ETV Bharat / bharat

মনে হচ্ছে আপনারা চাইছেন মানুষ মারা যাক, কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা দিল্লি হাইকোর্টের - করোনাভাইরাস

করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় রেমডেসিভির প্রয়োগ নিয়ে নতুন নীতির কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ তারই তীব্র সমালোচনা করে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করল দিল্লি হাইকোর্ট ৷

রেমডেসিভির ইনজেকশন
রেমডেসিভির ইনজেকশন
author img

By

Published : Apr 29, 2021, 11:31 AM IST

Updated : Apr 29, 2021, 12:40 PM IST

নিউ দিল্লি, 29 এপ্রিল : মনে হচ্ছে আপনারা চাইছেন মানুষ মরে যাক, বললেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিং ৷ বুধবার করোনা রোগের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় সরকারের রেমডেসিভির ব্যবহারের নীতির সমালোচনা করে একথা বলেন তিনি ৷

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, যে সব করোনা রোগীদের অক্সিজেন দেওয়া হবে, কেবলমাত্র তাদেরই রেমডেসিভির ইনজেকশন প্রয়োগ করা হবে ৷ করোনা চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেমডেসিভির ৷ সেই ওষুধের নীতির এমন পরিবর্তনে রীতিমতো কেন্দ্রকে তুলোধনা করে তিনি আরও বলেন, "এটা ভুল ৷ একেবারেই মানবিক দিক দিয়ে ভাবছেন না ৷ এবার যে সব রোগী অক্সিজেন পাচ্ছেন না, তাঁরা রেমডেসিভিরও পাবেন না ৷"

এদিন দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, কোনো মেডিক্যাল কমিটি রেমডেসিভিরের ব্যবহার নিয়ে এই নীতির পর্যালোচনা করবে কি না, সে বিষয়ে পরে জানাবে কোর্ট ৷

"অভাব কমাতে প্রোটকল পরিবর্তন করবেন না ৷ এটা ভুল ৷ এর ফলে চিকিৎসকরাও কোনো রোগীকে রেমডেসিভির ইনজেকশন প্রেসক্রাইব করতে পারবেন না ৷ আর এটা সম্পূর্ণ অব্যবস্থা", দিল্লি সরকারকে জানায় কোর্ট ৷

এদিন কোভিড-19 আক্রান্ত এক আইনজীবী তাঁর প্রয়োজনীয় ছ'টি রেমডেসিভির ইনজেকশনের বদলে মাত্র তিনটি পান ৷ এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি ৷ সেই মামলার শুনানি চলাকালীন এই মন্তব্য করেন বিচারপতি প্রতিভা এম সিং ৷

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোর্টে জানানো হয় 27 এপ্রিল অবধি দিল্লির জন্য বরাদ্দ 72,000-এর মধ্যে 52,000 ভায়াল ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে ৷ আর প্রকৃত সংক্রমণের সংখ্যা অনুযায়ী এই বরাদ্দ ঠিক করা হয়েছে ৷ যদিও দিল্লির জন্য এই বরাদ্দ অত্যন্ত কম বলে জানায় কোর্ট ৷

আরও পড়ুন: সরকারি নির্দেশিকা নয়, ভুল করে ব্লক হয়েছিল ‘#রিজাইন মোদি’, দাবি ফেসবুকের

এমনকি একজন সাংসদ দিল্লি থেকে 10,000 টি ভায়াল সংগ্রহ করে তা কোনো চার্টার্ড ফ্লাইটে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে পাঠিয়ে সেখানে বণ্টনের ব্যবস্থা করতে পারেন ৷ এই পদ্ধতির সমালোচনা করে কোর্ট জানায়, "এটা অত্যন্ত খারাপ, বিবেকহীন ৷ এই 10,000 ভায়াল দিল্লির রোগীরাই পেতে পারত ৷" আগামী দিনে উৎপাদন বাড়লে বরাদ্দ বাড়ে, কেন্দ্রকে সেই নির্দেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট ৷

এই প্রসঙ্গে দিল্লি সরকার 52,000 রেমডেসিভির ইনজেকশনের বদলে 2500 টি ভায়াল পেয়েছে বলে জানায় দিল্লি সরকারের আইনজীবী অনুজ আগরওয়াল ৷ আর বাকি ইনজেকশন প্রাইভেট হাসপাতাল আর রোগীদের খোলা বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ তবে, ভ্যাকসিনের এই খোলা বাজারে বণ্টনকে সামনে রেখে দিল্লি সরকার পোর্টালের ব্যবস্থা করেছে ৷ একমাত্র এখানে নথিভুক্তিকরণের মাধ্যমেই হাসপাতালগুলি এই ওষুধ পাবে ৷

এই পদ্ধতির সঙ্গেও একমত হয়নি কোর্ট ৷ এর কারণ হিসেবে কোর্ট জানায়, এমন হতেই পারে যে বেডের অভাবে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেনি, বাড়িতেই চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে, অথচ সেই রোগীর এই ইনজেকশনের দরকার, সে ক্ষেত্রে এই দরকারি ওষুধটি কেউ কী ভাবে পাবে ৷ এর সমাধানে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, বরং রোগী বা তাঁর আত্মীয় এই পোর্টালে ওষুধের আবেদন জানিয়ে পরে টাকা দিয়ে ওষুধটি কিনে নেবেন হাসপাতাল থেকে ৷

যদি হাসপাতাল পুরো বিষয়টির পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তাহলে 50 শতাংশ রোগী এই রেমডেসিভির ইনজেকশন পাবে ৷ কিন্তু এই পদ্ধতির মাধ্যমে 90 শতাংশ রোগীই যাঁদের রেমডেসিভির প্রয়োজন, তাঁদের ইনজেকশন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে ৷

কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী পোর্টালটিকে তৈরি না করা অবধি এই পোর্টালের প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট ৷

তবে, শেষমেশ কোর্টের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার রাতেই বাকি রেমডেসিভির ভায়ালগুলি পান ওই আইনজীবী, যাঁর জন্য এত তথ্য সামনে এল কোর্টের ৷

দেশে বহু কোম্পানি লক্ষ লক্ষ ইনজেকশন তৈরি করছে, আর প্রচুর পরিমাণে দেশের বাইরেও পাঠানো হচ্ছে ৷ এবিষয়ে কোর্টের আক্ষেপ, "কিন্তু আমরা নিজের দেশের রোগীকেই যথেষ্ট পরিমাণে এই ওষুধ দিতে পারছি না ৷"

নিউ দিল্লি, 29 এপ্রিল : মনে হচ্ছে আপনারা চাইছেন মানুষ মরে যাক, বললেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিং ৷ বুধবার করোনা রোগের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় সরকারের রেমডেসিভির ব্যবহারের নীতির সমালোচনা করে একথা বলেন তিনি ৷

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, যে সব করোনা রোগীদের অক্সিজেন দেওয়া হবে, কেবলমাত্র তাদেরই রেমডেসিভির ইনজেকশন প্রয়োগ করা হবে ৷ করোনা চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেমডেসিভির ৷ সেই ওষুধের নীতির এমন পরিবর্তনে রীতিমতো কেন্দ্রকে তুলোধনা করে তিনি আরও বলেন, "এটা ভুল ৷ একেবারেই মানবিক দিক দিয়ে ভাবছেন না ৷ এবার যে সব রোগী অক্সিজেন পাচ্ছেন না, তাঁরা রেমডেসিভিরও পাবেন না ৷"

এদিন দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, কোনো মেডিক্যাল কমিটি রেমডেসিভিরের ব্যবহার নিয়ে এই নীতির পর্যালোচনা করবে কি না, সে বিষয়ে পরে জানাবে কোর্ট ৷

"অভাব কমাতে প্রোটকল পরিবর্তন করবেন না ৷ এটা ভুল ৷ এর ফলে চিকিৎসকরাও কোনো রোগীকে রেমডেসিভির ইনজেকশন প্রেসক্রাইব করতে পারবেন না ৷ আর এটা সম্পূর্ণ অব্যবস্থা", দিল্লি সরকারকে জানায় কোর্ট ৷

এদিন কোভিড-19 আক্রান্ত এক আইনজীবী তাঁর প্রয়োজনীয় ছ'টি রেমডেসিভির ইনজেকশনের বদলে মাত্র তিনটি পান ৷ এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি ৷ সেই মামলার শুনানি চলাকালীন এই মন্তব্য করেন বিচারপতি প্রতিভা এম সিং ৷

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোর্টে জানানো হয় 27 এপ্রিল অবধি দিল্লির জন্য বরাদ্দ 72,000-এর মধ্যে 52,000 ভায়াল ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে ৷ আর প্রকৃত সংক্রমণের সংখ্যা অনুযায়ী এই বরাদ্দ ঠিক করা হয়েছে ৷ যদিও দিল্লির জন্য এই বরাদ্দ অত্যন্ত কম বলে জানায় কোর্ট ৷

আরও পড়ুন: সরকারি নির্দেশিকা নয়, ভুল করে ব্লক হয়েছিল ‘#রিজাইন মোদি’, দাবি ফেসবুকের

এমনকি একজন সাংসদ দিল্লি থেকে 10,000 টি ভায়াল সংগ্রহ করে তা কোনো চার্টার্ড ফ্লাইটে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে পাঠিয়ে সেখানে বণ্টনের ব্যবস্থা করতে পারেন ৷ এই পদ্ধতির সমালোচনা করে কোর্ট জানায়, "এটা অত্যন্ত খারাপ, বিবেকহীন ৷ এই 10,000 ভায়াল দিল্লির রোগীরাই পেতে পারত ৷" আগামী দিনে উৎপাদন বাড়লে বরাদ্দ বাড়ে, কেন্দ্রকে সেই নির্দেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট ৷

এই প্রসঙ্গে দিল্লি সরকার 52,000 রেমডেসিভির ইনজেকশনের বদলে 2500 টি ভায়াল পেয়েছে বলে জানায় দিল্লি সরকারের আইনজীবী অনুজ আগরওয়াল ৷ আর বাকি ইনজেকশন প্রাইভেট হাসপাতাল আর রোগীদের খোলা বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ তবে, ভ্যাকসিনের এই খোলা বাজারে বণ্টনকে সামনে রেখে দিল্লি সরকার পোর্টালের ব্যবস্থা করেছে ৷ একমাত্র এখানে নথিভুক্তিকরণের মাধ্যমেই হাসপাতালগুলি এই ওষুধ পাবে ৷

এই পদ্ধতির সঙ্গেও একমত হয়নি কোর্ট ৷ এর কারণ হিসেবে কোর্ট জানায়, এমন হতেই পারে যে বেডের অভাবে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেনি, বাড়িতেই চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে, অথচ সেই রোগীর এই ইনজেকশনের দরকার, সে ক্ষেত্রে এই দরকারি ওষুধটি কেউ কী ভাবে পাবে ৷ এর সমাধানে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, বরং রোগী বা তাঁর আত্মীয় এই পোর্টালে ওষুধের আবেদন জানিয়ে পরে টাকা দিয়ে ওষুধটি কিনে নেবেন হাসপাতাল থেকে ৷

যদি হাসপাতাল পুরো বিষয়টির পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তাহলে 50 শতাংশ রোগী এই রেমডেসিভির ইনজেকশন পাবে ৷ কিন্তু এই পদ্ধতির মাধ্যমে 90 শতাংশ রোগীই যাঁদের রেমডেসিভির প্রয়োজন, তাঁদের ইনজেকশন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে ৷

কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী পোর্টালটিকে তৈরি না করা অবধি এই পোর্টালের প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট ৷

তবে, শেষমেশ কোর্টের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার রাতেই বাকি রেমডেসিভির ভায়ালগুলি পান ওই আইনজীবী, যাঁর জন্য এত তথ্য সামনে এল কোর্টের ৷

দেশে বহু কোম্পানি লক্ষ লক্ষ ইনজেকশন তৈরি করছে, আর প্রচুর পরিমাণে দেশের বাইরেও পাঠানো হচ্ছে ৷ এবিষয়ে কোর্টের আক্ষেপ, "কিন্তু আমরা নিজের দেশের রোগীকেই যথেষ্ট পরিমাণে এই ওষুধ দিতে পারছি না ৷"

Last Updated : Apr 29, 2021, 12:40 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.