নয়াদিল্লি, 4 জুন : করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা উত্তর প্রদেশ সরকারের ৷ এমনই অভিযোগ রোজ তুলছেন ওই রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা ৷ তাঁরা সব দায় চাপাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপর ৷
বিরোধীরা যাই বলুক, ভারতীয় জনতার পার্টির আস্থা এখনও অটুট যোগী আদিত্যনাথের উপর ৷ তাই বিধানসভা নির্বাচনের সাত-আটমাস আগে যোগীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে দলের অন্দরে স্পষ্ট করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব ৷
গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্র বলছে যে যোগীর উপর আস্থা থাকলেও তাঁর প্রশাসনের উপর খুব একটা আস্থা নেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ৷ তাই যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভায় খুব শীঘ্রই বড়সড় রদবদল হতে চলেছে ৷ তাছাড়া প্রাক্তন আমলা একে শর্মাকে উত্তর প্রদেশ সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে ৷
আরও পড়ুন : 2022 এর বিধানসভা ভোট নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক ডাকলেন নাড্ডা
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে একে শর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ৷ ফলে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের আগে ওই রাজ্যের প্রশাসনের রাশ যে মোদি নিজের হাতে অনেকটাই রাখতে চাইছেন, তা এই পদক্ষেপ থেকে পরিষ্কার হচ্ছে ৷ অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ৷
বিজেপি সূত্রের খবর, মানুষ যে সমস্ত নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ, তাঁদের যেমন উত্তর প্রদেশের মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হবে ৷ অন্যদিকে নতুন যাঁদের নেওয়া হবে, তাঁদের ক্ষেত্রে জাতি ও আঞ্চলিক বিষয়টি গুরুত্ব পাবে ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে জাতপাতের লড়াই খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷ তাছাড়া বড় রাজ্য হওয়ায় আঞ্চলিক বিষয়গুলিও খুব জরুরি ৷ সেই সব মাথায় রেখেই চলতি মাসেই উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন হবে ৷
আরও পড়ুন : উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বিজেপি
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বিজেপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা লখনউ গিয়েছিলেন ৷ দু’দিন ধরে তাঁরা উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ৷ সেখানে উত্তর প্রদেশ প্রশাসনের হালহকিকৎ নিয়ে আলোচনা হয় ৷ সেই আলোচনার ভিত্তি ছিল আরএসএসের একটি রিপোর্ট ৷ যে রিপোর্ট তৈরি করেছেন স্বয়ং সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবোলে ৷ সম্প্রতি তিনি যোগী-রাজ্যে গিয়েছিলেন ৷ সেই সময় যে ফিডব্যাক তিনি পেয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করেই ওই রিপোর্ট তৈরি হয় ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম মিথ হল উত্তর প্রদেশ যার, দিল্লি তার ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে দল উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় তারা হয় দিল্লিতে সরকার গড়তে সাহায্য করেছে অথবা সরকার গড়েছে ৷ তাই 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে উত্তর প্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নরেন্দ্র মোদির কাছে ৷ তাছাড়া করোনা মোকাবিলা নিয়ে মোদি সরকারের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে এবং সাম্প্রতিক চার রাজ্য ও এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা ভোটে বিজেপির ফল আশানুরূপ হয়নি ৷ তাই ভোটের সাত-আট মাস আগে থেকেই উত্তর প্রদেশে নজর দিয়েছেন মোদি-শাহরা ৷
আরও পড়ুন : ভারতকে ভ্যাকসিন দিচ্ছে আমেরিকা, মোদিকে ফোনে জানালেন হ্যারিস