- এবছর মে মাসের চার তারিখে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে । এই গবেষণাপত্রটির নাম দেওয়া হয়, "2020-তে বিশ্ব যক্ষ্মার মৃত্যুর উপর কোরোনা মহামারীর প্রভাবের পূর্বাভাস ।"
- এই পেপারে মূলত 2020-তে যক্ষ্মায় মৃত্যুর উপর বিশ্ব যক্ষ্মা সনাক্তকরণ ও যত্নের কার্যকারিতা হ্রাসের প্রভাব সম্পর্কে অনুমান করা হয়েছে ।
- এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কোরোনা মহামারীর প্রতিক্রিয়া হিসেবে গৃহীত নীতিগুলি বিশেষত স্বাস্থ্যকর্মীদের পুনরায় নিয়োগ, চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও যত্নের জন্য নেওয়া কর্মসূচির কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করছে ।
- বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে তিন মাসের সময়কালে গড়ে 25 শতাংশ হ্রাস পেয়েছে (মহামারীর আগে সনাক্তকরণের অংশের তুলনায়) । পূর্বে করা হিসেব অনুযায়ী, অতিরিক্ত 1,90,000 (56,000- 4,06,000) যক্ষ্মায় মৃত্যুর কারণ হতে পারে (যা 13 শতাংশ বৃদ্ধি) । যার ফলে 2020-তে মোট 1.66 মিলিয়ন (1.3-2.1) মানুষের যক্ষ্মায় মৃত্যু হতে পারে, যা 2015 সালে বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মায় মৃত্যুর কাছাকাছি ।
ভারতে যক্ষ্মায় মৃত্যুর অনুমান :
- ভারতে 22 মার্চের পরবর্তী তিন সপ্তাহের রিপোর্ট অনুযায়ী, যক্ষ্মায় মৃত্যুর হার 75 শতাংশ (গড়ে সপ্তাহে 11,367) কমেছে । 2020-র মার্চের শেষে লকডাউন শুরুর আগের সপ্তাহগুলিতে গড়ে 45 হাজার 875টি কেস ধরা পড়ত ।
- যে কারণগুলির জন্য এই হ্রাস বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলি হল- রিয়েল-টাইম ন্যাশনাল অনলাইন যক্ষ্মা নজরদারি সিস্টেম নিকশয়-2-এ তথ্য দেওয়ায় বিলম্ব, স্বাস্থ্যসেবাগুলিতে উপস্থিতির হ্রাস, স্বাস্থ্যকর্মীদের পুনরায় নিয়োগ ও যক্ষ্মা পরীক্ষা ও সনাক্তকরণের হ্রাস ।
- উপরিউক্ত পর্যবেক্ষণ ও অনুরূপ দেশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভবিষ্যদ্বাণী করা যেতে পারে যে, কোরোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগে যক্ষ্মা সনাক্তকরণ ও কেয়ার পরিষেবাগুলির কর্মক্ষমতাকে সঠিক পর্যায়ে না ধরে রাখলে যক্ষ্মা সনাক্তকরণ অস্থায়ীভাবে বিশ্বব্যাপী অনেক কমে যাবে । ফলে যক্ষ্মায় মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বেশি যক্ষ্মার রোগীদের উপর প্রভাব ফেলবে ।
- বেশ কিছু বিষয়ের উপর 2020 সালের যক্ষ্মায় মৃত্যুর উপর পূর্বাভাসের প্রভাব পড়েছে । যে বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি হল- রিয়েল-টাইম যক্ষ্মার ঘটনাগুলির রিপোর্টিং-সহ বিভিন্ন দেশে সদ্য রিপোর্ট হওয়া যক্ষ্মার ঘটনাগুলির সাপ্তাহিক গণনার পর্যবেক্ষণ, অন্যান্য দেশে মাসিক গণনা, তাৎক্ষণিকভাবে যক্ষ্মা সনাক্তকরণের ও কেয়ার প্রোগ্রামগুলির নেতিবাচক কার্যকারিতার উপর গুরুত্ব দিতে হবে ।
- কোরোনা সংক্রমণের এই সময় যক্ষ্মা সনাক্তকরণ ও কেয়ার কার্যক্রমকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে ও বহাল রাখতে বিবেচনা করা উচিত ।
- এতে আরও যোগ করা হয়েছে যে, পূর্বাভাসটি বাস্তবায়িত হলে বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার অবস্থা পাঁচ বছর পিছিয়ে যেতে পারে এবং 2015 সালের রিপোর্টের মতো মৃত্যুর সংখ্যাও একই হতে পারে ।
- বিশ্বব্যাপী করা রিপোর্টের বেশিরভাগ যক্ষ্মা মৃত্যুর ঘটনা ভারতে ঘটেছে । দেশে যক্ষ্মা রোগীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন ও সময় মতো চিকিৎসার অভাবের কারণে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন ।