নয়াদিল্লি, 24 অগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে চিন রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের কাছে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন । দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে দুই রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে কথোপকথনের সময়ই নিজের উদ্বেগ জাহির করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি । একই সঙ্গে এই আলোচনার মাধ্যমে বরফ গলতে পারে বলেও মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক ৷
ব্রিকস সম্মেলনের সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়ার সময়ই এদিন বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা এক বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে ভারত-চিন সীমান্ত অঞ্চলের পশ্চিম সেক্টরে এলএসি বরাবর অমীমাংসিত সমস্যাগুলির বিষয়ে ভারতের উদ্বেগেক কথা তুলে ধরেন ।
তিনি এদিন উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকীকরণের জন্য সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা আবশ্যক ৷ পাশাপাশি এলএসি’কে পর্যবেক্ষণ এবং উভয় উভয়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা অপরিহার্য বলেও উল্লেখ করেছেন মোদি । বিদেশ সচিব জানান, এই বিষয়ে উভয় নেতাই তাদের প্রাসঙ্গিক আধিকারিকদের দ্রুত বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে এবং ডি-এস্কেলেশনের প্রচেষ্টা জোরদার করার নির্দেশ দিতে সম্মত হয়েছেন ৷
2020 সালের মে মাসে, গালওয়ান উপত্যকা সীমান্ত সংঘর্ষের পর দুই নেতার মধ্যে এই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক হয় এদিন । এলএসি-তে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ মন্ত্রী পর্যায়ে বেশ কয়েকটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল অবশ্য সমস্যা সমাধান করার জন্য ৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর মধ্যে কখনও এরপর থেকে কথা বলেননি বা আলোচনার জন্যও বসেননি । উল্লেখ্য, 2022 সালের সেপ্টেম্বরে দুই নেতা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ সমরকন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে নেতাদের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়েছিলেন ৷ তবে আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা হয়নি তাঁদের মধ্যে ।
আরও পড়ুন: ব্রিকসের মঞ্চে করমর্দন মোদি-জিনপিংয়ের
2022 সালের নভেম্বরে দুই নেতাকে বালিতে জি-20 সম্মেলনে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল ৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি সেই সময় শি জিংপিনের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন ৷ 2020 সাল থেকে পূর্ব লাদাখে সীমানা সমস্যা সমাধানের জন্য উভয় পক্ষই এখন পর্যন্ত 19 দফা আলোচনা করেছে ।গত মাসে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল চিনা কূটনীতিক ওয়াং ইকে জানিয়েছিলেন যে, 2020 সাল থেকে ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম সেক্টরে এলএসি বরাবর পরিস্থিতি কৌশলগত আস্থা এবং সম্পর্কের জনসাধারণ ও রাজনৈতিক ভিত্তি নষ্ট করেছে । ডোভাল এই বছরের জুলাইয়ে জোহানেসবার্গে ব্রিকস এনএসএ-এর বৈঠকের ফাঁকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য এবং সিপিসি বিদেশ বিষয়ক কমিশনের অফিসের পরিচালক ওয়াং ইয়ের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন ।