নয়াদিল্লি, 29 জুলাই: সশস্ত্র বাহিনীতে শৃঙ্খলা সেখানকার অন্তর্নিহিত বিষয়, এক্ষেত্রে ছাড়ের কোনও জায়গা নেই ৷ প্রাক্তন এক জওয়ানের দায়ের করা মামলার রায়ে এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট ৷ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন তথা সামারি কোর্ট মার্শাল হওয়া জওয়ানের মামলার রায়দান করে ৷ যেখানে প্রাক্তন ওই সেনাকে নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়া অতিরিক্ত ছুটিতে থাকার কারণে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছিল ৷ যার বিরুদ্ধে তিনি 25 বছর ধরে আইনি লড়াই চালাচ্ছিলেন ৷ কিন্তু, শুক্রবার শীর্ষ আদালত সেনার শৃঙ্খলা এবং দায়িত্ববোধের অভাবের যুক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে কোর্ট মার্শালের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিল ৷
জানা গিয়েছে, 25 বছর আগে 108 দিনের লম্বা ছুটি নেওয়ার কারণে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছিল সেপাই মদন প্রসাদকে ৷ অভিযোগ ছিল তিনি উপযুক্ত কোনও কারণ ছাড়াই এই দীর্ঘসময়ের ছুটি নিয়েছিলেন ৷ তাই তাঁকে সেনার পদ থেকে বরখাস্ত বা কোর্ট মার্শাল করা হয় ৷ তবে, মদন প্রসাদ বাহিনীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন ৷ সেখানে তাঁর যুক্তি ছিল, তাঁর অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি একবছরের কারাদণ্ড হতে পারে ৷ কিন্তু, তাঁকে বরখাস্ত করার শাস্তি দেওয়া যেতে পারে না ৷
এই ইস্যুতে দীর্ঘ 25 বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মদন প্রসাদ ৷ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তার রায় প্রদান করেছে ৷ যেখানে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল তাঁদের রায়ে একাধিকবার বাহিনীর শৃঙ্খলার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ৷ ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘মদন প্রসাদ একজন অভ্যাসগত অপরাধী ৷ আর নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা সশস্ত্র বাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ এই কাজের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা কোনও মতেই আপস করা যায় না ৷ আর আবেদনকারী যে বিশৃঙ্খলার পরিচয় দিয়েছেন, তা কখনই একজন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের জন্য ক্ষমার যোগ্য নয় ৷’’
আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট কোটায় সংরক্ষণের সুবিধা পেতে পারে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
ডিভিশন বেঞ্চ এই ইস্যুতে এমনও মন্তব্য করে যে, ‘‘মদন প্রসাদ প্রায়শই লাইনের বাইরে ছুটিতে থাকতেন ৷ আর পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ 108 দিনের ছুটিতে ছিলেন ৷ এর পরেও যদি তাঁর ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার ক্ষেত্রে ভুল বার্তা বহন করবে ৷ প্রত্যেককে এটা মনে রাখতে হবে যে, সশস্ত্র বাহিনীতে শৃঙ্খলা অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং কোনও পরিস্থিতিতেই এর সঙ্গে আপস করা যায় না ৷’’