কুলতলি, 8 জানুয়ারি: অবশেষে জঙ্গলে ফিরে গেল দক্ষিণরায়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে এমনটাই জানালেন মুখ্য বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী ৷ তিনি জানিয়েছেন, উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গল থেকে মাকড়ি নদী পেরিয়ে আজমলমারি 11 গভীর জঙ্গলে বাঘ ফিরে গিয়েছে ৷
সোমবার সকালে দক্ষিণ 24 পরগনার কুলতলি ব্লকের অন্তর্গত মৈপীঠের কিশোরী মোহনপুর গ্রামের শ্রীকান্তপল্লি এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া যায় ৷ নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকার মৎস্যজীবীরা ৷ খবরটি জানাজানি হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম । বাঘের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন বনকর্মীরা ৷
মঙ্গলবার সকালে অবস্থান বদলে উত্তর-পূর্বে সরে যায় সুন্দরবনের সেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বাঘ । উত্তর জগদ্দল লাগোয়া নদীর ধারে পায়ের ছাপ দেখে তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন বনকর্মীরা ৷ এরপর নতুন করে প্রায় 1 কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু করেন তাঁরা । বাঘ ধরতে শুরু হয় খাঁচা বসানোর তোড়জোড়ও । লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা । জঙ্গলের পাশেই তাদের বসবাস। রুটি–রুজির জন্য তাদের জঙ্গলেও যেতে হয় । যদিও এলাকায় বাঘের উপস্থিতির টের পেয়ে জঙ্গলে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷
এরপর দক্ষিণ বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি টের পান বনকর্মীরা। বনদফতরের কর্মীরা জঙ্গলটিকে জাল দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু করলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বাঘ । প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে পৌঁছে যায় সে । এরপর সেই জঙ্গলে বাঘ ধরার তোড়জোড় শুরু করেন বনকর্মীরা ৷ জঙ্গলে খাঁচাও পাতা হয় । টোপ হিসেবে ছাগলও রাখা হয় । কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি ৷
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঘটিকে গভীর জঙ্গলে ফেরাতে একাধিকবার শব্দবাজি ফাটানো হয় । নদীতে সেই সময় ভাটা ছিল । তখনই বাঘ নদী পেরিয়ে চলে গিয়েছে বলে মনে করছেন বনকর্মীরা । বুধবার সকালে জলপথে ও জালঘেরা অংশে তল্লাশি চালিয়ে বাঘের হদিস পাওয়া যায়নি । তবে উত্তর বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আজমলমারির জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার বাঘের ছাপ পাওয়া গিয়েছে । আর সেটি দেখেই নিশ্চিত হয় বনদফতর ৷
বনকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, ক্ষুধার্ত থাকার কারণে বাঘটি লোকালয়ে চলে এসেছিল । যদিও গ্রামবাসীদের দাবি, একটি মৃত গবাদি পশুকে নদীর পাড়ে ফেলা হয়েছিল । সম্ভবত সেই টানেই গ্রামে ঢুকে পড়েছিল বাঘটি । অবশেষে জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে সে ।