নয়াদিল্লি, 8 জানুয়ারি: ইন্ডিয়া শিবিরের নেতৃত্ব নিয়ে কংগ্রেস কি নিজেদের চিরাচরিত 'একচেটিয়া মনেভাব' থেকে মুক্ত হতে এখনও পারেনি? নেতৃত্ব বন্টনের প্রশ্নে কি তাদের আন্তরিকতার অভাব আছে ? রাজনৈতিক মহলের এমন চর্চার মধ্যেই বিরোধী জোট আরও একবার পড়ল বড়সড় প্রশ্নের মুখে। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে সরাসরি লড়াই হচ্ছে আপ এবং কংগ্রেসের। এবার আপ-কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে 'মমতাদি'কে ধন্যবাদও জানালেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল ।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, "দিল্লির নির্বাচনে আপকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল । ব্যক্তিগতভাবে আমি মমতাদিদির কাছে কৃতজ্ঞ! আমাদের ভালো এবং খারাপ-দুই পরিস্থিতিতেই আপনি সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন ।"
TMC has announced support to AAP in Delhi elections. I am personally grateful to Mamta Didi. Thank you Didi. U have always supported and blessed us in our good and bad times.
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) January 8, 2025
লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলি একছাতার তলায় আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তৈরি হয় ইন্ডিয়া শিবির। আপ ও কংগ্রেস তাতে সামিল হয় । আছে তৃণমূল থেকে শুরু করে আরও বেশ কয়েকটি বিজেপি বিরোধী দল । দিল্লিতে লোকসভার সাতটি আসনে জোট বেঁধে লড়ে আপ ও কংগ্রেস । তাতে আসন জেতা হয়নি বটে তবে প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ বাড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে। বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য একাই লড়ছে এই দুটি দল। ঠিক এখানেই কেজরির দলকে সমর্থন সিদ্ধান্ত মমতার।
এমনিতেই মমতার সঙ্গে আপ প্রধানের সম্পর্ক খুবই ভালো। রাজনৈতিক কারণে হোক অথবা প্রশাসনিক কাজে মমতা দিল্লি গেলেই কেজরির সঙ্গে দেখা করেন। কেজরি জেলে থাকাকালীন তাঁর বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। আবার নবান্নে এসেও মমতার সঙ্গে দেখা করেছেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
এমনিতেই রাজনৈতিক পরিসরে আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য বারবার উঠে আসে আঞ্চলিক দলগুলিকে সম্মান দেওয়ার বিষয়টিও। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, আপ-কে সমর্থন করার নেপথ্যে মমতা কতগুলি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন। এক, গত দু'বার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালিয়েছেন কেজরি। এবারও তাঁর জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপ-কে সমর্থনের একটি রাজনৈতিক ভিত্তি আছে।
পাশাপাশি, ইন্ডিয়া শিবিরের নেতৃত্ব যে মমতা পুরোপুরি কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দিতে চান না তাও সর্বজনবিদিত। এমতাবস্থায় আপ যদি আবারও বিজেপিকে হারাতে পারে তাহলে বিরোধী জোটে আঞ্চলিক দলের গুরুত্ব আরও বাড়ে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা নিজেও সেই কাজটাই করে থাকেন । বিজেপির মতোই কংগ্রেস বা সিপিএমের সঙ্গে ভোটে লড়েন এবং জেতেন। সেই একই কারণে দিল্লির ভোটে কেজরিদের সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা।