ভবিষ্যতে তা বাড়ানো হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে । এবং এই দাম বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকার গুলির সঙ্গে কতটা আলোচনা করা হবে, সে নিয়েও সন্দেহ করা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন : এবার ভারত থেকে আসা বিমানে না হংকংয়ের

আইএফএফসিও-র তরফে জানানো হয়েছে, মজুত থাকা ডিএপি এবং মিশ্র সারের ক্ষেত্রেই কেবল মাত্র পুরনো দামে তা বিক্রি করা হবে । কিন্তু, এখন প্রশ্ন সার ব্যবসায়ীরা কতটা এই নিয়ম মেনে কম দামে কৃষকদের সার বিক্রি করবেন ।

বিভিন্ন ফসলের চাষের জন্য কী রকম সার কতটা পরিমাণ ব্যবহার করা হবে, সে সম্পর্কে অধিকাংশ কৃষকের সঠিক ধারণা এবং প্রশিক্ষণ নেই । আর সে কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তারা প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হন । যেমন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পটাসিয়াম এবং নাইট্রোজেন 1:4 অনুপাতে ব্যবহার করা উচিত । কিন্তু, দেখা গিয়েছে, পঞ্জাবে এই রাসায়নিক সার গুলি 1:24 অনুপাতে, হরিয়ানায় 1:32 অনুপাতে এই সার ব্যবহার করা হয় । অনেক রাজ্যে আবার নির্ধারিত অনুপাতের থেকে দ্বিগুণ অনুপাত ব্যবহার করতেও দেখা গিয়েছে । আর এর ফলে মাটির উর্ববরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে । আবার এ কারণে ফলন নষ্ট হচ্ছে বহুল পরিমানে । খামারের উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে ।

গবেষণায় জানা গিয়েছে, রাসায়নিক সারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে শুধু ফসল নষ্ট হচ্ছে তাই নয়, গুণগত মান অনেক কমে যাচ্ছে । অনেক টাকা নষ্ট হচ্ছে । সরকারের নীতি নির্ধারণের সময় এই বিষয় গুলির দিকে নজর দেওয়া উচিত । তেলাঙ্গানা সরকারের প্রস্তাব, কৃষি কর্মকর্তারা নিজেরা মাঠে গিয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন । প্রস্তাবটি যদি জাতীয় পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে, তাহলে সারের ব্যবহার এবং দামের বোঝা অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । একই সঙ্গে ফলনের মানের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.