বেঙ্গালুরু, 28 নভেম্বর: বিয়ে হওয়ার অর্থ এটা নয় যে, নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার গ্রাস হয়ে যাবে ৷ আধার আইন, 2016-তে তাই বলা আছে ৷ এমনই পর্যবেক্ষণ কর্ণাটক হাইকোর্টের ৷ বিচারপতি এস সুনীল দত্ত যাদব এবং বিজয়কুমার এ পাতিলের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ও এফএএ সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারের দায়ের করা আপিলের শুনানি ও নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার এ কথা বলেছে ৷ একজন মহিলা তাঁর স্বামীর আধার তথ্য জানতে চেয়ে আপিল করায় তাঁর পক্ষে নির্দেশ দিয়েছিল আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চ ৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করা হয়েছিল ৷ সেই আপিলের প্রেক্ষিতে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে খারিজ করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ ৷
আধার আইন 2016-এর 33 নং ধারার অধীনে বলা আছে যে, বিয়ে হলে তা নাগরিকের পদ্ধতিগত অধিকারকে বাতিল করে না । আদালতের মতে, বিবাহের মাধ্যমে সম্পর্ক হল দুই অংশীদারের মিলন । তবে তা গোপনীয়তার অধিকারকে গ্রাস করে না, যা একজন ব্যক্তির অধিকার এবং এই ধরনের ব্যক্তির অধিকারের স্বায়ত্তশাসন আইনের 33 নং ধারার অধীনে স্বীকৃত এবং সুরক্ষিত । বিয়ে আধার আইনের 33 ধারার অধিকার কেড়ে নেয় না । এই প্রেক্ষাপটে ডিভিশন বেঞ্চ একক সদস্যের বেঞ্চকে মামলাটি নতুন করে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে এবং স্বামীকে বিবাদী করার পরামর্শ দিয়েছেন আদালত ।
স্বামীর আধার কার্ডের তথ্যের জন্য আবেদন করেছিলেন স্ত্রী । হুবলির বাসিন্দা ওই মহিলা 2005 সালের নভেম্বরে বিয়ে করেন । এই দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছে । পারিবারিক আদালত মামলা দায়েরকারী মহিলাকে 10,000 টাকা এবং কন্যাসন্তানকে 5,000 টাকা ভরণপোষণের খরচ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বামীকে । স্বামীর হদিশ না মেলায় আদালতের আদেশ কার্যকর হয়নি । এই অবস্থায় ওই মহিলা তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে ইউআইডিএআই-এর দ্বারস্থ হন ।
ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষ 2021 সালের 25 ফেব্রুয়ারি স্ত্রীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে যে, স্বামীর আধার কার্ডের তথ্য প্রকাশ করা যাবে না । আধার আইনের 33 ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । এরপর এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা । আদালত স্বামীকে একটি নোটিশ জারি করে এবং ইউআইডিএআই-কে 2023 সালের 8 ফেব্রুয়ারির মধ্যে মহিলার আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দেয় ।
এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে, আধার কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় বেঞ্চে একটি আপিল দায়ের করে, যেখানে বলা হয়ে যে আধার আইনের 33 (1) ধারা মেনে চলা বাধ্যতামূলক । যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী হাইকোর্টের বিচারপতির আদেশের পরই তথ্য প্রকাশ করা যাবে । স্ত্রীর পক্ষের আইনজীবী বলেন, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত হবে । দম্পতিদের একজনের কাছ থেকে অন্যের তথ্য জানাতে আপত্তি নেই । এটি দাবি করা হয়েছিল যে তৃতীয় পক্ষ যখন তথ্য চান, তখন বিধিনিষেধ আরোপ তাত্ক্ষণিক ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় । তবে তাঁর এই দাবি মানেনি আদালত ৷
আরও পড়ুন: