ETV Bharat / bharat

গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতিই অর্থনৈতিক বৃদ্ধির চাবিকাঠি - গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি

গ্রামীণ ভারতে বছর খানেক আগে যে বৃদ্ধি ছিল প্রায় 16 শতাংশ তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র 2 শতাংশে । সাত বছরে এই প্রথম FMCG-এর গ্রামীণ বৃদ্ধি শহরের বৃদ্ধির চেয়ে কম হল । দিল্লি থেকে মহেন্দ্রবাবু কুরুভার প্রতিবেদন ।

ছবিটি প্রতীকী
author img

By

Published : Nov 11, 2019, 3:19 PM IST

দিল্লি, 11 নভেম্বর : 31 অক্টোবর 2019 । সেনসেক্স ইতিহাসের সর্বোচ্চ 40,392 পয়েন্টে পৌঁছানোয় উল্লসিত দেশের প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন মিডিয়া । বিনিয়োগকারীরাও উল্লসিত । কিন্তু এই বিষয়টি ভারতীয় অর্থনীতির অন্য একটি দিকও তুলে ধরে । শেয়ার বাজারের এই বিপুল উত্থানের আনন্দে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়া সেকথাটিও ভুলে গিয়েছে । সেনসেক্সের এই রেকর্ড ছোঁয়ার আগের দিন 30 অক্টোবর ভারতের অন্যতম অর্থনৈতিক সংস্থা জে এম ফিনান্সিয়াল একটি রিপোর্ট পেশ করে । দেশের 13 টি রাজ্যের উপর করা একটি সমীক্ষার ফলাফলই এই রিপোর্টে বলা হয় । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, খাদ্যের কম দামের জন্য দেশের কৃষিক্ষেত্রে আয় কমেছে । ফলে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার যে ঘোষণা করেছে সরকার তা আরও কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে । এই রিপোর্ট প্রকাশের দিন কয়েক আগে দেশের ফার্স্ট মুভিং কনজ়িউমার গুডস (FMCG)-এর বাজারে বেশ খানিকটা মন্দা দেখা দিয়েছিল । দেখা যায়, গ্রামীণ ভারতে বছর খানেক আগে যে বৃদ্ধি ছিল প্রায় 16 শতাংশ তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র 2 শতাংশে । সাত বছরে এই প্রথম FMCG-এর গ্রামীণ বৃদ্ধি শহরের বৃদ্ধির চেয়ে কম হল ।

এই দুটি বিষয় দেশের বর্তমান গ্রামীণ অর্থনীতির ভয়াবহ অবস্থাকেই তুলে ধরছে । প্রথম ঘটনা থেকে গ্রামের সার্বিক উপার্জনের করুণ অবস্থা সামনে আনছে । অন্যদিকে দ্বিতীয় ঘটনা থেকে গ্রামে চাহিদার হ্রাস পাওয়ার ছবিটা বোঝা যাচ্ছে । এই চাহিদা হ্রাস পাওয়ার অর্থ গ্রামীণ উপার্জন ও উন্নতি নিম্নমুখী হওয়া । দেশে যখন আর্থিক মন্দা চলছে তখন এই অবস্থা খুবই প্রাসঙ্গিক বলে মনে হতে পারে । কিন্তু দেশ যখনই এর আগে এই ধরনের আর্থিক মন্দার কবলে পড়েছে তখনই গ্রামই চাহিদা বাড়িয়ে বিপদ থেকে দেশকে উদ্ধার করেছে । গত 10 বছরে দেশের বাজারে যে বিপুল পরিমাণে দৈনন্দিন ব্র্যান্ডেড জিনিসের চাহিদা বেড়েছে তার অনেকটাই কৃতিত্ব দাবি করতে পারে গ্রামীণ ভারত । এই গ্রামীণ ভারতে 80 কোটিরও বেশি মানুষ বসবাস করেন । দেশের মোট FMCG পণ্য বিক্রির 36 শতাংশের জোগান দেয় এই গ্রাম । দেশের অর্থনীতিতে গ্রামের গুরুত্ব ও অবদান এই একটি পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে । কিন্তু ঠিক কী কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি এতটা পিছিয়ে পড়েছে? এর জন্য গ্রামীণ অর্থনীতির গভীরে ঢুকে পর্যালোচনা করতে হবে ।

গ্রামীণ ভারতের উন্নতি কেন ব্যাহত হচ্ছে?

গ্রামীণ ভারতের উন্নতি ব্যাহত হওয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে, যা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । প্রথমত, গ্রামের ক্রমহ্রাসমান আয় । তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টন । আয় কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা হ্রাস পেয়েছে ।

পাশাপাশি, গ্রামীণ ভারতে ছোটো ব্যবসায়ী ও চাষিদের মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থের প্রবল অভাব । সঙ্কট কাটাতে ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নিজেদের বিভিন্ন নীতিতে একাধিক পরিবর্তন আনলেও তার সুফল এখনও পুরোপুরি প্রাপ্ত হয়নি । ফলে অর্থনীতির অচলাবস্থা এখনও পুরোপুরি কাটেনি । উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, গত দুই বছরে দেশের ব্যাঙ্কগুলির ঋণ দেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে 8.8 শতাংশ যা এই সময়কালের মধ্যে সবচেয়ে কম । অ-ব্যাঙ্ক আর্থিক সংস্থাগুলিও (NBFCs) গ্রাম ও ছোটো সংস্থাগুলিকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে । এর ফলে চাষি বা ছোটো ব্যবসায়ীদের মধ্যে নগদের জোগানের অভাব থেকেই যাচ্ছে । তারই প্রভাব পড়ছে বাজারে । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি । যার ফলে গত সাত বছরে এই প্রথম বার শহুরে অর্থনীতির চেয়ে গ্রামীণ অর্থনীতির বৃ্দ্ধি কম হচ্ছে ।

গ্রামীণ উন্নতির পুনরুজ্জীবন

গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি নিয়ে কথা হলেই অনিবার্যভাবে চলে আসে চাষবাসের প্রসঙ্গ । দেশের মোট জনসংখ্যার 61 শতাংশ গ্রামের বাসিন্দা আর দেশের শ্রমশক্তির 50 শতাংশ চাষ ও তার আনুষঙ্গিক কার্যকলাপের উপর নির্ভরশীল । তাই গ্রামের উন্নতি করতে হলে কৃষির উন্নতি আবশ্যক । গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাহিদা ও জোগানের মতো প্রাথমিক জিনিসের উপর প্রথমেই নজর দিতে হবে । চাহিদার বৃদ্ধি ঘটাতে সবার আগে প্রয়োজন নগদের জোগান বাড়ানো । এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি যেন গ্রামে কৃষিক্ষেত্র ও ছোট ব্যবসায়ীদের কম সুদে ঋণ দিতে তৈরি থাকে তা সরকারকে দেখতে হবে ।

প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গ্রামের চাহিদার সমস্যাটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হবে । তারপর ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে হবে সেই চাহিদা বাড়ানোর । এই চাহিদা বাড়ানোর প্রাথমিক দাওয়াই হিসেবে এই সব এলাকায় সরকারি খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে থাকেন অর্থনীতিবিদরা । এর ফলে গ্রামে আয় বাড়বে ও তার হাত ধরে চাহিদাও বাড়বে । তবে এক্ষেত্রে একটি তথ্য দেওয়া প্রয়োজন । এই মুহূর্তে সরকার গ্রামগুলিতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা বিভিন্ন আয় সহায়তা প্রকল্পে খরচ করছে । এর মানে এই নয় যে এই ধরনের প্রকল্পগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত । এর থেকে এটা প্রমাণ হয় যে আর্থিক মন্দা কাটাতে শুধুমাত্র সরকারি খরচ বাড়ালেই সমাধান মিলবে না । এগুলি ছাড়াও আরও কিছু পরিকল্পনা করতে হবে যা এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান করতে পারে ।

এক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে এগিয়ে এসে পদক্ষেপ করতে হবে । খুঁজে বের করতে হবে সেই সব কারণগুলিকে যেগুলি দেশের কৃষিক্ষেত্রকে পঙ্গু করে তুলছে । খামারগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে । কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে । এগুলির জন্য প্রয়োজনে বিশেষ খাতের ব্যবস্থা করতে হবে । অন্যদিকে কৃষিজ পরিকাঠামো ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে । ফলে এইসব ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বাড়বে । পাশাপাশি গ্রামে উৎপন্ন জিনিসের চাহিদা যেন বাড়ে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে । এর সঙ্গে কৃষিজ বাজারগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে চাষিরা যেন তাদের উৎপাদিত দ্রব্যের সঠিক মূল্য পান তারও ব্যবস্থা করতে হবে । এই সব কাজগুলি একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে হবে ।

আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে । কৃষিক্ষেত্রে চাষির খরচের তুলনায় চাষি তার শ্রমের মূল্য পাচ্ছেন না । সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র চাষিদের আয় দ্বিগুণ করলে সব সমস্যার সমাধান হবে না । সমস্যার সমাধানে বিনিয়োগের পাশাপাশি খরচের পরিমাণও যাতে না বাড়ে সে দিকে ‌নজর দিতে হবে । এর ফলে গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে । গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি হবে । আর গ্রামের অর্থনীতির উন্নতি হলেই দেশের অর্থনীতির উন্নতিও হবে । এখন শুধু প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার ।

