দিল্লি, 4 ডিসেম্বর : সাত ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকেও কাটল না জট । কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় রইল কৃষক প্রতিনিধিদল । অন্যদিকে একাধিক আশ্বাস দেওয়া হলেও আইন প্রত্যাহারে অনিচ্ছুক মোদি সরকার। এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল পরের বৈঠক হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বৈঠক শেষে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কৃষক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব ।
গতকাল কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের 39 দফা দাবি তুলে ধরে কৃষক প্রতিনিধিদল । একাধিক বিষয়ে কৃষকদের উদ্বেগের কথা জানায়। কৃষকরা মনে করেন, কৃষি বাজার ও চুক্তিভিত্তিক চাষ সংক্রান্ত আইন বড় বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সক্রিয় করে তুলবে। বেসরকারি কৃষি বাজার তৈরি ও ফসল ক্রয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়েও চিন্তিত তাঁরা। বৈঠকে উৎপাদিত ফসলের পরিবহন ও হিমঘরের উপর নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। নতুন আইনে বড় ব্যবসায়ীদের সামনে পড়ে নিজেদের স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা । অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফে কৃষি আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।
অমীমাংসিত এই বৈঠক শেষে অল ইন্ডিয়া কিষান সভার নেতা বলকরণ সিং ব্রার জানান, তিন আইনেই সংশোধনের কথা বলেছে সরকার। কিন্তু কৃষক সংগঠনগুলির তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আইনই প্রত্যাহার করতে হবে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সংক্রান্ত আইন খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন :‘আমরা খাবার নিয়ে এসেছি’, সরকারের দেওয়া খাবার ফিরিয়ে জবাব কৃষকদের
মহারাষ্ট্র থেকে কৃষক নেতা শংকর দারেকর বৈঠক যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, কেন্দ্রের আইন সংশোধনী প্রস্তাবেই বোঝা যাচ্ছে তারা ব্যাকফুটে রয়েছে।
যদিও কৃষকরা প্রতিবাদ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবেন বলে আশাবাদী কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর। তিনি বলেন, কৃষকদের আরও আইনি অধিকার দেওয়ার কথা ভাববে সরকার। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থাকবে।"
এই পরিস্থিতিতে কৃষক আন্দোলন এখনই শেষ হওয়ার কোনও ইঙ্গিত নেই। কারণ মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করা লোক সংঘর্ষ মোর্চার সভাপতি প্রতিভা সিন্ধে জানিয়ে দিয়েছেন, আমাদের তরফে আলোচনা শেষ। সরকারের তরফে যদি আজই কোনও সমাধান না দেওয়া হয় তাহলে আরও কোনও বৈঠকে যোগ দেওয়া হবে না বলে আমাদের নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন।
একই কথা বলেছেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জগমোহন সিং। তিনি বলেছেন, "আমরা আগামীকাল সরকারের কাছে জানতে চাইব তারা আইন প্রত্যাহার করবে কি না। যদি তারা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাহলে আমরা 5 ডিসেম্বরের বৈঠকে যোগ দেব না।"