নিউদিল্লি, 22 এপ্রিল: আজ ফেসবুক আর হোয়্যাটসঅ্যাপের একটি আবেদন খারিজ করল দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি নবীন চাওলা ৷ হোয়্য়াটস্অ্য়াপ-এর নতুন প্রাইভেসি পলিসি-র তদন্তে থাকা কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া-কে চ্যালেঞ্জ করে মার্ক জুকারবার্গের দুটি সংস্থা আবেদন জানিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্টে ৷
কোর্টের তরফে সিসিআই তদন্তের বিরুদ্ধে এই আবেদনের কোনও যথার্থতা নেই জানানো হয়েছে ৷ আর তাই সিসিআই-এর তদন্ত বাতিল করার সিদ্ধান্তও নাকচ করেছে ৷
বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ বিতর্কে জড়িয়েছিলেন হোয়্যাটসঅ্য়াপের তরফে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে, ফেসবুকের মুকুল রোহতাগি আর সিসিআই-এর পক্ষে জেনারেল অমন লেখি ৷
এর আগে সিসিআই কোর্টে হোয়্যাটসঅ্যাপের নতুন প্রাইভেসি পলিসি প্রশ্ন তুলে জানায় যে, এর ফলে হোয়্যাটসঅ্যপ আরও বেশি করে তথ্য জোগাড় করতে পারবে ৷ সঙ্গে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে এটা তাদের "সদর্প পদক্ষেপ" হবে ৷ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্বকে কাজে লাগানোর অভিযোগও তোলে তারা ৷ এই তদন্তের আইনি অধিকারের গ্রাহ্য়তা নিয়ে কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না ৷ তাদের তদন্তের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হোয়্যাটসঅ্যপ আর ফেসবুকের আবেদন "অযোগ্য আর ভুল ধারণা"র ৷
তথ্য শেয়ার নাকি ফাঁস, তদন্তে সিসিআই
সিসিআই কোর্টকে জানায়, তারা তদন্তের পরই বলতে পারবে হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ ফেসবুকে তথ্য শেয়ার করে তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করতে চায় কি না, বা তা প্রতিযোগিতা-বিরুদ্ধ কি না ৷
হোয়্যাটসঅ্যাপ ব্যবহার করার সময় ওই ব্যক্তি কোথায় আছেন, কী ধরনের ফোন, কোন ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করছেন, কার সঙ্গে কী কথা বলছেন, এই সব তথ্য পেয়ে যাচ্ছে হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ ৷ এতে ব্যবহাকারীর একটা সংক্ষিপ্ত জীবন-তথ্য আর তার পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কিত বিষয়গুলি হাতে আসবে এই সংস্থার ৷ আর এটাই বিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহার করে সংস্থাটি টাকা রোজগার করতে পারে, যা তাদের "সদর্প পদক্ষেপ" হবে ৷
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এ রাজ্য়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া শিখরে পৌঁছবে, বাড়ছে আশঙ্কা
দুই সোশ্যাল মিডিয়ার বক্তব্য
সুপ্রিম কোর্ট আর দিল্লি হাইকোর্রট যখন এই বিষয়টি দেখছেন, তখন মাঝখান থাকে সিসিআই-এর এই নাক গলানো নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করেছে দুটি সোশ্যাল মিডিয়া ৷ এমনকি সংশ্লিষ্ট কমিশনের স্বতঃপ্রণোদিত বিচারের অধিকারকে অপমান করছে সিসিআই, এই অভিযোগও তোলে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় সংস্থা দুটি ৷
ইতিমধ্যে সংস্থার প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে পর্যালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট আর দিল্লি হাইকোর্ট ৷ তাদের দাবি সিবিআই-এর এই তদন্ত প্রতিযোগিতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছে আর দেশের দুটি কোর্ট যে বিষয় নিয়ে একবার অনুসন্ধান করেছে, সিসিআই আবারও তার পুনরাবৃত্তি করছে ৷
এই দুটি সোশ্য়াল মিডিয়ার তরফে কোর্টকে জানানো হয়েছে যে, এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের মাধ্যমে দুজনের মধ্যে কথোপকথন সুরক্ষিত থাকবে আর একে অপরকে পাঠানো বার্তা পড়তে পারবে না হোয়্যাটসঅ্যাপ ৷
তারা জোর দিয়ে জানিয়েছে, হোয়্যাটসঅ্যাপ রেজিস্টার করার জন্য ব্যবহারকারীকে তার নম্বর দিতে হয় আর তথ্য হিসেবে তারা শুধুমাত্র এটুকুই পেয়ে থাকে ৷
জানুয়ারি মাসে সিসিআই কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই হোয়্যাটসঅ্য়াপের প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ আজকের রায়ের পর তদন্তের জল গড়াবে বহু দূর ৷