দিল্লি, 11 নভেম্বর : 31 অক্টোবর 2019 । সেনসেক্স ইতিহাসের সর্বোচ্চ 40,392 পয়েন্টে পৌঁছানোয় উল্লসিত দেশের প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন মিডিয়া । বিনিয়োগকারীরাও উল্লসিত । কিন্তু এই বিষয়টি ভারতীয় অর্থনীতির অন্য একটি দিকও তুলে ধরে । শেয়ার বাজারের এই বিপুল উত্থানের আনন্দে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়া সেকথাটিও ভুলে গিয়েছে । সেনসেক্সের এই রেকর্ড ছোঁয়ার আগের দিন 30 অক্টোবর ভারতের অন্যতম অর্থনৈতিক সংস্থা জে এম ফিনান্সিয়াল একটি রিপোর্ট পেশ করে । দেশের 13 টি রাজ্যের উপর করা একটি সমীক্ষার ফলাফলই এই রিপোর্টে বলা হয় । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, খাদ্যের কম দামের জন্য দেশের কৃষিক্ষেত্রে আয় কমেছে । ফলে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার যে ঘোষণা করেছে সরকার তা আরও কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে । এই রিপোর্ট প্রকাশের দিন কয়েক আগে দেশের ফার্স্ট মুভিং কনজ়িউমার গুডস (FMCG)-এর বাজারে বেশ খানিকটা মন্দা দেখা দিয়েছিল । দেখা যায়, গ্রামীণ ভারতে বছর খানেক আগে যে বৃদ্ধি ছিল প্রায় 16 শতাংশ তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র 2 শতাংশে । সাত বছরে এই প্রথম FMCG-এর গ্রামীণ বৃদ্ধি শহরের বৃদ্ধির চেয়ে কম হল ।

এই দুটি বিষয় দেশের বর্তমান গ্রামীণ অর্থনীতির ভয়াবহ অবস্থাকেই তুলে ধরছে । প্রথম ঘটনা থেকে গ্রামের সার্বিক উপার্জনের করুণ অবস্থা সামনে আনছে । অন্যদিকে দ্বিতীয় ঘটনা থেকে গ্রামে চাহিদার হ্রাস পাওয়ার ছবিটা বোঝা যাচ্ছে । এই চাহিদা হ্রাস পাওয়ার অর্থ গ্রামীণ উপার্জন ও উন্নতি নিম্নমুখী হওয়া । দেশে যখন আর্থিক মন্দা চলছে তখন এই অবস্থা খুবই প্রাসঙ্গিক বলে মনে হতে পারে । কিন্তু দেশ যখনই এর আগে এই ধরনের আর্থিক মন্দার কবলে পড়েছে তখনই গ্রামই চাহিদা বাড়িয়ে বিপদ থেকে দেশকে উদ্ধার করেছে । গত 10 বছরে দেশের বাজারে যে বিপুল পরিমাণে দৈনন্দিন ব্র্যান্ডেড জিনিসের চাহিদা বেড়েছে তার অনেকটাই কৃতিত্ব দাবি করতে পারে গ্রামীণ ভারত । এই গ্রামীণ ভারতে 80 কোটিরও বেশি মানুষ বসবাস করেন । দেশের মোট FMCG পণ্য বিক্রির 36 শতাংশের জোগান দেয় এই গ্রাম । দেশের অর্থনীতিতে গ্রামের গুরুত্ব ও অবদান এই একটি পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে । কিন্তু ঠিক কী কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি এতটা পিছিয়ে পড়েছে? এর জন্য গ্রামীণ অর্থনীতির গভীরে ঢুকে পর্যালোচনা করতে হবে ।

গ্রামীণ ভারতের উন্নতি কেন ব্যাহত হচ্ছে?

গ্রামীণ ভারতের উন্নতি ব্যাহত হওয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে, যা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । প্রথমত, গ্রামের ক্রমহ্রাসমান আয় । তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টন । আয় কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা হ্রাস পেয়েছে ।

