এই গ্রামের অনেক বৃদ্ধার হাতের একাধিক আঙুলের মাথা কাটা । বেশ এক গা ছমছমে ব্যাপার আছে । প্রথমবার দেখলে একটু ভয় তো লাগবেই । প্রশ্ন জাগবে কেন আঙুলের মাথা কেটে ফেলেছেন তাঁরা ! না কি এই অসম্পূর্ণ আঙুল নিয়েই জন্ম হয় তাঁদের । রহস্য বাড়তে থাকে, প্রশ্ন তৈরি হতে থাকে। শোনা যায়, স্বেচ্ছায় এই শারীরিক যন্ত্রণা মেনে নেন ওই গ্রামের বৃদ্ধারা । কিন্তু কেন ?
কাছের মানুষের মৃত্যুতে আমাদের যন্ত্রণা হয় । মানসিক যন্ত্রণা । একসময় মনে হয় সময়টাই থমকে গিয়েছে । কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার দানি উপজাতির মহিলাদের জন্য কাছের মানুষের মৃত্যু শুধুই মানসিক যন্ত্রণা না, তাঁরা মেনে নেন শারীরিক যন্ত্রণাকেও । আত্মার শান্তি কামনায় আঙুলের উপরের অংশ কেটে ফেলেন ।
কিন্তু কেন এই যন্ত্রণাদায়ক নিয়ম পালন করেন তাঁরা ? বিশ্বাস । শুধুমাত্র বিশ্বাসের জন্যেই দীর্ঘ সময় ধরে এই রীতি পালন করে আসছেন দানি মহিলারা । আঙুলের মাথা কেটে ফেললে মৃতের আত্মা শান্তি পাবে, এই বিশ্বাসেই যন্ত্রণাদায়ক রীতি পালন করেন তাঁরা । শোকপ্রকাশের প্রতীকীও বটে । এমনকী কয়েকজন শিশুর আঙুল কামড়ে নেয় তাদের মা ।
আঙুল কেটে ফেলার এই রীতির নাম ইকিপালিন । কয়েকবছর আগে ইন্দোনেশিয়া সরকারের তরফে এই প্রথা নিষিদ্ধ করা হয় । কিন্তু গোপনে এখনও মেনে চলা হয় এই প্রথা । কয়েকজন মহিলাকে তো তাঁদের আঙুল দিয়েই চেনা যায় ।
যখন এই প্রথা পালন শুরু হয়, পুরুষের বদলে লক্ষ্য বানানো হয়েছিল মহিলাদেরই । কখনও ধারালো পাথর দিয়ে আঙুল কেটে ফেলা হয় । কখনও কোনও অস্ত্রের ব্যবহার ছাড়াই কেটে ফেলা হয় আঙুল । কীভাবে ? আঙুলের চারপাশে দড়ি বাঁধা হয় । রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয় । অক্সিজেনের অভাবে স্নায়ুর মৃত্যু হয় । নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই খসে পড়ে আঙুলটি ।
শিশুর আঙুলও কামড়ে নেন মা । কারণ তাঁরা বিশ্বাস করেন, এইভাবেই দীর্ঘায়ু হবে তাঁর সন্তানের ।
শুধুমাত্র আঙুল কেটে ফেলার প্রথা না, আরও কিছু পোশাকি বিশেষত্বও আছে তাঁদের উপজাতির মধ্যে । পুরুষত্বের আবরণ দেওয়ার জন্য পুরুষাঙ্গে বিশেষ পোশাক পরেন তাঁরা- কোতেকা । সাধারণত শুকনো স্থানীয় ফল দিয়ে তৈরি হয় । যৌন দক্ষতার প্রদর্শন হিসাবে এই কোতেকা পরেন দানি পুরুষরা ।