শিলিগুড়ি, 8 জানুয়ারি: বিরল 'কাওয়াসাকি' রোগে আক্রান্ত শিশুকে জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়ে বাড়ি ফেরাল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল । এই ইঞ্জেকশনের দাম 80 হাজার টাকা । সেই টাকা রোগীকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান শিলিগুড়ির মেয়র তথা রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব।
তবে এই রোগে আতঙ্কের কিছু নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সুপার চন্দন ঘোষ । কাওয়াসাকি রোগ মূলত পাঁচ বছরের নীচের শিশুদের হয়ে থাকে । শিলিগুড়ির প্রধাননগরের বাসিন্দা প্রকাশ ঠাকুরের চার বছরের ছেলে সার্থক এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল । 2024-এর 26 জুলাই জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয় সে । সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় সার্থক কাওয়াসাকি রোগে আক্রান্ত । এরপর 27 জুলাই তাকে সেই জীবনদায়ী মহার্ঘ্য ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় । 29 জুলাই সুস্থ হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগে গা ভর্তি খড়খড়ে ভাব ও ফোঁড়া বের হয়। আক্রান্ত হয় হৃৎপিন্ড । ফুসফুসেও প্রভাব পড়ে। তাই পর্যবেক্ষণে রাখতে হয় রোগীকে । এই রোগ বিরল ৷ সচরাচর কারও হয় না । কিন্তু ওই শিশুটি ভর্তি হতেই তার মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা যায় । মূলত পাঁচ দিন ধরে ব্যাপক জ্বর, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ঠোঁট লাল হয়ে যাওয়া প্রভৃতি ছিল তার সংক্রমণের উপসর্গ। চিকিৎসক পিপি দত্ত রক্ত পরীক্ষা করে শিশুটির ওই অসুখ আছে, তা জানতে পারেন । এরপরেই হাসপাতালের সকলে মিলে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ।
কিন্তু এত টাকা কে দেবে ? তা নিয়ে আলোচনার সময় রোগীকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয় তারাই এই টাকাটা দেবে । স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় । তবে সেই টাকা পাওয়ার পর সবুজ সংকেত মিললে হাসপাতালের পক্ষ থেকে এদিন খবরটি জানানো হয় ।
এই বিষয়ে রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, "যেভাবে কঠিন রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এই হাসপাতালে, তা গর্বের । উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরে এই হাসপাতালেই সবথেকে বেশি রোগী হয় । প্রতিদিন প্রায় 2200 জন রোগী আসেন । তাই চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে আমরা বদ্ধপরিকর ।"