পাশাপাশি, গ্রামীণ ভারতে ছোটো ব্যবসায়ী ও চাষিদের মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থের প্রবল অভাব । সঙ্কট কাটাতে ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নিজেদের বিভিন্ন নীতিতে একাধিক পরিবর্তন আনলেও তার সুফল এখনও পুরোপুরি প্রাপ্ত হয়নি । ফলে অর্থনীতির অচলাবস্থা এখনও পুরোপুরি কাটেনি । উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, গত দুই বছরে দেশের ব্যাঙ্কগুলির ঋণ দেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে 8.8 শতাংশ যা এই সময়কালের মধ্যে সবচেয়ে কম । অ-ব্যাঙ্ক আর্থিক সংস্থাগুলিও (NBFCs) গ্রাম ও ছোটো সংস্থাগুলিকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে । এর ফলে চাষি বা ছোটো ব্যবসায়ীদের মধ্যে নগদের জোগানের অভাব থেকেই যাচ্ছে । তারই প্রভাব পড়ছে বাজারে । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি । যার ফলে গত সাত বছরে এই প্রথম বার শহুরে অর্থনীতির চেয়ে গ্রামীণ অর্থনীতির বৃ্দ্ধি কম হচ্ছে ।

গ্রামীণ উন্নতির পুনরুজ্জীবন

গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি নিয়ে কথা হলেই অনিবার্যভাবে চলে আসে চাষবাসের প্রসঙ্গ । দেশের মোট জনসংখ্যার 61 শতাংশ গ্রামের বাসিন্দা আর দেশের শ্রমশক্তির 50 শতাংশ চাষ ও তার আনুষঙ্গিক কার্যকলাপের উপর নির্ভরশীল । তাই গ্রামের উন্নতি করতে হলে কৃষির উন্নতি আবশ্যক । গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাহিদা ও জোগানের মতো প্রাথমিক জিনিসের উপর প্রথমেই নজর দিতে হবে । চাহিদার বৃদ্ধি ঘটাতে সবার আগে প্রয়োজন নগদের জোগান বাড়ানো । এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি যেন গ্রামে কৃষিক্ষেত্র ও ছোট ব্যবসায়ীদের কম সুদে ঋণ দিতে তৈরি থাকে তা সরকারকে দেখতে হবে ।

প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গ্রামের চাহিদার সমস্যাটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হবে । তারপর ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে হবে সেই চাহিদা বাড়ানোর । এই চাহিদা বাড়ানোর প্রাথমিক দাওয়াই হিসেবে এই সব এলাকায় সরকারি খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে থাকেন অর্থনীতিবিদরা । এর ফলে গ্রামে আয় বাড়বে ও তার হাত ধরে চাহিদাও বাড়বে । তবে এক্ষেত্রে একটি তথ্য দেওয়া প্রয়োজন । এই মুহূর্তে সরকার গ্রামগুলিতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা বিভিন্ন আয় সহায়তা প্রকল্পে খরচ করছে । এর মানে এই নয় যে এই ধরনের প্রকল্পগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত । এর থেকে এটা প্রমাণ হয় যে আর্থিক মন্দা কাটাতে শুধুমাত্র সরকারি খরচ বাড়ালেই সমাধান মিলবে না । এগুলি ছাড়াও আরও কিছু পরিকল্পনা করতে হবে যা এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান করতে পারে ।

এক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে এগিয়ে এসে পদক্ষেপ করতে হবে । খুঁজে বের করতে হবে সেই সব কারণগুলিকে যেগুলি দেশের কৃষিক্ষেত্রকে পঙ্গু করে তুলছে । খামারগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে । কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে । এগুলির জন্য প্রয়োজনে বিশেষ খাতের ব্যবস্থা করতে হবে । অন্যদিকে কৃষিজ পরিকাঠামো ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে । ফলে এইসব ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বাড়বে । পাশাপাশি গ্রামে উৎপন্ন জিনিসের চাহিদা যেন বাড়ে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে । এর সঙ্গে কৃষিজ বাজারগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে চাষিরা যেন তাদের উৎপাদিত দ্রব্যের সঠিক মূল্য পান তারও ব্যবস্থা করতে হবে । এই সব কাজগুলি একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে হবে ।

আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে । কৃষিক্ষেত্রে চাষির খরচের তুলনায় চাষি তার শ্রমের মূল্য পাচ্ছেন না । সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র চাষিদের আয় দ্বিগুণ করলে সব সমস্যার সমাধান হবে না । সমস্যার সমাধানে বিনিয়োগের পাশাপাশি খরচের পরিমাণও যাতে না বাড়ে সে দিকে ‌নজর দিতে হবে । এর ফলে গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে । গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি হবে । আর গ্রামের অর্থনীতির উন্নতি হলেই দেশের অর্থনীতির উন্নতিও হবে । এখন শুধু প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার ।

Bandipora (J-K), Nov 11 (ANI): Security forces neutralized two unidentified terrorists in an encounter in Jammu and Kashmir's Bandipora. Identity and affiliation are being ascertained of terrorists. Army recovered arms and ammunitions from the spot.
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.