আলিগড়, 23 মে : কুতুবউদ্দিন আইবক কিংবা ইলতুতমিস নন, কুতুব মিনার গড়েছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য ৷ এএসআই-য়ের প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তার এহেন দাবিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে ৷ বিতর্ক শুরু হয়েছে জ্ঞানবাপী নিয়েও ৷ বাবরি মসজিদ কিংবা বিভিন্ন মন্দির ধ্বংসের স্মৃতি ফের ফিরবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত দেশবাসী ৷ এবার ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব বললেন, প্রাচীন মন্দির-মসজিদ ধ্বংস করা ভারতীয় স্থাপত্য আইনের বিরোধী (Prominent historian Irfan Habib in an exclusive interview with ETV Bharat ) ৷
ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মুঘল সম্রাট ওরঙ্গজেবের বারাণসী এবং মথুরায় মন্দির ধ্বংসের বিষয়েও তথ্য তুলে ধরেন তিনি । বারাণসীতে মন্দির ভাঙার বিষয়ে ইরফান হাবিব বলেন, ‘‘এটা সত্যি যে ওরঙ্গজেব বহু মন্দির ধ্বংস করেছিলেন । এগুলোর রেকর্ডও রয়েছে । কিন্তু, কাঠামোটি ছিল শিবের ৷ রেকর্ডে এটির উল্লেখ নেই । মামলাকারীরাও (হিন্দু আবেদনকারীরা) শিবলিঙ্গের কথা উল্লেখ করেনি, তারা অন্যান্য হিন্দু দেবতাদের সম্পর্কে বলেছিল । জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ উদ্ধারের পরে, এটি শিবের মন্দিরে পরিণত হয়েছে ৷’’
জ্ঞানবাপী মসজিদের অফিসিয়াল সাইটে হিন্দু ধর্মের ভাস্কর্য এবং মোটিফ উদ্ধারের বিষয়েও তথ্য রয়েছে ৷ হাবিব বলেন, ‘‘আমি এই ধরনের আবিষ্কার সম্পর্কে জানতাম না । তবে এটা সত্যিও হতে পারে । এর মানে এই নয় যে, সেই অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মন্দির বা মসজিদটি ভেঙে ফেলতে হবে । এটা নিছকই বোকামি ৷’’
হাবিব আরও বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে ওরঙ্গজেব বারাণসী এবং মথুরায় বেশ কিছু মন্দির ধ্বংস করেছিলেন ৷ মথুরায় যেই মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল সেটি কেশব রায়ের ছিল ৷ মন্দিরটি জাহাঙ্গিরের শাসনকালে বীর সিং বুন্দেলা নির্মাণ করেছিলেন । দু'টি মন্দিরই ওরঙ্গজেব ধ্বংস করেছিলেন । কিন্তু 1670 সালে নির্মিত স্থাপত্যগুলি কি এখন ভেঙে ফেলা ঠিক ?’’
আরও পড়ুন : সূর্য দেখতে কুতুব মিনার গড়েন রাজা বিক্রমাদিত্য, চাঞ্চল্যকর দাবি এএসআই অধিকর্তার
এটি সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় স্থাপত্য আইনের বিরুদ্ধে ৷ 1992 সালে সুপ্রিম কোর্ট হিন্দুদের অযোধ্যায় জমি দিয়েছিল । তারপরে বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিতে গিয়ে আদালত নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে । মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনাই করা হয়নি । আরেকটি উদাহরণ তুলে ধরে ইরফান হাবিব বলেন, ‘‘রাজস্থানের চিতোরগড়ে রানা কুম্ভ নির্মিত একটি মিনার (টাওয়ার) রয়েছে । টাওয়ারের নীচে হিন্দু দেবদেবীর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছিল যেখানে টাওয়ারের শীর্ষে আরবীতে ‘আল্লাহ, আল্লাহ’ লেখা ছিল । তাহলে যদি মুসলমানরা কাঠামোর উপর অধিকার দাবি করে, সেটা কি ঠিক হবে ?’’