ETV Bharat / bharat

CWC-র 7 ঘণ্টার বৈঠক, কংগ্রেস শীর্ষে সেই সোনিয়া - কংগ্রেস

দলের শীর্ষ পদে কে বসবেন তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে মতপার্থক্য অনেকদিন ধরে । সোমবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সেই বিষয় আরও বেশি করে উঠে এল । দলের শীর্ষে কাকে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব? গান্ধি-দেরই বা এতে কী মত? বিস্তারিত আলোচনা করলেন অমিত অগ্নিহোত্রী ।

sonia gandhi
কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান থাকছেন সোনিয়া গান্ধি
author img

By

Published : Aug 25, 2020, 3:17 AM IST

দিল্লি, 25 অগাস্ট : নেতৃত্বের ইশু ছাড়াও কংগ্রেস বর্তমানে যে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন । তার সমাধান খোঁজার চ্যালেঞ্জ হিসাবে যে বহু চর্চিত আলোচনা তথা বিতর্কসভা ঘিরে আগ্রহ চড়ছিল, শেষ পর্যন্ত তার ফল হল সেই থোড় বড়ি খাড়াই ।

আপাতত ঠিক হয়েছে, কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন প্রধান পদে থাকবেন সোনিয়া গান্ধিই । ততদিন, যতদিন না তাঁর ছেলে, রাহুল গান্ধি এই পদে দলের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হন । তবে তা ঠিক হবে, নির্বাচনের মাধ্যমে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির অধিবেশনে, যার তারিখ এখনও নির্দিষ্ট হয়নি । এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও কোনও অনুযোগ নেই । কিন্তু এটা নিয়েই প্রশ্ন জাগছে যে, কেন কংগ্রেসের শীর্ষস্তরের নেতানেত্রীরা, যাঁরা অতি প্রভাবশালী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিরও সদস্য, সাত ঘণ্টা সময় লেগে গেল এই সিদ্ধান্তে আসতে । যা কোনও সাধারণ, নিত্যনৈমিত্তিক ‘একজ়িকিউটিভ’ স্তরের নির্দেশের মাধ্যমেই ঘোষণা করা যেতে পারত । তার বদলে, সারাদিন ধরে এই CWC ভার্চুয়াল মিটে যা হল, তা কংগ্রেসের ম্যানেজাররা কখনওই আশা করেননি । কংগ্রেস বিরোধী শিবিরকে স্বস্তি দিয়ে এই CWC আদপে এমন একটি কর্তৃপক্ষে পরিণত হল , যেখানে প্রাধান্য রইল মতভেদেরই । শুধু তাই নয় । এই সভায় সারাক্ষণই দুই প্রজন্মের নেতাদের মতামতের মধে্য সমন্বয় সাধনের জন্য আপ্রাণ অথচ ব্যর্থ প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেল । পাশাপাশি অভাব রইল সেই পরিকল্পনার, যা 2014 সালে BJP-র কাছে হেরে শাসকদলের তকমা হারানোর ছ’বছর পর কংগ্রেসকে জাতীয় স্তরে পুনরুজ্জীবিত করতে পারত ।

দলের 23 জন শীর্ষ নেতার উত্থাপন করা বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই CWC-র বৈঠক ডাকা হয়েছিল । এই নেতারা পূর্ণ মেয়াদের জন্য সভাপতি নিয়োগ নিয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং দলের আগাগোড়া সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে সোনিয়া গান্ধির কাছে জুলাই মাসে চিঠি লিখেছিলেন । এই দুই দাবিই দেশের যে কোনও বিরোধী দলের তরফে এই আলোচনা সভা ডাকার নেপথে্য যোগ্য অনুঘটক ছিল । কারণ একদিকে সোনিয়ার স্বাস্থে্যর ভগ্নদশা আর অন্যদিকে গত 10 অগাস্ট তাঁর কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন প্রধান হিসাবে এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ করা । ফলে এবার ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য দলের তরফে ‘ফুল টাইম’ প্রধানের দরকার অত্যন্ত বেশি । অথচ এত কিছু সত্ত্বেও CWC-র বৈঠক আদপে চিহ্নিত হয়ে রইল দলের প্রবীণ ব্রিগেড এবং রাহুলপন্থী নেতাদের মধে্যর ‘পাওয়ার গেম’ হিসাবে । বিশেষ করে প্রবীণ নেতাদের এই বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরার চেষ্টাতেই অনড় থাকতে দেখা গেল ।

দলে তাঁর মতাদর্শের পরিপন্থীদের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে মন্তব্য রাহুল করেছিলেন এবং এও বলেছিলেন যে, আদপে এই নেতারা BJP-র হয়ে কাজ করছেন- তা সংবাদমাধ্যমে বহুল চর্চিত হয় এবং এতে দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয় । ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্য নেমে দ্রুত দল সেই মন্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করে । তার পাশাপাশি কংগ্রেসের মুখরক্ষা করে স্বয়ং রাহুল গান্ধির নিজে থেকে প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বলকে ফোন করে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামা । সিব্বাল CWC-র বৈঠকে যাননি । তবে সংবাদমাধ্যমে বহুলচর্চিত রাহুলের মন্তব্য সংক্রান্ত খবর নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন । উত্তেজনা প্রশমিত করে সিব্বল তড়িঘড়ি একটি টুইটে নিজের অসন্তোষ জাহির করেন । তার পরই আরেক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা, গুলাম নবি আজ়াদও টুইট করে জানান, যদি তাঁর সঙ্গে BJP-র যোগসূত্র প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন । আজ়াদ ও সিব্বলের প্রতিক্রিয়া (সোনিয়ার কাছে লেখা চিঠিতেও এঁদের স্বাক্ষর ছিল) কংগ্রেসের ম্যানেজারদের কাছে বজ্রপাতের রূপালি রেখার মতো ছিল । কারণ এতে বোঝা গেছিল, দলে মনোক্ষুণ্ণ নেতাদের মান ভাঙানোয় গান্ধিদের ক্যারিশমার এখনও জুড়ি মেলা ভার আর কেবল তাঁরাই পারেন দলকে একজোট করে রাখতে ।

সোনিয়া এই বলে বৈঠকে নিজের বক্তব্য শেষ করেন যে, তিনি দলে তাঁর সহকর্মীদের মন্তবে্য দুঃখ অবশ্যই পেয়েছেন এবং এটাও মানেন যে, তাঁর সঙ্গে মতাদর্শের পার্থক্য অনেকেরই রয়েছে ও থাকবে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সকলকে একজোট হয়েই থাকতে হবে । শেষে সকলে, গান্ধিরা যেমনভাবে চেয়েছিলেন, সেই খসড়া প্রস্তাবেই সই করেন । CWC-র বৈঠকে, যাঁদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল, তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন, যেভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘পিছন থেকে ছুরি মারার’ অভিযোগ উঠেছে, তা যেন খারিজ হয় এবং তাঁরা পাশাপাশি এ কথাও তুলে ধরেন যে, তাঁরা কোনওভাবেই সোনিয়ার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চান না । তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা শুধু চান দল যেভাবে ক্রমাগত নানা দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, তার সমাধানে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং দলে সর্বতোভাবে সংস্কারের জন্য যেন উদে্যাগ নেওয়া হয় । স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা দলে প্রয়োজন অনুসারে যে কোনও বদলের জন্য সোনিয়ার হাতেই সব দায়িত্ব তুলে দেন । রাহুলের সমর্থক নেতাদের জন্য মুখরক্ষার বিষয় ছিল, তাঁকেই ফের দলের সভাপতি পদে পরিগণিত করার দাবি তোলা । সেই রবেই সম্ভবত কোনও অ-গান্ধি নেতাকে প্রধান করার গুঞ্জন চাপা পড়ে যায় ।

সোনিয়ার পুরানো বিশ্বস্ত নেতা আহমেদ প্যাটেল রাহুলের কাছে আবেদন করেন, তিনি যেন দলে সোনিয়ার পদ গ্রহণ করেন । এই সংক্রান্ত বদলের সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলে ঠিক হলেও মনে করা হচ্ছে, যেভাবে এর আগে আন্তঃনির্বাচনে রাহুল কংগ্রেস প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন, যেখানে তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী, এবারও সম্ভবত সেটাই হতে চলেছে । 2017 সালের ডিসেম্বর মাসে রাহুল কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নেন । কিন্তু 2019 সালের মে মাসে সর্বভারতীয় নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তিনি পদত্যাগ করেন । আপাতত কংগ্রেসে নেতৃত্বের প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক কিছুটা হলেও ধামাচাপা দেওয়া গিয়েছে । কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে, দলের স্বার্থেই তাদের 23 জন ‘বিরোধী’র প্রকাশ করা উদ্বেগ অবহেলা করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না । আর সেই পথে চলতে গিয়েই মুখোমুখি হতে হবে চ্যালেঞ্জের । কারণ দলের তরফে নেতৃত্বের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হওয়া সংকটকে গান্ধিদের বিরুদ্ধে চালানো আরও একটি প্রচারকৌশল বলেই বর্ণনা করা হয়েছে । গান্ধিদের তরফে অবশ্য ক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সতে্যর পথে চলার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে এবং দলের নেতাদের উদ্দেশে্য রীতিমতো হুঁশিয়ারি জারি করে অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে প্রকাশে্য মন্তব্য না করতে বলা হয়েছে ।

দিল্লি, 25 অগাস্ট : নেতৃত্বের ইশু ছাড়াও কংগ্রেস বর্তমানে যে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন । তার সমাধান খোঁজার চ্যালেঞ্জ হিসাবে যে বহু চর্চিত আলোচনা তথা বিতর্কসভা ঘিরে আগ্রহ চড়ছিল, শেষ পর্যন্ত তার ফল হল সেই থোড় বড়ি খাড়াই ।

আপাতত ঠিক হয়েছে, কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন প্রধান পদে থাকবেন সোনিয়া গান্ধিই । ততদিন, যতদিন না তাঁর ছেলে, রাহুল গান্ধি এই পদে দলের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হন । তবে তা ঠিক হবে, নির্বাচনের মাধ্যমে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির অধিবেশনে, যার তারিখ এখনও নির্দিষ্ট হয়নি । এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও কোনও অনুযোগ নেই । কিন্তু এটা নিয়েই প্রশ্ন জাগছে যে, কেন কংগ্রেসের শীর্ষস্তরের নেতানেত্রীরা, যাঁরা অতি প্রভাবশালী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিরও সদস্য, সাত ঘণ্টা সময় লেগে গেল এই সিদ্ধান্তে আসতে । যা কোনও সাধারণ, নিত্যনৈমিত্তিক ‘একজ়িকিউটিভ’ স্তরের নির্দেশের মাধ্যমেই ঘোষণা করা যেতে পারত । তার বদলে, সারাদিন ধরে এই CWC ভার্চুয়াল মিটে যা হল, তা কংগ্রেসের ম্যানেজাররা কখনওই আশা করেননি । কংগ্রেস বিরোধী শিবিরকে স্বস্তি দিয়ে এই CWC আদপে এমন একটি কর্তৃপক্ষে পরিণত হল , যেখানে প্রাধান্য রইল মতভেদেরই । শুধু তাই নয় । এই সভায় সারাক্ষণই দুই প্রজন্মের নেতাদের মতামতের মধে্য সমন্বয় সাধনের জন্য আপ্রাণ অথচ ব্যর্থ প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেল । পাশাপাশি অভাব রইল সেই পরিকল্পনার, যা 2014 সালে BJP-র কাছে হেরে শাসকদলের তকমা হারানোর ছ’বছর পর কংগ্রেসকে জাতীয় স্তরে পুনরুজ্জীবিত করতে পারত ।

দলের 23 জন শীর্ষ নেতার উত্থাপন করা বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই CWC-র বৈঠক ডাকা হয়েছিল । এই নেতারা পূর্ণ মেয়াদের জন্য সভাপতি নিয়োগ নিয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং দলের আগাগোড়া সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে সোনিয়া গান্ধির কাছে জুলাই মাসে চিঠি লিখেছিলেন । এই দুই দাবিই দেশের যে কোনও বিরোধী দলের তরফে এই আলোচনা সভা ডাকার নেপথে্য যোগ্য অনুঘটক ছিল । কারণ একদিকে সোনিয়ার স্বাস্থে্যর ভগ্নদশা আর অন্যদিকে গত 10 অগাস্ট তাঁর কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন প্রধান হিসাবে এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ করা । ফলে এবার ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য দলের তরফে ‘ফুল টাইম’ প্রধানের দরকার অত্যন্ত বেশি । অথচ এত কিছু সত্ত্বেও CWC-র বৈঠক আদপে চিহ্নিত হয়ে রইল দলের প্রবীণ ব্রিগেড এবং রাহুলপন্থী নেতাদের মধে্যর ‘পাওয়ার গেম’ হিসাবে । বিশেষ করে প্রবীণ নেতাদের এই বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরার চেষ্টাতেই অনড় থাকতে দেখা গেল ।

দলে তাঁর মতাদর্শের পরিপন্থীদের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে মন্তব্য রাহুল করেছিলেন এবং এও বলেছিলেন যে, আদপে এই নেতারা BJP-র হয়ে কাজ করছেন- তা সংবাদমাধ্যমে বহুল চর্চিত হয় এবং এতে দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয় । ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্য নেমে দ্রুত দল সেই মন্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করে । তার পাশাপাশি কংগ্রেসের মুখরক্ষা করে স্বয়ং রাহুল গান্ধির নিজে থেকে প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বলকে ফোন করে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামা । সিব্বাল CWC-র বৈঠকে যাননি । তবে সংবাদমাধ্যমে বহুলচর্চিত রাহুলের মন্তব্য সংক্রান্ত খবর নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন । উত্তেজনা প্রশমিত করে সিব্বল তড়িঘড়ি একটি টুইটে নিজের অসন্তোষ জাহির করেন । তার পরই আরেক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা, গুলাম নবি আজ়াদও টুইট করে জানান, যদি তাঁর সঙ্গে BJP-র যোগসূত্র প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন । আজ়াদ ও সিব্বলের প্রতিক্রিয়া (সোনিয়ার কাছে লেখা চিঠিতেও এঁদের স্বাক্ষর ছিল) কংগ্রেসের ম্যানেজারদের কাছে বজ্রপাতের রূপালি রেখার মতো ছিল । কারণ এতে বোঝা গেছিল, দলে মনোক্ষুণ্ণ নেতাদের মান ভাঙানোয় গান্ধিদের ক্যারিশমার এখনও জুড়ি মেলা ভার আর কেবল তাঁরাই পারেন দলকে একজোট করে রাখতে ।

সোনিয়া এই বলে বৈঠকে নিজের বক্তব্য শেষ করেন যে, তিনি দলে তাঁর সহকর্মীদের মন্তবে্য দুঃখ অবশ্যই পেয়েছেন এবং এটাও মানেন যে, তাঁর সঙ্গে মতাদর্শের পার্থক্য অনেকেরই রয়েছে ও থাকবে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সকলকে একজোট হয়েই থাকতে হবে । শেষে সকলে, গান্ধিরা যেমনভাবে চেয়েছিলেন, সেই খসড়া প্রস্তাবেই সই করেন । CWC-র বৈঠকে, যাঁদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল, তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন, যেভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘পিছন থেকে ছুরি মারার’ অভিযোগ উঠেছে, তা যেন খারিজ হয় এবং তাঁরা পাশাপাশি এ কথাও তুলে ধরেন যে, তাঁরা কোনওভাবেই সোনিয়ার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চান না । তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা শুধু চান দল যেভাবে ক্রমাগত নানা দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, তার সমাধানে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং দলে সর্বতোভাবে সংস্কারের জন্য যেন উদে্যাগ নেওয়া হয় । স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা দলে প্রয়োজন অনুসারে যে কোনও বদলের জন্য সোনিয়ার হাতেই সব দায়িত্ব তুলে দেন । রাহুলের সমর্থক নেতাদের জন্য মুখরক্ষার বিষয় ছিল, তাঁকেই ফের দলের সভাপতি পদে পরিগণিত করার দাবি তোলা । সেই রবেই সম্ভবত কোনও অ-গান্ধি নেতাকে প্রধান করার গুঞ্জন চাপা পড়ে যায় ।

সোনিয়ার পুরানো বিশ্বস্ত নেতা আহমেদ প্যাটেল রাহুলের কাছে আবেদন করেন, তিনি যেন দলে সোনিয়ার পদ গ্রহণ করেন । এই সংক্রান্ত বদলের সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলে ঠিক হলেও মনে করা হচ্ছে, যেভাবে এর আগে আন্তঃনির্বাচনে রাহুল কংগ্রেস প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন, যেখানে তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী, এবারও সম্ভবত সেটাই হতে চলেছে । 2017 সালের ডিসেম্বর মাসে রাহুল কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নেন । কিন্তু 2019 সালের মে মাসে সর্বভারতীয় নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তিনি পদত্যাগ করেন । আপাতত কংগ্রেসে নেতৃত্বের প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক কিছুটা হলেও ধামাচাপা দেওয়া গিয়েছে । কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে, দলের স্বার্থেই তাদের 23 জন ‘বিরোধী’র প্রকাশ করা উদ্বেগ অবহেলা করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না । আর সেই পথে চলতে গিয়েই মুখোমুখি হতে হবে চ্যালেঞ্জের । কারণ দলের তরফে নেতৃত্বের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হওয়া সংকটকে গান্ধিদের বিরুদ্ধে চালানো আরও একটি প্রচারকৌশল বলেই বর্ণনা করা হয়েছে । গান্ধিদের তরফে অবশ্য ক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সতে্যর পথে চলার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে এবং দলের নেতাদের উদ্দেশে্য রীতিমতো হুঁশিয়ারি জারি করে অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে প্রকাশে্য মন্তব্য না করতে বলা হয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.