নয়াদিল্লি, 9 অগস্ট: বহনযোগ্য আলট্রাসাউন্ড মেশিন বাড়িতে ব্যবহার করতে পারবেন অসুস্থ প্রৌঢ়, নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট ৷ এখনও পর্যন্ত এই মেশিন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাড়িতে রাখা আইন-বিরুদ্ধ ৷ তবে, 70 বছর বয়সি 'প্রোগ্রেসিভ সুপ্রানিউক্লিয়ার পলসি' বা পিএসপি-তে ভোগা প্রৌঢ়ের চিকিৎসার প্রয়োজনে এই রায় দিয়েছে আদালত (Delhi High Court allows 70 year old ill man to access ultrasound machine at home) ৷
পিএসপি রোগে আক্রান্তের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ এর ফলে তাঁর পক্ষে ভারসাম্য বজায় রাখা, ঠিকঠাক চলাচল, দৃশ্যমানতা এবং কথা বলা সমস্যাজনক হয়ে ওঠে ৷ বাড়িতে হাসপাতালের আইসিইউ-র মতো বন্দোবস্ত করতে হয়েছে তাঁকে ৷
এদিকে আলট্রাসাউন্ড মেশিন দিয়ে গর্ভস্থ শিশুর ভ্রূণ নির্ণয় করা হয় ৷ তাই এই মেশিন ব্যবহার রুখতে 'প্রি কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-নাটাল ডায়গনস্টিক টেকনিস (প্রহিবিশন অফ সেক্স সিলেকশন) অ্যাক্ট, 1994' আইন বলবৎ করা হয়েছে ৷ এই আইনের আওতায় পিএসি-র শিকার ওই প্রৌঢ়কে পোর্টেবল আলট্রাসাউন্ড মেশিন ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি দিল্লি সরকার৷ অথচ চিকিৎসকেরা জরুরি ভিত্তিতে এই মেশিনটি তাঁকে ব্যবহার করতে বলেছেন ৷
আরও পড়ুন: 'হেট স্পিচে'র বিরুদ্ধে গলা তোলা যাবে না ? আইনি পড়ুয়াদের পরামর্শ বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের
পিএসডিটি অ্যাক্টকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনকারী দীপক নিরুলা দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ বিচারপতি সঞ্জীব নারুলা জানান, পিএনডিটি অ্যাক্টের উদ্দেশ্যে ভ্রূণ চিহ্নিতকরণে আলট্রাসাউন্ড মেশিন যেন ব্যবহার করা না হয়, তা আটকানো ৷ এক্ষেত্রে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা৷ তাই আদালত আলট্রাসাউন্ড মেশিনের ব্যবহার নিয়ে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিতে পারে ৷
আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, আবেদনকারীর বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করে ভারতীয় সংবিধান ৷ অসুস্থ প্রৌঢ়কে পিএনডিটি অ্যাক্টের আওতায় আনলে সংবিধান লঙ্ঘন করা হবে ৷ 2013 সালে প্রৌঢ়ের আটাক্সিয়া রোগ ধরা পড়ে ৷ এর ফলে পেশিগুলি দুর্বল হয়ে যায় ৷ হাঁটাচলা, হাত দিয়ে কোনও কাজ করা, কথা বলা, এমনকী গিলে ফেলাও কষ্টকর হয়ে ওঠে ৷ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে হয়৷ তাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় ৷
হাইকোর্ট বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের আবদেনকারীর বাড়িতে আলট্রাসাউন্ড মেশিন পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেয়৷ আবেদনকারীর তার সবরকম খরচ বহন করবেন ৷