ETV Bharat / bharat

রেলপথে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে এআই প্রযুক্তির উপর ভরসা মন্ত্রকের

New Technology to Stop Elephant Death: রেললাইনে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যে এআই প্রযুক্তির প্রয়োগ করতে চলেছে রেলমন্ত্রক ৷ নয়া প্রযুক্তির নাম অনুপ্রবেশ শনাক্তকরণ বা ইনট্রুসন ডিটেকশন সিস্টেম ৷ গৌতম দেবরায়ের প্রতিবেদন ৷

Railway Ministry artificial based technology
হাতির মৃত্যু ঠেকাতে নয়া প্রযুক্তি রেলমন্ত্রকের
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 30, 2023, 9:29 PM IST

নয়াদিল্লি, 30 নভেম্বর: বারবার হাতির মৃত্যুর জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ছে রেল ৷ তাই ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকাতে এবার নয়া প্রযুক্তির ব্যবহার করতে চলে রেলমন্ত্রক ৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক এই প্রযুক্তির নাম অনুপ্রবেশ শনাক্তকরণ বা ইনট্রুসন ডিটেকশন সিস্টেম (আইডিইএস) ৷ শীঘ্রই সারা ভারতের 700 কিলোমিটার হাতি-প্রবণ এলাকায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷

তিনদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৷ যাতে শাবক-সহ তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছে ৷ এর আগে অগস্ট মাসেও ট্রেনে কাটা পড়েছিল একটি অন্তঃসত্ত্বা হাতি ৷ চাপড়ামারি অভয়ারণ্যের সেই ঘটনায় শোরগোল পরে গিয়েছিল ৷ পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা-সহ দক্ষিণের একাধিক রাজ্যে দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে হাতি চলে আসায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে ৷ এইসব ঘটনায় অনেকক্ষেত্রে রেলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে ৷ এরপরেই সম্প্রতি ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে হাতির মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ তারপরেই রেলমন্ত্রকের তরফে এই নয়া প্রযুক্তি আনার কথা জানা গিয়েছে ৷

অনুপ্রবেশ শনাক্তকরণ সিস্টেম নামে এই প্রযুক্তিটি ইতিমধ্যেই অসমে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে চালু করা হয়েছে ৷ অসমের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর)-এর অধীনে লুমডিং বিভাগে 60 থেকে 70 কিলোমিটারের একটি অংশে এই সিস্টেমকে কাজে লাগানো হচ্ছে । এই প্রযুক্তি সম্পর্কে এনএফআর-এর জেনারেল ম্যানেজার আনশুল গুপ্তা ইটিভি ভারতকে বলেন, সিস্টেমটি খুব ভালো কাজ করছে । এটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ওএফসি ভিত্তিক শনাক্তকরণ সিস্টেম । এর মধ্যে সেন্সর রয়েছে ৷ রেলওয়ে ট্র্যাকের কাছাকাছি হাতি চলে এলেই সেন্সর সেটির অবস্থানকে চিহ্নিত করবে এবং সঙ্গে সঙ্গে অফিসার, চালক, স্টেশন মাস্টার এবং বাকিদের এ বিষয়ে সতর্ক করবে ৷

রেল মন্ত্রক বলেছে, একটি সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্রযুক্তিটি আগামী মাসগুলিতে 700 কিলোমিটার হাতি-প্রবণ এলাকায় প্রয়োগ করা হবে । এই প্রকল্পে আনুমানিক ব্যয় হবে 181 কোটি টাকা ৷ তবে এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের খাতে ভালো বিনিয়োগ হবে । রেলমন্ত্রকের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, "এই নয়া প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, কেরল, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের কিছু অংশ এবং তামিলনাড়ুতেও বাস্তবায়িত হবে । এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি প্রচেষ্টা ৷"

সূত্রের খবর, না জেনেই দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে চলে আসায় দেশে হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে ৷ ট্রেনের ধাক্কায় ভারতে প্রতি বছর এক ডজনেরও বেশি হাতির মৃত্যু হচ্ছে ৷ তথ্য অনুযায়ী, 2012-2022 পর্যন্ত গত 10 বছরে কমপক্ষে 200টি হাতির মৃত্যু হয়েছে । তার মধ্যে অসমে 30টি, পশ্চিমবঙ্গে 55টি, ওড়িশায় 14টি, উত্তরাখণ্ডে নয়, ত্রিপুরা ও উত্তরপ্রদেশে একটি করে হাতির প্রাণহানি হয়েছে ।

ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, এনএফআর হাতির প্রাণহানি আটকাতে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ নিচ্ছে । বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রেলওয়ে ট্র্যাক থেকে গাছপালা পরিষ্কার করা হয়েছে ৷ এনএফআরের তরফে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে । রেলমন্ত্রকের আধিকারিক বলেন, "প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল, হাতির ট্রেন-সম্পর্কিত ঘটনার প্রভাব কমানো ৷ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বৃহত্তর লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখা ।"

উল্লেখ্য, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এর আগে জোর দিয়েছিলেন দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ৷ যা পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে পরিকাঠামো উন্নয়নেও সামঞ্জস্য রাখবে ৷ পাশাপাশি সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা প্রদান করা যাবে । রেলমন্ত্রী সারা ভারতে হাতি-প্রবণ অঞ্চলে থাকা সমস্যাগুলি মোকাবিলায় তাঁর মন্ত্রকের অটল প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন ।

আরও পড়ুন:

  1. ফের উদাসীনতা ! ট্রেনের ধাক্কায় 3টি হাতির মৃত্যু, প্রশ্নের মুখে রেল
  2. ট্রেনের ধাক্কায় গর্ভবতী হাতির মৃত্যু, পেট থেকে ছিটকে গেল শাবক
  3. ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে রেলের নয়া প্রযুক্তি, বরাদ্দ 77 কোটি

নয়াদিল্লি, 30 নভেম্বর: বারবার হাতির মৃত্যুর জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ছে রেল ৷ তাই ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকাতে এবার নয়া প্রযুক্তির ব্যবহার করতে চলে রেলমন্ত্রক ৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক এই প্রযুক্তির নাম অনুপ্রবেশ শনাক্তকরণ বা ইনট্রুসন ডিটেকশন সিস্টেম (আইডিইএস) ৷ শীঘ্রই সারা ভারতের 700 কিলোমিটার হাতি-প্রবণ এলাকায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷

তিনদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৷ যাতে শাবক-সহ তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছে ৷ এর আগে অগস্ট মাসেও ট্রেনে কাটা পড়েছিল একটি অন্তঃসত্ত্বা হাতি ৷ চাপড়ামারি অভয়ারণ্যের সেই ঘটনায় শোরগোল পরে গিয়েছিল ৷ পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা-সহ দক্ষিণের একাধিক রাজ্যে দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে হাতি চলে আসায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে ৷ এইসব ঘটনায় অনেকক্ষেত্রে রেলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে ৷ এরপরেই সম্প্রতি ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে হাতির মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ তারপরেই রেলমন্ত্রকের তরফে এই নয়া প্রযুক্তি আনার কথা জানা গিয়েছে ৷

অনুপ্রবেশ শনাক্তকরণ সিস্টেম নামে এই প্রযুক্তিটি ইতিমধ্যেই অসমে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে চালু করা হয়েছে ৷ অসমের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর)-এর অধীনে লুমডিং বিভাগে 60 থেকে 70 কিলোমিটারের একটি অংশে এই সিস্টেমকে কাজে লাগানো হচ্ছে । এই প্রযুক্তি সম্পর্কে এনএফআর-এর জেনারেল ম্যানেজার আনশুল গুপ্তা ইটিভি ভারতকে বলেন, সিস্টেমটি খুব ভালো কাজ করছে । এটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ওএফসি ভিত্তিক শনাক্তকরণ সিস্টেম । এর মধ্যে সেন্সর রয়েছে ৷ রেলওয়ে ট্র্যাকের কাছাকাছি হাতি চলে এলেই সেন্সর সেটির অবস্থানকে চিহ্নিত করবে এবং সঙ্গে সঙ্গে অফিসার, চালক, স্টেশন মাস্টার এবং বাকিদের এ বিষয়ে সতর্ক করবে ৷

রেল মন্ত্রক বলেছে, একটি সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্রযুক্তিটি আগামী মাসগুলিতে 700 কিলোমিটার হাতি-প্রবণ এলাকায় প্রয়োগ করা হবে । এই প্রকল্পে আনুমানিক ব্যয় হবে 181 কোটি টাকা ৷ তবে এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের খাতে ভালো বিনিয়োগ হবে । রেলমন্ত্রকের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, "এই নয়া প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, কেরল, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের কিছু অংশ এবং তামিলনাড়ুতেও বাস্তবায়িত হবে । এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি প্রচেষ্টা ৷"

সূত্রের খবর, না জেনেই দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে চলে আসায় দেশে হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে ৷ ট্রেনের ধাক্কায় ভারতে প্রতি বছর এক ডজনেরও বেশি হাতির মৃত্যু হচ্ছে ৷ তথ্য অনুযায়ী, 2012-2022 পর্যন্ত গত 10 বছরে কমপক্ষে 200টি হাতির মৃত্যু হয়েছে । তার মধ্যে অসমে 30টি, পশ্চিমবঙ্গে 55টি, ওড়িশায় 14টি, উত্তরাখণ্ডে নয়, ত্রিপুরা ও উত্তরপ্রদেশে একটি করে হাতির প্রাণহানি হয়েছে ।

ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, এনএফআর হাতির প্রাণহানি আটকাতে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ নিচ্ছে । বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রেলওয়ে ট্র্যাক থেকে গাছপালা পরিষ্কার করা হয়েছে ৷ এনএফআরের তরফে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে । রেলমন্ত্রকের আধিকারিক বলেন, "প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল, হাতির ট্রেন-সম্পর্কিত ঘটনার প্রভাব কমানো ৷ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বৃহত্তর লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখা ।"

উল্লেখ্য, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এর আগে জোর দিয়েছিলেন দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ৷ যা পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে পরিকাঠামো উন্নয়নেও সামঞ্জস্য রাখবে ৷ পাশাপাশি সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা প্রদান করা যাবে । রেলমন্ত্রী সারা ভারতে হাতি-প্রবণ অঞ্চলে থাকা সমস্যাগুলি মোকাবিলায় তাঁর মন্ত্রকের অটল প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন ।

আরও পড়ুন:

  1. ফের উদাসীনতা ! ট্রেনের ধাক্কায় 3টি হাতির মৃত্যু, প্রশ্নের মুখে রেল
  2. ট্রেনের ধাক্কায় গর্ভবতী হাতির মৃত্যু, পেট থেকে ছিটকে গেল শাবক
  3. ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে রেলের নয়া প্রযুক্তি, বরাদ্দ 77 কোটি
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.