কোরবা (ছত্তিশগড়), 29 অগস্ট: প্লাস্টিকে মুড়ে ছেলের মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে গেলেন খোদ বাবা ৷ এমনই ভিডিয়ো সামনে এসেছে ৷ দেড় বছরের শিশুসন্তানের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে ৷ এর জন্য হাসপাতাল থেকে কোনও অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনও সুবিধে পাননি তিনি ৷ তাই দেহটি প্লাস্টিকে ঢেকে সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিয়ে গেলেন বাবা ৷ ঘটনা ছত্তিশগড়ের কোরবা জেলায় ৷
কোরবার আড়সেনা গ্রামের বাসিন্দা দরস রাম যাদব ৷ তিনি তাঁর স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকেন ৷ এখানে চাষবাস করে জীবন চালান ৷ চাষের কাজে দরসের স্ত্রী তাঁর দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে খামারে যান ৷ মা চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ৷ হঠাৎ শিশুটি খেলতে খেলতে খামারের পাশের পুকুরের দিকে চলে যায় ৷ মায়ের খেয়াল হওয়ার আগেই পুকুরে ডুবে যায় শিশুটি ৷
ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন পুকুরে শিশুটির তল্লাশি চালায় ৷ শিশুটির দেহ খুঁজে পাওয়া যায় ৷ তার কোনও জ্ঞান ছিল না ৷ সেই অবস্থায় শিশুটিকে লেমরু প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে ৷ শিশুটির ময়নাতদন্ত করার কথাও বলা হয় ৷
আরও পড়ুন: ওঝার কেরামতিতে মৃত্যু শিশুর, সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ 2
জেলা সদর থেকে আড়সেনা গ্রাম 70 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ৷ বাবা দরস রাম যাদব প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকদের কাছে ময়নাতদন্তের কথা জানান ৷ তিনি একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ করেন ৷ কিন্তু হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, অ্যাম্বুলেন্স নেই ৷ নিজেকেই ব্যবস্থা করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ৷
একদিকে দেড় বছরের শিশুর মৃতদেহ, অন্যদিকে তার ময়নাতদন্তের চাপ ৷ অসহায় বাবা তখন কোনও উপায় না পেয়ে শিশুর শবদেহ একটি পলিথিনে মুড়িয়ে নেন ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক বন্ধু ৷ তাঁর বাইকে চেপেই ময়নাতদন্ত করতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দিকে রওনা দেন দরস রাম যাদব ৷
বাবা দরস রাম যাদব বলেন, "জলে ডুবে আমার শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷ চিকিৎসকরা ময়নাতদন্তের কথা বলেন ৷ কিন্তু কাছের হাসপাতাল জানিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স নেই ৷ তাই বাইকে করে নিজের সন্তানের মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছি ৷"
আরও পড়ুন: সৎকার না করে সাপে কাটা শিশুর দেহ ভাসাল পরিবার, পুলিশে এসে পাঠাল ময়নাতদন্তে
এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন মেডিক্যাল আধিকারিক ৷ জেলা সিএমএইচও এসএন কেশরি বলেন, "এই বিষয়ে খবর এসেছে ৷ কী পরিস্থিতিতে শিশুর মৃতদেহ বাইকে করে আনতে হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷ দোষী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷" এই অবস্থায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