নয়াদিল্লি, 30 নভেম্বর: কংগ্রেস গুজরাতে (Gujarat Elections 2022) তার "নীরব" প্রচারের (Congress silent campaign) প্রথম পরীক্ষার দোরগোড়ায় ৷ বুধবার দলের পর্যবেক্ষকদের 182টি বিধানসভা আসনের মধ্যে 89টিতে বুথে ভোটগ্রহণের উপর জোর দিতে বলা হয়েছে ৷ এই আসনগুলিতেই ভোটগ্রহণ হতে চলেছে প্রথম দফায়, অর্থাৎ 1 ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার ৷
গুজরাতের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি-র সম্পাদক বিএম সন্দীপ কুমার ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমরা দলের পর্যবেক্ষকদের শুধু বুথ পরিচালনায় মনোযোগ দিতে বলেছি এবং বাকি সব ভুলে যেতে বলেছি ।" পশ্চিমী রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে এআইসিসি-র দল এবং রাজ্য স্তরের পর্যবেক্ষকরা প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ ভোটারদের সংঘবদ্ধ করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে কংগ্রেস দ্বারা গঠিত বুথ-স্তরের এই পর্যবেক্ষকরা ভোটকেন্দ্রগুলি পরিচালনা করবেন । প্রথম দফার ভোটে যে 89টি আসনে ভোট হতে চলেছে, তার বেশিরভাগই সৌরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাত অঞ্চলের মধ্যে পড়ে এবং দ্বিতীয় দফায় 5 ডিসেম্বর যে বাকি 93টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে সেই আসনগুলি উত্তর ও মধ্য গুজরাতে পড়ে ৷ প্রবীণ রাজ্য নেতা সিদ্ধার্থ প্যাটেল বলেন, "আমরা এ বার একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করেছি । বুথ পর্যায়ের দল গঠন করা হয় । নীরব প্রচারের অর্থ হল, বড় সমাবেশের চেয়ে ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল । গত কয়েক মাস ধরে আমাদের কর্মীরা রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছেছেন ৷"
এআইসিসির অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের মতে, ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগকে পাখির চোখ করে নীরব প্রচারাভিযানটি আগের 2017 সালের নির্বাচনী প্রচারের সময়ের ফাঁক ঢাকতে শুরু করা হয়েছিল ৷ আগেরবার ক্ষমতাসীন বিজেপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানালেও সরকার গঠন করতে পারেনি কংগ্রেস । গত কয়েক মাস ধরে জন মিত্রের নেতৃত্বে স্থানীয় দলগুলি বাড়ি বাড়ি ঘুরেছে ৷ এআইসিসি এবং রাজ্য স্তরের পর্যবেক্ষকরা নিয়মিতভাবে ফিডব্যাক নিয়ে চলেছেন ৷ প্যাটেলের কথায়, "ইতিবাচক ফিডব্যাক মিলেছে । ভোটাররা প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পেলেও আগামিকাল ভোটের মাধ্যমে নিজেদের মত প্রকাশ করবেন । আমাদের বুথ-স্তরের দলগুলি সর্বাধিক ভোটদান নিশ্চিত করবে ৷"
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই ভোট মোদি-রাজ্যে, লড়াইয়ে 152 মুসলিম প্রার্থী
গুজরাতের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি সেক্রেটারি ঊষা নাইডু ইটিভি ভারতকে বলেছেন, "আমরা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছি এবং মানুষ সত্যিই পরিবর্তন চায় । গত কয়েকদিন ধরেই তা দৃশ্যমান । বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডা বরোদায় এসেও সমাবেশ করতে পারেননি । বিজেপির অনেক সমাবেশ হয়েছে যেখানে লোকজন আসেনি ৷"
2017 সালের নির্বাচনের সঙ্গে 1 ডিসেম্বরের প্রথম ধাপের ভোটের মধ্যে তুলনা করে কংগ্রেস কৌশলীরা বলছেন যে, তাঁদের দল সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে ভালো করেছে কিন্তু দক্ষিণ গুজরাত অঞ্চলে এতটা ভালো হয়নি ফল, যে অঞ্চলগুলিতে উপজাতি অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রই বেশি । ফলস্বরূপ দক্ষিণ গুজরাতে দলের শীর্ষ নেতারা বেশি মনোযোগ দিয়েছেন ৷ রাহুল গান্ধি এবং দলের জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে উভয়েই সেখানে জনসভা করেছেন ৷ প্যাটেল বলেন, "খাড়গের সাম্প্রতিক মেহসানা সমাবেশে, জনসাধারণের জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করতে আমাদের সমস্যা হয়েছিল কারণ ভিড় আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিল । আমরা এ বার দক্ষিণ গুজরাতে ভালো ফল করব ৷" গুজরাত নির্বাচন কংগ্রেসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ গত 27 বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে তারা ৷
এআইসিসির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা রঘু শর্মার নেতৃত্বাধীন দলের পাশাপাশি এআইসিসির একজন বিশেষ পর্যবেক্ষক তথা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত বৃহস্পতিবার ভোটদানের উপর নজর রাখবেন । প্যাটেল বলেছেন, "বিজেপি সরকারি যন্ত্রের অপব্যবহার করছে । তাদের প্রভাবে কিছু নিউজ চ্যানেল সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ওপিনিয়ন পোল করেছে ৷"
ভোটের এক দিন আগে কংগ্রেস বুধবার গুজরাতের মডেল পোল কোডের লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় ৷