নয়াদিল্লি, 15 নভেম্বর: মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটানো হয়েছে বটে । কিন্তু শাসনকার্য চলছে সেই চিরাচরিত রাস্তাতেই । তাতে বদল আনতে এবার কার্যত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাস্তাই ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । 2024-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতার ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির আদলেই মানুষের কাছে সরকারের যাবতীয় পরিকল্পনা এবং পরিষেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হলেন মোদি ৷
এর জন্য তরুণ পেশাদার লোকজন এবং অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে ৷ প্রযুক্তিগত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে সরকারের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং বিভিন্ন প্রকল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবে তারা ৷
এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে দেশের 77টি মন্ত্রককে 8টি গোষ্ঠীতে ভাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । প্রত্যেক মন্ত্রকের জন্য তরুণ পেশাদার লোকজন নিয়োগ করা হবে, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যাঁরা মন্ত্রকের কাজকর্মে স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন এবং মানুষের কাছে সরকারকে আরও কার্যকরী করে তুলতে সাহায্য করবেন । মন্ত্রিসভার সকল সদস্যও এই উদ্যোগে শামিল হবেন ।
সমস্ত মন্ত্রককে যে 8টি গোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে সম্প্রতি এক এক করে বৈঠক করেন মোদি । প্রত্যেক বৈঠকই প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে । এখনও পর্যন্ত পাঁচ দফায় এমন বৈঠক হয়েছে, যেখানে ব্যক্তিগত দক্ষতা, প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন, মন্ত্রকের কাজকর্ম পরিচালনা, সরকারি প্রকল্পে মানুষের যোগদান বাড়ানো, রাজনৈতিক সমন্বয়, তথ্যের আদান-প্রদান এবং সংসদীয় পদ্ধতিতে কার্যপরিচালনার মতো বিষয় নিয়ে বিশদে আলোচনা হয় ।
লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুও মোদির ডাকা এই বৈঠকে যোগ দেন । দক্ষতার সঙ্গে কেন্দ্র যাতে মানুষের কাছে সবরকম পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারে, তা নিয়েই আলোচনা হয় সেখানে । শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বাস্তব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে মানুষের মধ্যে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো যায়, তা নিয়ে পরামর্শ চাওয়া হয় ।
দিল্লি সূত্রে খবর, এই 8টি গোষ্ঠীর এক একটিতে 8 থেকে 10 করে মন্ত্রক রয়েছে ৷ তার মাথায় রয়েছেন একজন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, যিনি ওই গোষ্ঠীর আহ্বায়কের ভূমিকায় থাকবেন ৷ প্রত্যেক মন্ত্রকের ওয়েবপোর্টালে গত সাত বছরের কাজকর্মের রেকর্ড তুলে ধরা হবে ৷ কেন্দ্রের নিজস্ব প্রকল্প, সাম্প্রতিক কালে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, আগামী পরিকল্পনা এবং মন্ত্রকের বৈঠক সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য থাকবে । শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের পরিষেবা জেলাস্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে কি না, তুলে ধরা হবে সেই সংক্রান্ত বিশদ তথ্যও ।
আরও পড়ুন: Kangana Ranaut : মোদি-মোহাচ্ছন্নতাই কি পদ্মশ্রী পাওয়ার মাপকাঠি, প্রশ্ন তুললেন সুজন
প্রত্যেক গোষ্ঠীকে জনসংযোগ এবং গবেষণার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কমপক্ষে 3 জন করে পেশাদার লোক নিয়োগ করে বিশেষ টিম গড়ে তুলতে হবে । পোর্টালগুলিতে সাধারণ মানুষ এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের দাবিদাওয়া এবং অভাব-অনুযোগ জানানোর বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে, যাতে সরাসরি মানুষের নাড়ি বুঝতে পারে সরকার । এখনও পর্যন্ত যে পাঁচ দফার বৈঠক হয়েছে, তাতে পাঁচ গোষ্ঠীর মাথায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী, নরেন্দ্র সিং তোমর, পীযূষ গয়াল, ধর্মেন্দ্র প্রধান, স্মৃতি ইরানি এবং অনুরাগ ঠাকুর ।