নয়াদিল্লি, 8 ফেব্রুয়ারি: নাম না করে রাহুল গান্ধিকে (Rahul Gandhi) নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ৷ বুধবার লোকসভায় ভাষণ দেওয়ার তিনি আক্রমণ শানান এই কংগ্রেস (Congress) সাংসদের বিরুদ্ধে ৷ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, মঙ্গলবার লোকসভায় এমন কিছু ভাষণ শোনা গিয়েছিল, যা তাঁদের (কংগ্রেসের) ইকোসিস্টেমের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল ৷ আর সেই ভাষণের পর তাঁর হয়তো রাতে ভালো ঘুম হয়েছে ৷ হয়তো তিনি সময় মতো ঘুম থেকে উঠতেও পারেননি ৷
বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ (President Speech in Budget Session) নিয়ে ধন্যবাদজ্ঞাপক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে সংসদে ৷ মঙ্গলবার লোকসভায় সেই প্রস্তাব নিয়ে ভাষণ দেন কেরালার ওয়েনাড়ের সাংসদ রাহুল গান্ধি ৷ আর বুধবার সব শেষে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী ৷ মঙ্গলবার রাহুল গান্ধি সরাসরি নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে ৷ আদানি বিতর্কের (Adani Controversy) প্রসঙ্গ টেনেই তিনি সরব হয়েছেন মোদির বিরুদ্ধে ৷
কিন্তু বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ যখন প্রধানমন্ত্রী ভাষণ শুরু করেন, তখন রাহুল লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন না ৷ আর তার প্রেক্ষিতেই মোদি এই মন্তব্য করেন বলে মনে করা হচ্ছে ৷ পরে যদিও রাহুল লোকসভায় পৌঁছান ৷ আর প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নিজের আসনেই উপস্থিত থেকে সবকিছু শুনেছেন ৷
এদিন ভাষণের শেষদিকে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রার (Bharat Jodo Yatra) প্রসঙ্গ টেনেছেন ৷ অবশ্যই তিনি কংগ্রেসের ওই কর্মসূচির নাম উল্লেখ করেননি ৷ সম্প্রতি ওই যাত্রা জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে শেষ হয়েছে ৷ তার আগে লালচকে জাতীয় পতাকা তুলতে দেখা গিয়েছে রাহুলকে ৷ আর মোদি মনে করিয়ে দিয়েছেন গত শতাব্দীর নয়ের দশকের কথা ৷ তাঁর দাবি, সেই সময় জঙ্গিদের হুমকি উপেক্ষা করেই লালচকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ৷ কিন্তু এখন কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ৷ সেখানে মানুষ শান্তিতে সিনেমাও দেখতে যেতে পারে ৷
এদিন রাষ্ট্রপতির দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণ নিয়েও বিরোধীদের বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপতির ভাষণ যখন চলছিল, তখন কিছু সদস্য তা এড়িয়ে যান । একজন নেতা তো রাষ্ট্রপতিকে অপমান করেছেন । তাঁরা তফশিলি উপজাতির বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শন করেছেন । টিভিতে যখন এই ধরনের কথা বলা হয়, তখন ভেতরের গভীরে ঘৃণার অনুভূতি বেরিয়ে আসে । পরে চিঠি লিখে আত্মরক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে ৷’’
এদিনের ভাষণে ভারতীয় অর্থনীতির কথাও উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে ৷ ভারত যে এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি সেটাও উল্লেখ করেছেন তিনি ৷ মোদি বলেন, ‘‘যুদ্ধের কারণে বেশ কয়েকটি দেশ অস্থিতিশীলতায় ভুগছে । আমাদের প্রতিবেশী-সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও খাদ্য নিরাপত্তার অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে । কঠিন সময়ের মধ্যে ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে ৷’’
দৌপদী মুর্মুর রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, এতে ভারতের সম্মান বেড়েছে ৷ বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে দেখে ভারতের মেয়েরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন ৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমি রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ জানাই । আগেও সুযোগ পেয়েছি । তবে এবার ধন্যবাদের পাশাপাশি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই । তাঁর দূরদর্শী ভাষণে রাষ্ট্রপতি আমাদের ও কোটি কোটি ভারতীয়কে পথ দেখিয়েছেন । প্রজাতন্ত্রের প্রধান হিসেবে তাঁর উপস্থিতি ঐতিহাসিক ৷ পাশাপাশি দেশের কন্যা ও বোনদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক ৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের গর্ব বাড়িয়েছেন । আজ, স্বাধীনতার কয়েক বছর পর, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গর্ববোধ ও তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে । এই জাতি এবং সংসদ তার জন্য কৃতজ্ঞ ৷’’
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কংগ্রেসের ধ্বংস নিয়ে পড়ানো হবে, লোকসভায় তোপ মোদির