কলকাতা, 10 অগাস্ট: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন হতে হাতে রয়েছে আর কয়েক মাস । আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসের দিকে হতে পারে নির্বাচন । নির্বাচনের আগেই নিজের রাজ্যে পুনরায় সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন BJP রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় । BJP-র কয়েকজন নেতার সঙ্গে সামান্য অন্তর্দ্বন্দ্ব বাধে তাঁর । সামনা সামনি স্বীকার না করলেও তথাগতের বেশকিছু মন্তব্য সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট করেছিল । গেরুয়া শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতৃত্বর মন্তব্যের বিরুদ্ধে নাম না করে অসন্তোষের সুর ধরা পড়েছিল তাঁর গলায় । তাঁদের বক্তব্যকে "অযৌক্তিক" বলে মন্তব্য করেন তিনি । সেইসব নেতাদের বক্তব্যই বাংলার মানুষ ভালো ভাবে নিচ্ছে না বলে অভিমত ছিল তাঁর । এরপর রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলানোর ভার কাঁধে আসার পর সক্রিয় রাজনীতির ময়দান ছাড়তে হয় তথাগত রায়কে । তবে সম্প্রতি প্রত্যাবর্তনের সুর তাঁর কণ্ঠে । জানাচ্ছেন, দল চাইলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে লড়তে তিনি এক বাক্যে প্রস্তুত ।
তথাগত রায়ের কথায়, "রাজ্যপাল হিসেবে আমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমি আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে চাই । পশ্চিমবঙ্গের হয়ে কাজ করতে চাই । রাজ্যে ফেরার পর আমি দলের কাছে আমার ইচ্ছার কথা জানাব । তবে আমার আবেদন গ্রহণ বা খারিজ হওয়া সম্পূর্ণ দলের উপরই নির্ভর করছে ।"
2002-2006 পর্যন্ত BJP-র রাজ্য সভাপতি ছিলেন তথাগত রায় । 2002-2015 পর্যন্ত তিনি BJP-র ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ-এর সদস্য ছিলেন । 2015 সালের মে মাসে ত্রিপুরার রাজ্যপাল হিসেবে নির্বাচিত হন । 2018 সালের অগাস্টে মেঘালয়ের রাজ্যপাল হন তিনি । তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের মে মাসেই । কিন্তু কোরোনা পরিস্থিতির জেরে মেয়াদকাল বাড়িয়ে দেওয়া হয় । দিলীপ ঘোষের গোরুর দুধে সোনা থাকার মন্তব্য বা কোরোনা সারাতে অন্য এক BJP নেতার গোমূত্র পানের পরামর্শকে কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়ান । নাম না করেই BJP-র রাজ্য সভাপতিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, "কারও কারও মন্তব্য পার্টির ভালোর থেকে বেশি খারাপ করবে ।" বলেছিলেন, "উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতি অনুযায়ী গোরু আমাদের মা এই ভাবনা পশ্চিবঙ্গে কাজ করবে না । গোরুর দুধে সোনা আছে বা গোমূত্র খেলেও কোরোনা নিরাময় হবে এই সব কথাও পশ্চিবঙ্গের মানুষকে বলা ভিত্তিহীন । যদিও এই বিষয়ে পরে কোনও পালটা মন্তব্য করতে করেননি দিলীপ ঘোষ । " "এই বিষয়ে আমি কিছু শুনিনি " বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান দলের রাজ্য সভাপতি ।
বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতে বেশি দেরি হয়নি BJP-র অন্দরে । পরোক্ষভাবে রায়ের মন্তব্যকে সমর্থন করেন গেরুয়া শিবিরের বর্ষীয়ান অন্য এক নেতা । মন্তব্য করেন, "এটা ভুললে চলবে না যে পশ্চিবঙ্গে BJP-র রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষ সবচেয়ে বেশি সফল । প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে । কিন্তু দেখতে হবে সেটি জনগণ গ্রহণ করছে না কি করছে না । জনগণ যদি নেতার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত হতে না পারে তাহলে রাজ্যে একুশের নির্বাচনে জেতা BJP-র পক্ষে মুশকিল ।"