বারাসত, 6 জানুয়ারি: রবিনসন স্ট্রিট-কাণ্ডের ছায়া বারাসতে। ঘরের মধ্যেই স্বামীর পচাগলা দেহ আগলে বসে স্ত্রী। পরে, পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে উদ্ধার করে পচাগলা দেহটি। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুনীল চক্রবর্তী। বয়স 70। অসুস্থ অবস্থায় মৃতের বৃদ্ধ স্ত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ চিকিৎসার জন্য বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, অসুস্থ হয়েই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, 2020 সাল নাগাদ একমাত্র ছেলেকে হারায় চক্রবর্তী দম্পতি। তারপর থেকেই মানসিক রোগে জর্জরিত হয়ে পড়েন স্বামী-স্ত্রী, দু'জনেই। দম্পতির আসল বাড়ি কলকাতায় হলেও বর্তমানে বারাসতের কাজিপাড়ায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে। তবে, অধিকাংশ সময় ফ্ল্যাটেই থাকতেন তাঁরা। খুব একটা বাইরে দেখা যেত না ওই বৃদ্ধ দম্পতি। গত কয়েকদিন ধরেই সুনীল ও তাঁর স্ত্রী বাসন্তীকে ফ্ল্যাটের বাইরে দেখা যাচ্ছিল না। তারই মধ্যে রবিবার বিকেল থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে দম্পতির ফ্ল্যাট থেকে।
এর পরই সন্দেহ দানা বাঁধে আবাসিকদের মধ্যে। তীব্র গন্ধে থাকতে না-পেরে শেষে সন্ধ্যায় বারাসত থানায় খবর দেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙতেই অবাক হন। লক্ষ্য করেন, বৃদ্ধ স্বামীর পচাগলা দেহ আগলে বসে রয়েছেন স্ত্রী। পাশে পড়ে রয়েছে বাসি কিছু খাবার এবং বাসনপত্র। এর পরই পুলিশ সেখান থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসার জন্য। দেহ দেখে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, 3-4 দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় কিছুই করতে পারেননি স্ত্রী।
এই বিষয়ে স্নেহাশিস দাস নামে এক প্রতিবেশী বলেন, "বছর তিন-চারেক আগে ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে মারা যান। স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। ওনাদের আত্মীয়-স্বজন কোথায় থাকে, তা আমরা কেউই জানি না। দিন 3-4 আগে শেষ দেখা গিয়েছিল তাঁদের। আজ সকাল থেকেই দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। সন্ধ্যায় পুলিশ এসে বৃদ্ধের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। অসুস্থতার কারণেই সম্ভবত মৃত্যু হয়েছে তাঁর।"