দিল্লি, 3 জুলাই : ছয় মেরেছিলেন প্রথম বলেই । তাঁর প্রথম বক্তৃতা কেড়ে নিয়েছিল প্রচারের সব আলো । যে বক্তৃতা তাঁকে হঠাৎই লাইমলাইটে এনেছিল, সেই বক্তৃতার জন্যই মহুয়া মৈত্র আজ বিতর্কে ।
নিন্দুকরা বলছেন, তৃণমূলের এই হাই প্রোফাইল মহিলা সাংসদের সেদিনের বক্তৃতা ছিল নাকি টোকা । বছর কয়েক আগে এক অ্যামেরিকান সাংবাদিকের প্রতিবেদনের লাইন নাকি হুবহু টুকেছেন মহুয়া মৈত্র । 'ওয়াশিংটন মান্থলি'তে প্রকাশিত 'ফ্যাসিবাদের প্রাথমিক সতর্কতা' শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে মহুয়া নাকি তাঁর বক্তব্যের রসদ নিয়েছেন । মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যে তথ্যের নিরিখে আক্রমণ করা হয়েছিল, মহুয়ার বক্তব্যও ছিল নাকি তারই প্রতিলিপি ।
সমালোচকদের দাবি, সেই প্রতিবেদনে অ্যামেরিকা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জায়গায় মহুয়া নাকি ভারত এবং নরেন্দ্র মোদি শব্দ দুটো পরিবর্তন করে বসিয়ে নিয়েছেন । সেই প্রতিবেদনে ফ্যাসিবাদের 12 টি লক্ষণের কথা উল্লেখ ছিল । সেখান থেকে মহুয়া 6 টি পয়েন্ট ব্যবহার করেছেন । সোশাল মিডিয়ায় ওই প্রতিবেদন ও মহুয়ার বক্তব্য পাশাপাশি পোস্ট করে সমালোচনা শুরু হয় । সুযোগ বুঝে আসরে নেমে পড়েন বিরোধীরা ।
তবে চুপ করে থাকেননি তৃণমূলের ডাকসাইটে এই সাংসদ । স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই সমালোচনার জবাব দেন তিনি । মহুয়ার দাবি, তিনি কোনও বক্তব্য টোকেননি । হৃদয় থেকে বেরিয়ে এসেছিল সব বক্তব্য । সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে যেভাবে আজ সমালোচকদের দিকে 'মিজ়াইল' ছুড়লেন মহুয়া, তাতে যেন প্রথম দিনের আভাস পাওয়া গেল ফের একবার ।
সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে মহুয়া বলেন, "বাঁধনে মুঝে তু আয়া হ্যায়, জঞ্জির বড়ি ক্যায়া লায়া হ্যায় (আমায় যে বাঁধতে এসেছেন, আপনার শিকলের কি সে জোর আছে) ?" তিনি আরও বলেন, "আমি যা বলেছি তা আমার হৃদয়ের কথা । শুধু আমার নয়, প্রতিটি ভারতীয় যাঁরা সোশাল মিডিয়ায় আমার বক্তব্য শেয়ার করেছেন এটা তাঁদের কথা ।"
গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপর ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগাগোড়া মোদি সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন মহুয়া । তাঁর 'জ্বালামুখী' ভাষণ নজর কেড়েছিল । কৃত্রিম জাতীয়তাবাদ, প্রচারমাধ্যেমের কণ্ঠরোধ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়কে হাতিয়ার করে সেই দিন মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মহুয়া । তারপরই তাঁর প্রথম ভাষণ ঘিরে শুরু হয়েছিল জোর চর্চা । কিন্তু তার রেশ কাটার আগেই এবার সেই ভাষণ ঘিরেই বিতর্কে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ ।