পাথানামথিত্তা (কেরল) , 11 নভেম্বর: নাবালিকাকে যৌন হেনস্তা করার দায়ে এক ব্যক্তিকে 109 বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল নিম্ন আদালত ৷ এর সঙ্গে ওই নাবালিকাকে 6 লক্ষ 25 হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ এই টাকা না দিতে পারলে দোষীকে আরও 3 বছর 2 মাস কারাবাস করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত ৷ ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের পাথানামথিত্তা জেলায় ৷
নির্যাতিতা নাবালিকাকে দত্তক নিয়েছিল থমাস স্যামুয়েল (63) নামে এক প্রৌঢ় ৷ 12 বছরের ওই নাবালিকাকে নিজের কাছে রেখে দিনের পর দিন তার উপর যৌন হেনস্তা চালায় সে ৷ পরে নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদুর ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশ্যাল কোর্টে অপরাধ প্রমাণিত হলে নিম্ন আদালত তাকে 109 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং 6 লক্ষ 25 হাজার টাকা জরিমানা করে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা এবং তার ভাই রাস্তায় তাদের ঠাকুমার সঙ্গে থাকছিল ৷ শৈশবেই তাদের বাবা-মা তাদের ছেড়ে চলে যায় ৷ ভাই-বোনকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে দ্য চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি তাদের দায়িত্বভার নেয় ৷ তিরুভাল্লার একটি পরিবার নাবালককে দত্তক নেয় ৷ আর নাবালিকার দায়িত্ব নেয় থমাস ৷ প্রৌঢ় থমাস স্যামুয়েল এবং তার স্ত্রীর কোনও সন্তান না-থাকায় তারা মেয়েটিকে নিজেদের কাছে রাখে ৷
এই সুযোগে প্রৌঢ় স্যামুয়েল ওই নাবালিকাকে এক বছর ধরে লাগাতার যৌন নির্যাতন করতে থাকে ৷ এদিকে নাবালিকা মালায়লম ভাষা না-জানায় ঘটনাটি কাউকে খুলে বলতে পারেনি ৷ এছাড়া তার পালক-পিতা তাকে হুমকি দিয়েছিল, কোনও ভাবে ঘটনার কথা জানাজানি হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে ৷ তাই প্রাণের ভয়েও নাবালিকা চুপ করেছিল ৷
এর মধ্যে নাবালিকার পালক-মা দুর্ঘটনার শিকার হন ৷ তিনি স্কুটার থেকে পড়ে যান এবং চোট পান ৷ এই অবস্থায় ওই নাবালিকাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে ফিরিয়ে দেয় পালক দম্পতি ৷ অন্যদিকে, নির্যাতিতা নাবালিকার ভাইকে যে পরিবার দত্তক নিয়েছিল, তারাই এই নাবালিকার দায়িত্বভার নেয় ৷ এই পরিবারে পালক-মায়ের কাছে ওই নাবালিকা তার উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি খুলে বলে ৷ এরপর ওই পরিবারটি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করে ৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা, পকসো আইন এবং জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের আওতায় প্রৌঢ় দোষী প্রমাণিত হয় ৷ আদুর ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশ্যাল কোর্ট ওই প্রৌঢ়কে দীর্ঘদিনের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয় ৷
আরও পড়ুন: