কলকাতা, 1 নভেম্বর : গড়িয়াহাটের কাকুলিয়া রোডের জোড়া খুনকাণ্ডে গ্রেফতার প্রধান অভিযুক্ত ভিকি হালদার ও তার সঙ্গী শুভঙ্কর মণ্ডল ৷ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মুম্বই থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে ৷ অভিযোগ, কর্পোরেট সংস্থার কর্তা সুবীর চাকি এবং তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুন করে ভিকি হালদার ৷ এই অপরাধের মূল চক্রী ছিল ভিকির মা মিঠু হালদার , সুবীর চাকির বাড়ির পরিচারিকা ৷ এই ঘটনায় পুলিশ আগেই 4 জনকে গ্রেফতার করেছে ৷
তদন্তকারী পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সঞ্জয় মণ্ডলের সঙ্গে শেষ কথাই কাল হয়েছে ভিকির । কারণ শেষবারের মত সঞ্জয় মণ্ডলকেই সে মুম্বইয়ের একটা আভাস দিয়েছিল । সেখান থেকেই সূত্র টেনে গোটা ঘটনার যবনিকাপাত করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।
আরও পড়ুন : Gariahat Double Murder : গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে গ্রেফতার আরও 1
গড়িয়াহাট জোড়া খুনের ঘটনায় কিছুতেই খোঁজ মিলছিল না মূল অভিযুক্ত ভিকির ৷ কোনও সূত্রই কাজে আসছিল না ৷ ফলে একাধিক জেলায় চলছিল তল্লাশি । কিন্তু গোয়েন্দাদের কথায় আছে, ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে সব থেকে বড় বুদ্ধিমান আততায়ীরাও কোনও না কোনও সূত্র ছেড়েই যায় । গড়িয়াহাট জোড়া খুনকাণ্ডেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে ।
লালবাজার সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার পরেই ১৮ অক্টোবর ভিকি ডায়মন্ডহারবার থেকে মুম্বইয়ে চলে যায় । এই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় মণ্ডলকে শেষবারের মত ভিকি হালদার বলেছিল 'লুকিয়ে থাক। পড়ে মুম্বইয়ের দিকে ডেকে নেব ।' কিন্তু সঞ্জয়ও গ্রেফতার হয় । তাকে জেরা করেই গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভিকি তাকে মুম্বইয়ের কথা বলেছিল । সেই মতো মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে লালবাজার । এরপরেই খোঁজ শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এর একটি বিশেষ দল ৷ মুম্বইয়ের কালাচৌকি থানা এলাকার একটি অভিজাত আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ শুরু করে দিয়েছিল ভিকি ও শুভঙ্কর মণ্ডল। সেখান থেকেই তাদের সাদা পোশাকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ । পরে তাদের আদালতে পেশ করা হলে ভিকি ও শুভঙ্করকে 3 নভেম্বর পর্যন্ত ট্রানজিট রিমান্ডে পায় লালবাজারের গোয়েন্দারা ।
![Gariahat Double Murder Case](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/13522330_wb_gariahat.jpg)
লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতায় আনার পর আলিপুর পুলিশ আদালতে তাদের পেশ করা হবে ৷ সেখানে পুলিশ তাদের নিজেদের হেফাজতে চাইবে পরবর্তী তদন্তের জন্য ৷ সূত্রের খবর, ভিকিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে পারে পুলিশ ৷ সেখানে ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হবে ৷ প্রসঙ্গত, গড়িয়াহাটের কাকুলিয়া রোডে কর্পোরেট সংস্থার কর্তা সুবীর চাকি এবং তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুনের অভিযোগে আগেই 4 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ধৃতদের মধ্যে একজন হল মূল অভিযুক্ত তথা মূল চক্রান্তকারী ভিকির মা মিঠু হালদার ৷ বাকি 3 অভিযুক্ত সঞ্জয় মণ্ডল, জাহির গাজি এবং বাপি মণ্ডল ৷
আরও পড়ুন : Gariahat Double Murder : ক্রাইম থ্রিলার দেখে ট্রেনিং, এখনও পলাতক অভিযুক্ত ভিকি হালদার
সম্প্রতি গড়িয়াহাট থানা এলাকার কাকুলিয়া রোডের একটি বাড়িতে কর্পোরেট সংস্থার এক কর্তা সুবীর চাকি এবং তাঁর গাড়ির চালকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় ৷ দু’জনের গলায় গভীর ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল ৷ এই ঘটনায় গড়িয়াহাট থানার পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তে নামে ৷ প্রথমে ভিকির মা মিঠু হালদারকে জেরা করে আরও দুই অভিযুক্ত জাহির গাজি এবং বাপি মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