জয়পুর, 23 জুলাই: নীল ছবির দৌরাত্ম্যে জেরবার মরুরাজ্য ৷ শুধু তাই নয়, মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে শিশু পর্নোগ্রাফি ৷ রাজস্থানে পর্নোগ্রাফি তৈরি, তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং সংগ্রহ নিয়ে 400টিরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার বছরে এই ঘটনায় 257 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
রাজস্থানের ডিজিপি উমেশ মিশ্র বলেন, "পর্নোগ্রাফি তৈরিতে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ এটা দুশ্চিন্তার ৷ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷ বহু ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ৷" তিনি আরও জানান, সরকার বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে এবং প্রাইভেট কলেজগুলিতে শিশু পর্নোগ্রাফি এবং সাইবার অপরাধ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: অশ্লীল ভিডিয়ো দেখায় বকুনি, রাগে দিদিমাকে খুন করল কিশোর!
রাজস্থানের স্বরাষ্ট্র দফতর একটি রিপোর্ট পেশ করে ৷ তাতে জানা গিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় নোটিশ পাঠিয়ে 107টি ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ৷ রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ বা এসওজি সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে সন্ধান চালিয়ে শিশু পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটের খোঁজ পেয়েছে ৷ সেই অনুযায়ী ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিষয়টি জানানো হয়েছে ৷
জুলাই মাসেই পর্নোগ্রাফি মামলায় একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ঘটনাটি দুঙ্গাপুর জেলার ৷ অভিযুক্ত রমেশ চন্দ্র কাটারা স্বীকার করেছেন, তিনি নীল ছবি দেখায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন ৷ এই ধরনের ছবিগুলি দেখার পরপরই মেয়েদের যৌন হেনস্তা করতেন ৷ তাঁর বিরুদ্ধে 6 জন নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে ৷ জয়পুরেও শিশুর পর্নোগ্রাফি দেখা এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তাদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের হয়েছে ৷ প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তারা নিজেরাও পর্নোগ্রাফি দেখেছে এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে ৷
পুলিশ জানিয়েছে, রাজস্থান সরকার বিগত 4 বছরে শিশু পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়তে 37টি সেমিনার করেছে ৷ রেডিয়ো, টিভি এবং সামাজিক মাধ্যমগুলিতে পুলিশ সচেতনতামূলক প্রচারও চালাচ্ছে ৷ 'আওয়াজ অভিযান' নামের একটি কর্মসূচির আওতায় 2 হাজার 990 টি বৈঠক হয়েছে ৷ 83 হাজার 491 জন মানুষকে সচেতন করা হয় ৷ এমনকী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতেও এ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ ৷
পর্নোগ্রাফির সংক্রান্ত ঘটনায় 2019-2022 সালের মধ্যে রাজ্যে যত সংখ্যক মামলা দায়ের হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাগাউরে, 76টি ৷ এরপরই কোটায় 46টি এবং হনুমানগড়ে 42টি মামলা দায়ের হয়েছে ৷ কোটায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তরুণ-তরুণীরা সরকারি পরীক্ষাগুলির প্রস্তুতি নিতে যায় ৷
আরও পড়ুন: নীল বিতর্কে রাজ
নাগাউরে পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত ঘটনায় 55 জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ কোটায় 41 জন পুলিশের হাতে ধৃত এবং হনুমানগড়ে এই সংখ্যা 30 ৷ এছাড়া বারমের এবং বিকানেরে যথাক্রমে 17 জন ও 12 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তবে বহু মামলার তদন্ত এখনও শুরু হয়নি ৷