পটনা, 28 জানুয়ারি : দেশদ্রোহের অভিযোগে সারজিল ইমামের বিরুদ্ধে অসম সহ মোট ছয়টি রাজ্যের পুলিশ FIR দায়ের করেছে । আজ বিহার থেকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্র সারজিলকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ । বিহারের জাহানাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করার পর সারজিলকে আজ আদালতে তোলা হয় । দিল্লি পুলিশ জাহানাবাদ আদালতে ট্রানজ়িট রিমান্ডের আবেদন করে । আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে সারজিলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশকে । উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে সারজিলের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে । অভিযোগ, সেই ভিডিয়োয় তিনি বিদ্বেষমূলক ভাষণ দেন । এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ দায়ের হয় ।
সারজিলকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর ভাইকে আটক করে বিহার পুলিশ । সোমবার রাতে বিহারের জাহানাবাদে সারজিলের বাড়িতে হানা দেয় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার পুলিশের একটি দল । যদিও তখন বাড়িতে সারজিলকে পায়নি পুলিশ । পুলিশ সারজিলের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে যায় । আজ জাহানাবাদ থেকে সারজিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে মুম্বই, পটনা ও দিল্লিতে পুলিশ সারজিলের সন্ধানে তল্লাশি চালায় । দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের পাঁচটি দল এই অভিযানে মুখ্য ভূমিকা নেয় । গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সারজিলকে । তবে JNU-র 'সেন্টার ফর হিস্টোরিকাল স্টাডিজ়'-র ছাত্র সারজিলের বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তাঁর পরিবার । পরিবারের দাবি সারজিলের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে । সারজিলকে গ্রেপ্তারের আগে তাঁর মা বলেন, "সে আইন ভাঙেনি । তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাছে সে আত্মসমর্পণ করবে ।" তবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এই প্রসঙ্গে বলেন, "রাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থী কোনও কাজ করা উচিত নয় । (সারজিলের বিরুদ্ধে আনা) অভিযোগ ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে আদালত কথা বলবে ।"
সারজিলের বক্তব্য প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, "সারজিলের ভিডিয়োটি দেখলাম । ওঁর বক্তব্য শুনলাম । কানাহাইয়া কুমারের থেকেও ভয়ঙ্কর কথা বলেছেন তিনি । দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে । তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হচ্ছে ।"
উল্লেখ্য, দিল্লির শাহিনবাগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019 - এর প্রতিবাদে যে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চলছে, সেখানে সম্প্রতি সারজিল বক্তব্য রাখে । তাঁর সেই বক্তব্যের ভিডিয়ো ভাইরাল হয় । সারজিলকে বলতে শোনা গেছে, অসমে মুসলিম ও বাঙালিদের মারা হচ্ছে । তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে । তাই রেললাইন অবরোধ করে অসমকে বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে - অন্তত কিছুদিনের জন্যে । দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, এর আগেও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019 - এর প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় 'বিদ্বেষমূলক' মন্তব্য করেছিলেন সারজিল ।