জাজপুর, 9 ডিসেম্বর: স্বামীর সঙ্গে বনবাস যেতে পিছপা হননি যে সীতা, তাঁরই অগ্নিপরীক্ষা নিয়েছিলেন রামায়ণের রামচন্দ্র ৷ তবে জাজপুরের এই রামচন্দ্র একটু বেশি কঠিন (Ram not eating rice for 42 years after fight with Sita) ৷ তাই তো স্ত্রীর হাতে ভাত খান না ৷ এক বছর-দু’বছর নয়, টানা 42 বছর ভাত না-খেয়ে আছেন ৷ এমনকী স্ত্রী সঙ্গেও থাকেন না জাজপুরের রসুলপুর ব্লকের লক্ষ্মীনগর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভিকিপুর গ্রামের রামচন্দ্র মাঝি ৷ শুনতে অবাক লাগলেও প্রতিজ্ঞায় অনড় রামচন্দ্র ৷ স্বামী রামচন্দ্রের রাগের কথা বলতে গিয়ে আজও চোখ ভেজে স্ত্রী সীতার ৷
ঘটনার সূত্রপাত, বিয়ের 10 বছর পর ৷ আর পাঁচটি সুখী পরিবারের মতো স্ত্রী, পাঁচ কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে থাকতেন রামচন্দ্র ৷ পেশায় দিন মজুরের কাজ করতেন রামচন্দ্র ৷ তাঁর স্ত্রী সীতা শুটকি মাছ বিক্রি করতেন ৷ অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও রামচন্দ্র দিনমজুরের কাজে বেরিয়েছিলেন ৷ ফিরে স্ত্রী কাছে দুপুরের খাবার খেতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু অসুস্থতার কারণে স্ত্রী সেদিন রান্না করতে পারেননি ৷ তাই স্বামী রামচন্দ্রকে দুপুরে ভাত খেতে দিতে পারেননি ৷ স্ত্রী'র সঙ্গে ক্ষণিক ঝগড়ার পর সেদিনই প্রতিজ্ঞা করে বাড়ি ছেড়েছিলেন ৷ গৃহত্যাগী রামচন্দ্র বাড়ি থেকে অদূরে একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে সেখানে থাকতে শুরু করেন ৷ আজও সেই ঘরেই থাকেন রামচন্দ্র ৷ সকাল, দুপুর, রাত্রি তিন বেলা মুড়ি খেয়ে থাকেন ৷
আরও পড়ুন: চলছে উদ্ধারের চেষ্টা, 65 ঘণ্টা পরেও 400 ফুট কুয়োয় আটকে মধ্যপ্রদেশের খুদে
রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাদেবী এই প্রসঙ্গেই জানান, প্রায় 42 বছর ধরে তিনি ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে নিয়ে পুরনো বাড়িতে একাই থাকেন ৷ নিজের ভুল স্বীকার করে রান্না খাবার স্বামীকে খেতে ডাকলেও রামচন্দ্র আসেননি ৷ সম্প্রতি তাঁর জামাই ও নাতি-নাতনিরা রামচন্দ্রের রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ৷ কারোর কথাতেই ঘরে ফেরেননি রামচন্দ্র ৷ কথায় বলে সময়ের সঙ্গে পাথরও গলে যায় ৷ কিন্তু রামচন্দ্রের রাগ পাথরকেও হার মনায় ৷ আজও প্রতিজ্ঞায় অনড় একালের রাম ৷